আমি যখন ৬ বছর আগে প্রথম কনটেন্ট ক্রিয়েশন শুরু করি, আমার মাথায় শুধু একটাই চিন্তা থাকতো—কত টাকা ইনকাম করা যায়। প্রতিটা ভিডিওতে ভাবতাম, এটা থেকে কত টাকা আসবে, কিভাবে আরও ভিউস পাওয়া যায়, কয়টা সাবস্ক্রাইবার বাড়লো। আর এসব করে আমি চা, কফি, টাকা তো পাচ্ছিলাম, কিন্তু কোনো রিয়েল ইনকাম দেখতে পাচ্ছিলাম না।
আমি জানাবো যে আমি এখন পর্যন্ত আমার এই চ্যানেলটায় কত টাকা ইনভেস্ট করেছি আর ইউটিউব ভার্সেস থেকে আমার কত ইনকাম এসেছে। আরও জানাবো যে কিভাবে চ্যানেলেশনাল বেল্ট বিল্ড করা যায় আর এই ইউটিউব দিয়ে সম্পদ তৈরি করার জন্য আমি কি প্ল্যান করছি।
তার আগে মোস্ট ইম্পর্টেন্ট কথা হলো—আপনি যদি অল্প সময়ের মধ্যে কয়েক হাজার বা লাখ টাকা কামানোর জন্য ইউটিউবে এসে থাকেন, আমার শুরুর দিকের মতো, তাহলে আমার এক্সপিরিয়েন্স থেকে বলছি, খুব দ্রুত আপনি হতাশ হয়ে ছেড়ে দিবেন। কারণ একটা শপিং ফ্যাক্ট কি জানেন? ৯৭ পার্সেন্ট কনটেন্ট ক্রিয়েটর যারা শুধু টাকার জন্য শুরু করে, তাদের ৯০ পারসেন্ট প্রথম ৬ মাসে ছেড়ে দেয় কনটেন্ট ক্রিয়েশন।
টাকা তখনই আসে, যখন আপনি টাকার কথা ভুলে যান। নেটফ্লিক্সের সিইও একবার বলেছিল, “আমরা কখনো টাকা কামানোর জন্য কনটেন্ট বানাই না। আমরা মিউজিক কনটেন্ট বানাই, আর টাকা নিজে থেকেই আসে।”
আমাদের দেশের ফেমাস শো হোস্ট আরজে কিবরিয়া ভাই, উনি একটা ইন্টারভিউতে বলছিলেন—“তুমি এতো টাকা দিয়ে কি করবা?” সো আমি এই পজিশনে গিয়ে ফিল্টার পাইছি যে ফাইট, আমি এত টাকা দিয়ে কি করবো। হ্যাঁ তো, আলহামদুলিল্লাহ, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে আমি কখনো এটা কাউন্ট করতাম না যে কত ডলার আসলো আমার একাউন্টে। আমি অলওয়েজ যেটা কাউন্ট করতাম, সেটা হচ্ছে কত মানুষ এটা দেখলাম।
একটা জিনিস বলি, ধরেন কেউ একটা জব করার স্বপ্ন দেখছে। এখন কথা হচ্ছে, সে কি শুধু অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ লেভেলের চাকরি করে খুশি থাকবে, নাকি তার এন্ট্রি হচ্ছে সিইও হওয়া? এখন কেউ যদি সিইও হতে চায়, সে তখন শুরুতেই বেশি সেলারির পেছনে দৌড়াবে না।
সে নিজের ভিতরে এমন একটা স্কিল বিল্ড করতে থাকবে, নিজেকে কোম্পানির জন্য এত ভ্যালুয়েবল অ্যাসেট বানাতে থাকবে যা তাকে আলটিমেটলি সিইও হতে হেল্প করবে। যেমন—লিডারশিপ স্কিল, ডিসিশন মেকিং, স্ট্র্যাটেজিক থিংকিং, টিম ম্যানেজমেন্ট—এসব স্কিলস ইমপ্রুভ করতে থাকবে। তার ফোকাসই থাকবে সেই জায়গায়।
সেটা ঠিক একইভাবে কনটেন্ট ক্রিয়েশনেও। আপনি যদি শুরুতেই টাকার পেছনে দৌড়ান, আপনি কখনোই কনটেন্ট ক্রিয়েটর হতে পারবেন না। আপনাকে আগে নিজের ভিতরে সেই স্কিলস ফিল করতে হবে আর মানুষকে ভ্যালু দিতে হবে।
তারপর একটা সময় আপনার চ্যানেল হয়ে যাবে অন্যদের জন্য একটা ভরসার জায়গা, যেখানে তারা ওয়েট করবে আপনার নেক্সট ভিডিওর জন্য। দেখেন, ইউটিউব চ্যানেল চালানো একটা ব্যবসা চালানোর মতো।
শুরুতে আপনাকে টাইম ইনভেস্টমেন্ট করতে হবে, আপনার প্রোডাক্ট—যেটা হচ্ছে আপনার ভিডিওস—সেটাকে এনরিচ করতে হবে। তারপর আপনার ভিডিওস দিয়ে যদি মানুষ ভ্যালু পায়, তখন আপনি আসলে ইনকাম শুরু করতে পারবেন।
এছাড়া শর্টকাটের পেছনে গেলে হতাশ হবেন। আমি আপনাদের চারটা সিম্পল ক্রিম ওয়ার্ক দিব, যেটা দিয়ে আপনি আপনার এই ইউটিউব জার্নি শুরু করলেন। ইউনিয়ন রিচ নিউ হার্টস, মানে আপনি নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারবেন।
প্রথম হচ্ছে ভেলিউড ফার্স্ট ফ্রেম ওয়ার্ক। প্রথমে ভাববেন আপনার দশা কি চায়। এটা খুবই ইম্পরট্যান্ট একটা স্টেপ। বেশিরভাগ মানুষই এটা ইউজ করে, যার কারণে ফেইল হয়। আপনার অডিয়েন্সের বিগেস্ট পেইন পয়েন্টটি সেটা বের করবেন, সেটা সল্ভ করার সহজ উপায়গুলো বলবেন।
এখন আসে দ্বিতীয় ফেব্রুয়ার কে প্রেসেন্ট প্লাস প্রফিট প্রেম্বার। আপনার প্রেসেন্ট কি? সিম্পল প্রশ্ন, কিন্তু এর উত্তর বের করা কঠিন। বেশিরভাগ মানুষ ভাবে গেমিং হলো তাদের প্যাশন। কিন্তু গেমিং না, টিচিং গেমিং স্ট্রাটেজিস—এটাই আসল প্যাশন হতে হবে আপনার।
আর টিচিং গেমিং স্ট্রাটেজিস মানে গেমিং স্টার্টেড, যেগুলো অন্যকে শেখানোটা হবে আপনার প্যাশন। কোডিংকে প্যাশন হিসেবে দেখা যাবে না। কমপ্লেক্স জিনিসটা কিভাবে সিম্পল ভাবে এক্সপ্লেইন করা যায়, এটাকে দেখতে হবে প্যাশন হিসেবে।
এই এক্সারসাইজটা করবেন। নিজেকে জিজ্ঞেস করবেন, কোন টপিক নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আপনি কথা বলতে পারেন? বন্ধুরা কোন বিষয়ে আপনার অ্যাডভাইস চায়? সি টাইমে আপনি কি করেন? এই উত্তরগুলো আপনার রিয়েল প্যাশন বের করে দেবে।
হচ্ছে ক্রিয়েটিভ ফ্রিডম ফ্রেম্বার। জানেন, আমরা ভাবি, ক্রিয়েটিভ মানুষরা জাস্ট ব্র্যান্ড নিউ আইডিয়াস পায়। বাট না। আমি যখন কনটেন্ট আইডিয়াস খুঁজি, আমি এই স্টেপগুলো ফলো করি।
স্টার্ট ওয়ানে প্রবলেমটা ক্লিয়ার করি। যেমন প্রবলেম যদি হয়, নতুন ক্রিয়েটরদের অডিয়েন্স রিটেনশন কম। স্টেপ টুতে আমি দশটা সলিউশন লিখি সেই প্রবলেমের সলিউশনের জন্য।
যেরকম—হুক উপভোগ করতে হবে, স্টোরি টেলিং টেকনিক জানতে হবে, ভালো ইন্টারনেট থাকতে হবে। এভাবে সেই প্রবলেমের অনেকগুলো সলিউশন আমি বের করে নেই। এটা কীভাবে করবেন? এটা আরো ডিটেইলস জানতে চাইলে নিচে কমেন্ট করবেন। ডিটেইলে আমি আরো ডিটেইল এটা এক্সপ্লেইন করে দিব।
যার পরে আপনার তখন কনটেন্ট বানানো আর স্ট্রাগল মনে হবে না। নেক্সট হচ্ছে লং টাইম ফ্রেম ওয়ার্ক। এই ফ্রেম ওয়ার্কটা হয়তো সবচেয়ে কঠিন, কিন্তু সবচেয়ে পাওয়ারফুল।
আমি দেখেছি, যারা শুরুর ৬ মাস মনিটাইজেশন নিয়ে চিন্তা করে না, লং ড্রানে তারাই ১০ গুণ বেশি কামায়। কারণটা সিম্পল—তারা এক্সপেরিমেন্ট করার ফ্রিডম পায়, অডিয়েন্সের সাথে ট্রাস্ট বিল্ড করে, নিজের ভয়েস খুঁজে পায়।
পৃথিবীর সবচেয়ে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটররা শুরুতে টাকার কথা ভাবেনি। মিশ্রের ২০ প্রথম ৬ বছর একটাও স্পনসর্ড ভিডিও বানায় নাই। পিউরিটি পায়। প্রথম ২ বছর মনেটাইজেশন অনই করে নাই।
তাই নেক্সট টাইম যখন কনটেন্ট বানাবেন, নিজেকে এই তিনটা প্রশ্ন করবেন—এই কনটেন্ট কি কারো জীবন চেঞ্জ করবে? আমি কি জেনুইনলি এটা নিয়ে প্যাশনেট? আর তিন নাম্বার হচ্ছে আমি লং টার্মে এটা কন্টিনিউ করতে পারবো?
যদি এই তিনটা প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে টাকা আপনার কাছে ন্যাচারালি আসবে। কারণ সত্যি কথা বলতে, টাকা কখনো গোল হতে পারে না। টাকা হল বাই প্রোডাক্ট।
যেমন, একটা গাড়ির কাজ কিন্তু তেল খাওয়া না। গাড়ির মেইন কাজ হচ্ছে আপনাকে একটা জায়গা থেকে আরেকটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া। আর তেলটা হচ্ছে বাই প্রোডাক্ট, গাড়ি চালানোর জন্য যেটা লাগবেই।
আপনি কি কখনো গাড়ি কিনেছেন শুধু তেল ভর্তি করার জন্য? না। আপনি গাড়ি কিনেছেন জার্নি করার জন্য। কনটেন্ট ক্রিয়েশনের ঠিক তাই। আপনার ফোকাস হওয়া উচিত ভ্যালু ক্রিয়েট করা, মানুষের জান নিতে হেল্প করা। টাকা তখন অটোমেটিক্যালি আসবে।
ঠিক যেমন গাড়ি চালালে তেল লাগবেই, আপনি যখন মিউজিক ভ্যালু প্রোভাইড করবেন, টাকা অটোমেটিক্যালি আসবে। যেমন শুরুতে বলেছিলাম, আমি এই চ্যানেলে এখন পর্যন্ত কত টাকা খরচ করেছি আর কত রিটার্ন পেয়েছি সেটা বলব।
So BS দের জন্য, আমি এখন পর্যন্ত ৪০০০০০ প্লাস ইনভেস্ট করেছি এই চ্যানেলে। আর ইউটিউব আমাকে ৯৫০০০ টাকা দিয়েছে ইউটিউব ভিউজ থেকে, যেটা আসে। কিন্তু আমি তাও করে যাচ্ছি কেন?
কারণ ইউটিউবের আসল ইনকাম অ্যাডসেন্স বা কোর্স সেল করে হয় না। ইউটিউবের আসল ইনকাম আসে যখন আপনি একটা ম্যাটম্যাটিক পার্সোনাল ব্র্যান্ড দাঁড় করাতে পারবেন। আর সেই সাথে একটা বিজনেস করবেন।
তখন আপনার জেনারেশনের ওয়েলথ বিল্ড হওয়া শুরু হবে। মানে তখন হতে পারবেন আসল সম্পদশালী। টাকা কামানো আর সম্পদ কামানো ডিফারেন্স জানতে “It’s Odd” ভিডিওটা অবশ্যই দেখবেন।
আমার চ্যানেলটা একটু গ্রো করার পর আমি একটা জিনিস বুঝতে পারলাম যে, কেন এভরি আদার ইউটিউবার নিজের কোর্স ওপেন করে ফেলে। আপনি যদি জানতে চান এটার আসল কারণটা, নিচে কমেন্ট করবেন—এখনই।
আমি এখন এমন একটা পজিশনে আছি, যেখানে আমি অনেকভাবেই এই চ্যানেল থেকে ইনকাম করতে পারি। কোর্স সেল করে, স্পন্সরশিপ থেকে, প্রমোশন থেকে। কিন্তু আমি এদিক সেদিক থেকে হাজার টাকা বা লাখ টাকা কামানোর জন্য না, চ্যানেলেশনাল ওয়েল বিল্ড করার জন্য প্ল্যান করছি।
আমি গত ১০ বছর ধরে অনলাইন বিজনেস করছি আর কনটেন্ট ক্রিয়েশন করছি গত ৬ বছর ধরে। এই জার্নি থেকে আমি একটা ফর্মুলা ডিসকভার করেছি। ফর্মুলাটা হচ্ছে ২ স্টেপে স্ট্রং পার্সোনাল ব্র্যান্ড।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে—এটা কেন এফেক্টিভ? কারণ এটা আপনাকে দেয় স্কেলিবিলিটি, আনলিমিটেড গ্রোথ পটেনশিয়াল, লোকেশন ফ্রিডম, প্যাসিভ ইনকাম স্ট্রিমস, লং টার্ম ভ্যালু ক্রিয়েশন।
গত ১০ বছরে ১২-১৩ রকম বিজনেস করে আমি একটা জিনিস বুঝতে পেরেছি, প্রতিটা বিজনেসে কিন্তু স্কেলিবিলিটি নাই। স্কেলিবিলিটি না হলে সেই জেনারেশনের রেজাল্ট বের করা যায় না।
তাই আমি এখন প্রোডাক্ট বিজনেস স্টার্ট করেছি, যেটার মধ্যে স্কেলিবিলিটি আছে, লোকেশন ফ্রিডম আছে, প্যাসিভ ইনকাম স্ট্রিম খোলার সুযোগ আছে, আর লং টার্ম ভ্যালু ক্রিয়েট হবে। আমি এখন এক্সাক্টলি এই পথে আছি।
আমি ডিটেইলে শেয়ার করব আপনাদের সাথে—কিভাবে এটা আমি করছি। আপনি যদি এই চ্যানেলটা জানতে চান, আমাদের ফ্রি ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করতে পারেন। লিংক ডেসক্রিপশনে থাকবে।
বেলিভ মি, আমি এই গ্রুপে একটা লাইভ সেশন করবো।
যেখানে আমার সাথে আপনারা কানেক্ট হতে পারবেন। আর যদি আপনার ওয়েলফেয়ার প্ল্যান বা পঙ্গলা নিয়ে আরো ডিটেইলে জানতে চান, জাস্ট কমেন্ট করবেন “বেল্ট”। আমি এটা নিয়ে আরো ডিটেইল আপনাদের বলবো।
ওই যে বলা হয়, ডোন’t ওভার হার্ড—ওয়ার্ক স্মার্টলি, এইটাই সেই স্মার্ট ওয়ার্ক যেটা আর কেউ বলে না। আপনার কন্টিনিউশন বা বিজনেস শুরুর পথে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা কী, কমেন্টে জানাবেন।
এই ভিডিওটা হেল্পফুল লাগলে, আপনার ফ্রেন্ডস বা টাইমলাইনে যারা বিজনেসে ইন্টারেস্টেড, তাদের সাথে শেয়ার করবেন। আবার দেখা হবে নেক্সট ভিডিওতে।
টিউনড থাকবেন এসএমএস-এর।