সোমবার, মে ১২, ২০২৫
  • ব্যবহার শর্তাবলি
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • সচরাচর জিজ্ঞাসা (FAQ)
নৈপুণ্য
Advertisement
  • প্রাকৃতি ও জীবন
  • সৌর জগত
  • প্রযুক্তি
  • আরও
    • স্বাধীন বাংলা
    • টিউটোরিয়াল
    • ইলেকট্রিসিটি
    • সাম্প্রতিক আপডেট
    • প্রকাশনা
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
No Result
View All Result
নৈপুণ্য
  • প্রাকৃতি ও জীবন
  • সৌর জগত
  • প্রযুক্তি
  • আরও
    • স্বাধীন বাংলা
    • টিউটোরিয়াল
    • ইলেকট্রিসিটি
    • সাম্প্রতিক আপডেট
    • প্রকাশনা
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
No Result
View All Result
নৈপুণ্য
No Result
View All Result
Home সৌর জগত

শনি গ্রহ, বলয়, উপগ্রহ ও ক্যাসিনি হাইগেনস মিশন

এডিটরিয়াল আপডেট by এডিটরিয়াল আপডেট
ডিসেম্বর ১০, ২০২৪
in সৌর জগত
1
শনি গ্রহ, বলয়, উপগ্রহ ও ক্যাসিনি হাইগেনস মিশন
585
SHARES
3.2k
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে ইউনিক গ্রহ নিঃসন্দেহে শনি গ্রহ। কারণ শনিগ্রহের চারপাশে দৃশ্যমান চমৎকার বলয় রয়েছে। এবং এই জন্য শনিগ্রহ সৌরমণ্ডলের রত্ন নামে পরিচিত। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত শনিগ্রহে ১৪৬টি চাঁদ বা উপগ্রহ আবিষ্কার হয়েছে। যেগুলোর শেপ গোলাকারসহ বিভিন্ন রেনডম শেপের। সেই সাথে আকারেও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন, সবচেয়ে বড় চাঁদের নাম টাইটান, যার সাইজ বুধ গ্রহের চেয়েও বড়।

এমনকি টাইটানে পৃথিবীর মতো ঋতুর বিষয় রয়েছে। সেখানে মেঘ তৈরি হয়, যা থেকে পরবর্তীতে বৃষ্টি হয়, যা নদী-সাগর তৈরি করে। তবে সেই নদী বা সাগরে পানির পরিবর্তে রয়েছে মিথেন-ইথেনের মতো হাইড্রোকার্বন।

Table of Contents

Toggle
    • You might also like
    • মঙ্গল গ্রহ সমাচার Mars Human Mission Challenge and Mars Alien Controversy
    • মঙ্গল যাত্রা All missions on Mars
    • সূর্যের আলো আপনার ভাবনার চেয়েও অনেক বেশি বৃদ্ধ Sunlight is much older than you think
  • শনি গ্রহের বলয় আবিষ্কার এর ইতিহাস
  • পায়োনিয়ার ১১, ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২ থেকে পাওয়া শনি গ্রহের বলয়ে ছবি
  • ক্যাসিনি হাইগেনস মিশন
  • শনি গ্রহ বলয়ের বর্ণনা
  • শনি গ্রহের সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটান
  • এনসেলাডাস – এই গ্রহের আরেকটি চাঁদ
  • আইয়াপেটাস
  • ফিবি ও হাইপেরিয়ন
  • শনি গ্রহের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টস্
  • ক্যাসিনি মিশন এর সমাপ্তি
  • ড্রাগনফ্লাই – শনিগ্রহ নিয়ে ভবিষ্যৎ মিশন

You might also like

মঙ্গল গ্রহ সমাচার Mars Human Mission Challenge and Mars Alien Controversy

মঙ্গল যাত্রা All missions on Mars

সূর্যের আলো আপনার ভাবনার চেয়েও অনেক বেশি বৃদ্ধ Sunlight is much older than you think

শনিগ্রহের এ সকল উপগ্রহের মতো শনিগ্রহ নিজেও যথেষ্ট বৈচিত্র্যসম্পন্ন। আজকের ভিডিওতে শনিগ্রহ, তার চাঁদসমূহ এবং শনিগ্রহের পরিচালিত মিশন সম্পর্কে বলা হবে। আমি জুম্মান আছি আপনাদের সাথে। আপনারা দেখছেন বিজ্ঞান পাইছি।

শনি গ্রহের বলয় আবিষ্কার এর ইতিহাস

১৬১০ সালের আগে পর্যন্ত শনিগ্রহ রাতের আকাশে একটি উজ্জ্বল বিন্দু ছিল মাত্র। কিন্তু ১৬১০ সালে গ্যালিলিও তার টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনিগ্রহকে দেখার সময় ভিন্ন কিছু লক্ষ্য করেন। এবং তা হচ্ছে শনিগ্রহের ২ পাশে দুটি উজ্জ্বল অংশ। যাদেরকে গ্যালিলিও শনিগ্রহের দুটি চাঁদ মনে করেছিলেন।

এর ২ বছর পর গ্যালিলিও আবার শনিগ্রহকে দেখেন। তখন পাশের দুটি বস্তু দেখতে পাননি। এর আরও ২ বছর পর আবার যখন শনিগ্রহকে দেখেন, তখন আবার সেই উজ্জ্বল দুটি বস্তু দেখতে পান, যা গ্যালিলিওকে দ্বিধাগ্রস্ত করে। যদিও এই রহস্যের উত্তর জানার আগেই গ্যালিলিও মারা যান।

শনি গ্রহ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য Saturnian system, Saturn moons & Cassini Huygens mission explaination in Bangla

শনিগ্রহের ২ পাশের উজ্জ্বল বস্তুর রহস্য সমাধান করেন ক্রিস্টিয়ান হাইগেনস, ১৬৫৯ সালে। হাইগেনস উন্নত টেলিস্কোপের মাধ্যমে বুঝতে পারেন শনিগ্রহের চারপাশে উজ্জ্বল পাতলা বলয় রয়েছে। এবং পৃথিবী থেকে দেখার ক্ষেত্রে শনিগ্রহের অয়ায়েন্টেশনের কারণে নির্দিষ্ট সময় পরপর বলয় দেখা যায়, আবার দেখা যায় না। সেই সাথে হাইগেনস শনিগ্রহের সবচেয়ে বড় চাঁদ, টাইটান, আবিষ্কার করেছিলেন।

এর কয়েক বছর পর গিওভানি ক্যাসিনি শনিগ্রহের আরও চারটি চাঁদ—আইয়াপেটাস, রিয়া, থেটিস এবং ডিয়ন আবিষ্কার করেন। এবং ১৬৭৫ সালে শনিগ্রহের বলয়ের ক্যাপ বা ডিভাইড লক্ষ্য করেন, যা বলয়কে ২ ভাগে ভাগ করেছে। বর্তমানে সে ডিভাইডকে ক্যাসিনি ডিভিশন বলা হয়।

পৃথিবী থেকে শনিগ্রহের বলয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া কঠিন। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, এই বলয় হয়তো সলিড এবং কন্টিনিউয়াস। যদিও গাণিতিক যুক্তি শনির বলয়কে কন্টিনিউয়াস হবার পরিবর্তে ছোট ছোট পার্টিকেলের সমন্বয় নির্দেশ করছিল।

পায়োনিয়ার ১১, ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২ থেকে পাওয়া শনি গ্রহের বলয়ে ছবি

অবশেষে শনিগ্রহ এবং এর বলয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় ১৯৭৯ সালে। পায়োনিয়ার ১১ শনিগ্রহের ২১,০০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে উড়ে যাবার সময় শনিগ্রহের ক্লোজআপ ইমেজ পৃথিবীতে পাঠায়, যা ছিল আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় শনিগ্রহের সবচেয়ে বিস্তারিত ইমেজ।

পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে ভয়েজার ১ এবং ১৯৮১ সালে ভয়েজার ২ শনিগ্রহের পাশে দিয়ে উড়ে যাবার সময় শনিগ্রহের আরও বিস্তারিত ছবি পৃথিবীতে পাঠায়। ভয়েজারের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো দেখতে পান কিভাবে শনিগ্রহের বলয় মুভ করে। ভয়েজার ১ শনিগ্রহের সবচেয়ে বড় এবং সৌরমণ্ডলের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাঁদ, টাইটান, সংক্রান্ত যথেষ্ট ডেটা পৃথিবীতে পাঠায়, যা থেকে মানুষ বুঝতে পারে সেখানে পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডল রয়েছে।

ভয়েজার ১ শনিগ্রহকে অতিক্রম করে যাবার সময় শেষ এই ছবিটি তুলেছিল। অন্যদিকে ভয়েজার ২-এর হাই-ডেফিনিশন ক্যামেরার সক্রিয় থাকার ফলে তা শনিগ্রহের বলয়ের আরও বিস্তারিত ছবি পাঠায়, যা থেকে বলয়ে থাকা পার্টিকেলের ঘনত্ব, বলয়ের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ এবং পার্টিকেলের সাইজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।

সেই সাথে ভয়েজার ২ শনিগ্রহের আরেকটি চাঁদ এনসেলাডাসের ছবিও পৃথিবীতে পাঠায়। ভয়েজার ২ শনিগ্রহকে অতিক্রম করে যাবার পরবর্তী ২৩ বছর শনিগ্রহে মানুষের তৈরি কোনো স্পেসক্রাফট যায়নি।

ক্যাসিনি হাইগেনস মিশন

অবশেষে ১৯৯৭ সালে শনিগ্রহকে উদ্দেশ্য করে পরিচালিত হয় ক্যাসিনি মিশন, যা এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র শনিগ্রহকে উদ্দেশ্য করে পরিচালিত একমাত্র মিশন। শনিগ্রহ এবং এর চাঁদ সম্পর্কে আমাদের বর্তমান জ্ঞানের মূল বাহক হচ্ছে এই ক্যাসিনি মিশন।

১৯৯৭ সালের ১৫ অক্টোবর লঞ্চ করা হয় ক্যাসিনি-হাইগেনস, যার তত্ত্বাবধানে ছিল নাসা। এছাড়াও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং ইতালিয়ান স্পেস এজেন্সি এই মিশনের সাথে যুক্ত ছিল। এদের মধ্যে স্পেসক্রাফটটি তৈরি করে নাসা, হাইগেনস ল্যান্ডার তৈরি করে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি, এবং কমিউনিকেশন অ্যান্টেনা তৈরি করে ইতালিয়ান স্পেস এজেন্সি। এছাড়াও এই মিশনের সাথে ১৭টি দেশের ১৬০ জন বিজ্ঞানী যুক্ত ছিলেন।

ক্যাসিনি লঞ্চ করার প্রায় ৭ বছর পর, ২০০৪ সালের ১ জুলাই শনিগ্রহে পৌঁছে। এতটা সময় লাগার কারণ হচ্ছে ক্যাসিনিকে গ্রাভিটি অ্যাসিস্টের মাধ্যমে শনিগ্রহে পৌঁছতে হয়েছিল। ক্যাসিনি তার যাত্রাপথে গতি বাড়ানোর জন্য মোট চারটি গ্রাভিটি অ্যাসিস্ট ব্যবহার করে।

প্রথমটি ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে শুক্র গ্রহ, দ্বিতীয়টি ১৯৯৯ সালের জুনে আবার শুক্র গ্রহ, তৃতীয়টি ১৯৯৯ সালের আগস্টে পৃথিবী, এবং সর্বশেষ ২০০০ সালের ডিসেম্বরে বৃহস্পতির গ্রাভিটি অ্যাসিস্ট। প্রতিটি গ্রাভিটি অ্যাসিস্টের মাধ্যমে ক্যাসিনি তার গতি বাড়িয়ে ছিল। এবং এর মাধ্যমে গড়ে সেকেন্ডে ১৬.৪ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবী থেকে গড়ে ১,৪০০,০০০,০০০ কিলোমিটার দূরে থাকা শনিগ্রহে পৌঁছে।

শনিগ্রহে পৌঁছানোর পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সামনে আসে, এবং তা হচ্ছে শনির গতির বিপরীতে ইঞ্জিন ফায়ার করে গতি কমানো, যেন ক্যাসিনি শনিগ্রহের কক্ষপথে থেকে যেতে পারে।

অনেকটা যেমন পৃথিবীর উপরে থাকা স্যাটেলাইট বিভিন্ন কক্ষপথে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে, ঠিক তেমনি ক্যাসিনিকে শনিগ্রহের কক্ষপথে ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়। পৃথিবীর উপরে জেট ইঞ্জিন কি এবং কিভাবে কাজ করে তা জানলে এই পাঠ আপনার জন্য সহজ হবে।

এক্ষেত্রে মোটা দাগে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রথমত, ক্যাসিনিকে শনিগ্রহের বলয়ে থাকা পার্টিকেল থেকে দূরে রাখা। দ্বিতীয়ত, সঠিক স্থানে সঠিক সময়ের জন্য ইঞ্জিন নৈপুণ্য-ভাবে ফায়ার করা। কোনো কারণে যদি ইঞ্জিন সঠিক স্থানে সঠিক সময়ের জন্য ফায়ার না করে, তবে বিলিয়ন ডলারের ক্যাসিনি শনিগ্রহকে অতিক্রম করে দূরে চলে যাবে এবং মহাশূন্যে হারিয়ে যাবে।

ক্যাসিনির সবকিছু যেন সঠিকভাবে ঘটে, তার জন্য পৃথিবী থেকে ক্যাসিনির নেভিগেশন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যাসিনির সব ধরনের বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল।

অবশেষে সকল সমস্যা দূর করে, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মানুষের তৈরি কোনো একটি স্পেসক্রাফট শনিগ্রহকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে।

প্রথমে ক্যাসিনির প্রদক্ষিণ এমনভাবে রাখা হয়েছিল যেন তা শনিগ্রহের সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এখন এমনটা কেন করা হয়েছিল, তা বলার আগে শনিগ্রহের বলয় সম্পর্কে বলে নেওয়া যাক।

ক্যাসিনি মিশন, ১৯৯৭ সালের ১৫ই অক্টোবর লঞ্চ করা হয় ক্যাসিনি-হাইগেনস, যার তত্ত্বাবধানে ছিল নাসা। এছাড়াও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং ইতালিয়ান স্পেস এজেন্সি এই মিশনের সাথে যুক্ত ছিল। এদের মধ্যে স্পেসক্রাফটটি তৈরি করে নাসা, হাইগেনস ল্যান্ডার তৈরি করে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি, এবং কমিউনিকেশন অ্যান্টেনা তৈরি করে ইতালিয়ান স্পেস এজেন্সি। এছাড়াও এই মিশনের সাথে ১৭টি দেশের ১৬০ জন বিজ্ঞানী যুক্ত ছিলেন।

ক্যাসিনি লঞ্চ করার প্রায় ৭ বছর পর, ২০০৪ সালের ১লা জুলাই শনিগ্রহে পৌঁছে। এতটা সময় লাগার কারণ হচ্ছে ক্যাসিনিকে গ্রাভিটি অ্যাসিস্টের মাধ্যমে শনিগ্রহে পৌঁছতে হয়েছিল। ক্যাসিনি তার যাত্রাপথে গতি বাড়ানোর জন্য মোট চারটি গ্রাভিটি অ্যাসিস্ট ব্যবহার করে।

প্রথমটি ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে শুক্র গ্রহ, দ্বিতীয়টি ১৯৯৯ সালের জুনে আবার শুক্র গ্রহ, তৃতীয়টি ১৯৯৯ সালের আগস্টে পৃথিবী, এবং সর্বশেষ ২০০০ সালের ডিসেম্বরে বৃহস্পতির গ্রাভিটি অ্যাসিস্ট। প্রতিটি গ্রাভিটি অ্যাসিস্টের মাধ্যমে ক্যাসিনি তার গতি বাড়িয়ে ছিল। এবং এর মাধ্যমে গড়ে সেকেন্ডে ১৬.৪ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবী থেকে গড়ে ১,৪০০,০০০,০০০ কিলোমিটার দূরে থাকা শনিগ্রহে পৌঁছে।

শনিগ্রহে পৌঁছানোর পর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সামনে আসে। এবং তা হচ্ছে শনির গতির বিপরীতে ইঞ্জিন ফায়ার করে গতি কমানো, যেন ক্যাসিনি শনিগ্রহের অরবিটে থেকে যায়। অনেকটা যেমন পৃথিবীর উপরে থাকা স্যাটেলাইট বিভিন্ন অরবিটে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে, ঠিক তেমনি ক্যাসিনিকে শনিগ্রহের অরবিটে ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়।

এক্ষেত্রে মোটা দাগে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রথমত, ক্যাসিনিকে শনিগ্রহের বলয়ে থাকা পার্টিকেল থেকে দূরে রাখা। দ্বিতীয়ত, সঠিক স্থানে সঠিক সময়ের জন্য ইঞ্জিন ফায়ার করা। কোনো কারণে যদি ইঞ্জিন সঠিক স্থানে সঠিক সময়ের জন্য ফায়ার না করে, তবে বিলিয়ন ডলারের ক্যাসিনি শনিগ্রহকে অতিক্রম করে দূরে চলে যাবে এবং মহাশূন্যে হারিয়ে যাবে।

ক্যাসিনির সবকিছু যেন সঠিকভাবে ঘটে, তার জন্য পৃথিবী থেকে ক্যাসিনির নেভিগেশন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যাসিনির সব ধরণের বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল।

অবশেষে সকল সমস্যা দূর করে, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মানুষের তৈরি কোনো একটি স্পেসক্রাফট শনিগ্রহকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে।

প্রথমে ক্যাসিনির অরবিট এমনভাবে রাখা হয়েছিল যেন তা শনিগ্রহের সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এখন এমনটা কেন করা হয়েছিল, তা বলার আগে শনিগ্রহের বলয় সম্পর্কে বলে নেওয়া যাক।

শনি গ্রহ বলয়ের বর্ণনা

শনিগ্রহের বলয় প্রায় ৭৫,০০০ কিলোমিটার স্থান জুড়ে বিস্তৃত। এখন বলয় এত বিশাল স্থান জুড়ে বিস্তৃত হলেও এর থিকনেস কিন্তু খুবই কম, গড়ে মাত্র ১০ মিটার। এবং বলয়ে যত পার্টিকেল রয়েছে, তার সবগুলোকে যদি একসাথে করা হয়, তবে তা শনিগ্রহের একটি ছোট চাঁদ, মাইমাসেরও সমান হবে না। অর্থাৎ বলয় বিশাল স্থান জুড়ে বিস্তৃত হলেও এতে বেশি ম্যাটেরিয়াল নেই। যত ম্যাটেরিয়াল আছে, তা ছোট ছোট পার্টিকেলে বিভক্ত।

যেমন এই চিত্র থেকে আপনি বলয়ের পার্টিকেলের সাইজ সম্পর্কে ধারণা পাবেন। পার্পল কালারের মাধ্যমে ৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের পার্টিকেল বোঝানো হচ্ছে, সবুজের মাধ্যমে ৫ সেন্টিমিটারের ছোট, এবং নীলের মাধ্যমে ১ সেন্টিমিটার সাইজের পার্টিকেল বোঝানো হচ্ছে। এবং কালারের শেড পরিবর্তনের বিষয়টি পার্টিকেলের সাইজ পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

শনির বলয় মূলত বরফ দিয়ে তৈরি, যার ফলে এটি খুবই ভালোভাবে সূর্যের আলো প্রতিফলিত করতে পারে। বরফের বাইরেও অল্প পরিমাণে ভিন্ন কিছু উপাদান রয়েছে।

শনির বলয়ের ক্ষেত্রে ক্যাসিনি একটি অদ্ভুত বিষয় লক্ষ্য করে এবং তা হচ্ছে বলয়ের শেষ প্রান্তে বলয় খুবই প্রশস্ত। তার মানে শেষ প্রান্তে পাহাড়ের মতো উঁচু অংশ রয়েছে। এবং এই উঁচু অংশে সূর্যের আলো পড়লে তা থেকে স্পষ্ট ছায়া তৈরি হয়।

ভয়েজার যখন শনিগ্রহকে অতিক্রম করছিল, তখন শনির বলয়ে পরিবর্তনশীল কিছু স্পট লক্ষ্য করেছিল। ক্যাসিনির মাধ্যমে পরবর্তীতে জানা যায় এই মুভিং স্পটগুলো মূলত স্থির তরঙ্গের ফলে তৈরি হয়। বলয়ে থাকা পার্টিকেল থেকে তৈরি স্থির তরঙ্গ বলয়ের উপরে ভাসতে থাকে, যার ফলে এমন দৃশ্যের অবতারণা হয়।

শনিগ্রহের একদম কাছে থাকা বলয়ের পার্টিকেল কিন্তু প্রতিনিয়ত শনিগ্রহে পতিত হয়। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, একসময় শনিগ্রহের বলয় অদৃশ্য হয়ে যাবে। বলয়ে থাকা বেশিরভাগ পার্টিকেল শনিগ্রহে পতিত হওয়ার ফলে বলয় এতটাই হালকা হয়ে যাবে যে তা খালি চোখে দৃশ্যমান হবে না। তবে এমনটা ঘটতে সুদীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন।

শনিগ্রহের বলয়ে এখনো এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা বিজ্ঞানীদের জন্য রহস্য। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, এই বলয় কীভাবে তৈরি হলো। শনির বলয় তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে কেউ কেউ মনে করেন, যখন শনিগ্রহ তৈরি হচ্ছিল তখন কিছু পার্টিকেল সরে গিয়ে এই বলয় তৈরি করেছে। আবার অনেকে মনে করেন, কোনো একটি অ্যাস্টেরয়েড কিংবা শনিগ্রহের কোনো একটি চাঁদ শনিগ্রহের খুব কাছে চলে এসেছিল, অর্থাৎ রোশ লিমিট অতিক্রম করেছিল, যার ফলে ওই বস্তুটি ভেঙে গিয়ে বলয়ে রূপ নিয়েছে।

এ বিষয়ে অবশ্য একটি ভিডিও রয়েছে। লিংকটি ডিসক্রিপশন বক্সে পেয়ে যাবেন। তবে এখনো এটা স্পষ্ট নয় যে শনির বলয় আসলে কোন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়েছিল।

শনি গ্রহের সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটান

ক্যাসিনির প্রথম দিকের অরবিট টাইটান পর্যন্ত বিস্তৃত রাখার কারণ ছিল ক্যাসিনিতে থাকা হাইগেনস প্রোবকে টাইটানে অবতরণ করানো। টাইটানে ঘন বায়ুমণ্ডল থাকার কারণে টাইটান সম্পর্কে জানা খুবই কঠিন ছিল। আবার এই বায়ুমণ্ডলের কারণেই টাইটান বিজ্ঞানীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল।

২০০৪ সালের ২৫শে ডিসেম্বর, হাইগেনস প্রোব ক্যাসিনি অরবিটার থেকে আলাদা হয়। এবং একুশ দিন পর, ২০০৫ সালের ১৪ই জানুয়ারি টাইটানে ল্যান্ড করে।

এখন হাইগেনস ২১ দিন মুক্তভাবে পড়লেও, টাইটানের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় ছিল মাত্র ২.৫ ঘণ্টা। এবং এই সময়ে হাইগেনসের গতি ছিল সেকেন্ডে প্রায় ৫.৫ কিলোমিটার। হাইগেনসের তাপমাত্রা দাঁড়িয়ে ছিল ১৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও হিট শিল্ডের মাধ্যমে হাইগেনসে থাকা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি অক্ষত ছিল।

হাইগেনসকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যেন তা ভাসতে পারে। কারণ আগে পাওয়া বিভিন্ন ডাটা থেকে এটা বোঝা যাচ্ছিল যে টাইটানে লিকুইড মিথেন কিংবা সেখানে লেক থাকতে পারে। তবে হাইগেনস যেখানে ল্যান্ড করেছিল, সেই স্থানটি ছিল শুষ্ক এবং শক্ত। এর সামনে থাকা পাথরগুলো মূলত ছিল বরফে পরিণত পানি, যা পাথরের চেয়েও শক্ত। বন্যা কেন হয় এবং কোন বন্যা সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর এখান থেকে জেনে নিন।

অন্যদিকে ক্যাসিনি অরবিটার টাইটানের উপর দিয়ে উড়ে যাবার সময় টাইটানের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ডাটা সংগ্রহ করেছিল। পরবর্তীতে হাইগেনস এবং ক্যাসিনির ডাটা বিশ্লেষণ করে জানা যায়, টাইটানের বায়ুমণ্ডলে পৃথিবীর মতোই নাইট্রোজেনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও রয়েছে মিথেন এবং ইথেনের মতো হাইড্রোকার্বন।

টাইটানের মেরু অঞ্চলে রয়েছে লিকুইড মিথেনের লেক। সেই সাথে টাইটানে পৃথিবীর মতো ঋতুর পরিবর্তন হয়। মেঘ তৈরি হয় এবং সেই মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়। তবে টাইটানে এই বৃষ্টিগুলো ঘটে মিথেনের মাধ্যমে। অর্থাৎ পৃথিবীতে যেমন পানি চক্র রয়েছে, তেমনি টাইটানে রয়েছে মিথেন চক্র।

সেই সাথে টাইটানে লিকুইড ফর্মে বৃষ্টি হয় না, মূলত তুষারপাতের মতো মিথেন পতিত হয়। এছাড়াও টাইটানে আগ্নেয়গিরির সন্ধান পাওয়া যায়, যা থেকে আইস ওয়াটার মিক্সচারসহ অন্যান্য পদার্থ নির্গত হয়।

এখন আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত পদার্থের মধ্যে পানি থাকার কারণে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, টাইটানের সলিড পৃষ্ঠের নিচে পানির সাগর থাকতে পারে। টাইটানে যেহেতু বায়ুমণ্ডল রয়েছে, লিকুইড মিথেনের লেক রয়েছে, ঋতু পরিবর্তনের বিষয় রয়েছে, সেহেতু অনেকের ধারণা, সেখানে এমন কোনো অণুজীব থাকতে পারে যার জন্য মিথেনের পরিবেশ অনুকূল। অর্থাৎ পৃথিবীর প্রাণীকুলের জন্য পানি যেমন, টাইটানের অণুজীবের জন্য মিথেন তেমন।

তবে টাইটানে সত্যিকার অর্থে কোনো অণুজীবের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা তা জানার জন্য আমাদের আরও সময়ের প্রয়োজন।

এনসেলাডাস – এই গ্রহের আরেকটি চাঁদ

টাইটানের মতোই শনিগ্রহের আরেকটি চাঁদ, এনসেলাডাসের প্রতি বিজ্ঞানীদের বিশেষ আগ্রহ ছিল। এনসেলাডাস সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল প্রতিফলক। আগের পর্যবেক্ষণগুলো থেকে এনসেলাডাসের প্রচুর গর্ত দেখা গিয়েছিল।

ক্যাসিনি এই গর্তগুলোর বিষয় জানার জন্য স্বয়ংক্রিয় ছিল। এনসেলাডাস খুব একটা বড় নয়; এর ব্যাস মাত্র ৫০৪ কিলোমিটার। পৃথিবীর সাথে তুলনা করলে এটি অনেক ছোট। তবে এটি ছোট হওয়া সত্ত্বেও এর মধ্যে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস।

ক্যাসিনি থেকে প্রাপ্ত ডাটা থেকে দেখা যায়, এনসেলাডাসের পৃষ্ঠ মোটেও মসৃণ নয়। বরং এতে উঁচু-নিচু অনেক অংশ রয়েছে। এর একদিকে গর্ত থাকলেও দক্ষিণ মেরুর দিকে নদীর মতো আকৃতির ফাটল রয়েছে। এগুলো পরস্পরের প্রায় সমান্তরাল এবং লম্বায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার। একটি ফাটল থেকে অন্যটির দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। এগুলোকে বলা হয় টাইগার স্ট্রাইপস।

এনসেলাডাসের সারপ্রাইজের এমন বৈচিত্র থেকে বোঝা যায় এটি জিওলজিক্যালি একটিভ। তবে এনসেলাডাসের সবচেয়ে চমৎকার বিষয় হচ্ছে, এই জেটগুলো থেকে সলটি ওয়াটার ভেপারসহ অন্য কিছু ম্যাটারিয়াল নির্গত হয়।

শনিগ্রহের মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে এনসেলাডাস প্রসারিত হয়, যার ফলে সারফেসের এই অংশগুলোতে ফাটল তৈরি হয় এবং এই ফাটল দিয়ে সারফেসের নিচে থাকা বস্তু নির্গত হয়। এখন নির্গত বস্তুতে যেহেতু ওয়াটার বা সল্টের মতো বিষয়ের উপস্থিতি রয়েছে, সেহেতু বিজ্ঞানীদের ধারণা, এনসেলাডাসের সারফেসের নিচে লিকুইড ওয়াটার রয়েছে।

এবং লিকুইড ওয়াটার থাকা মানেই প্রাণ থাকার সম্ভাবনা, যার জন্য এই এনসেলাডাস বিজ্ঞানীদের আগ্রহের আরেকটি জায়গা। ক্যাসিনি বেশ কয়েকবার এনসেলাডাসের পাশে দিয়ে ফ্লাইবাই করে এবং প্রচুর সায়েন্টিফিক ডেটা পৃথিবীতে পাঠায়।

আইয়াপেটাস

এনসেলাডাসের পর ক্যাসিনি আইয়াপেটাসকে পর্যবেক্ষণ করে। এই চাঁদের ক্ষেত্রে একটি অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, এর পৃষ্ঠজুড়ে বিশাল পর্বত রয়েছে। এই পর্বত মূলত আইস দিয়ে তৈরি এবং এর উচ্চতা প্রায় ২০ কিলোমিটার।

এছাড়াও আইয়াপেটাসের এক পাশে কালো এবং অন্য পাশে সাদা। আইয়াপেটাসের কালো অংশের ম্যাটেরিয়াল কি আইয়াপেটাসের অভ্যন্তর থেকে এসেছে, নাকি বাইরে থেকে এসেছে, তা নিয়ে দ্বিধা ছিল।

ফিবি ও হাইপেরিয়ন

ক্যাসিনির মাধ্যমে জানা যায়, শনিগ্রহের আরেক চাঁদ ফিবি থেকে নির্গত ডাস্ট পার্টিকল এই আইয়াপেটাসে এসে তার একপাশ কালো পদার্থে আবৃত করেছে। অন্যদিকে, ফিবিতে প্রচুর গর্ত রয়েছে এবং এটি সোলার সিস্টেমের বয়সের সমান বলে ধারণা করা হয়।

ক্যাসিনি শনিগ্রহের অনেক চাঁদকে পর্যবেক্ষণ করে, এমনকি নতুন কিছু চাঁদ আবিষ্কারও করে। শনিগ্রহের চাঁদগুলো গোলাকার হলেও কিছু কিছু চাঁদের শেপ ইরেগুলার পাথরের মতো। যেমন, হাইপেরিয়নের শেপ একদমই আলাদা। এটি অনেকটা স্পঞ্জের মতো। আবার এটিকে সেন্ট মার্টিনের প্রবালের সাথেও তুলনা করা যেতে পারে।

শনি গ্রহের গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টস্

শনিগ্রহ সৌরমণ্ডলের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ গ্রহ। এই শনিগ্রহ প্রায় সাতশোটি পৃথিবীর সমান। তবে এতে কোনো সলিড সারফেস নেই, অর্থাৎ শনিগ্রহ পুরোপুরি গ্যাস দিয়ে তৈরি। এবং এই গ্যাসের বেশিরভাগই হচ্ছে হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম।

এখন বাইরের দিকে গ্যাস থাকলেও একদম কেন্দ্রে সলিড কোর রয়েছে। অন্যদিকে, শনিগ্রহের ঘনত্ব খুব একটা বেশি নয়। এটি পানির চেয়েও হালকা। অর্থাৎ, কোনোভাবে যদি শনিগ্রহকে পানির মধ্যে রাখা যায়, তবে শনিগ্রহটি পানির মধ্যে ভাসবে। এই রকম মহাবিশ্বের কেন্দ্র বৈচিত্রময়।

শনিগ্রহে একদিনের দৈর্ঘ্য ১০ ঘণ্টা ৩৪ মিনিট। অর্থাৎ শনির নিজ অক্ষে ঘূর্ণনের স্পিড যথেষ্ট ভালো। যার ফলে শনিগ্রহে উচ্চগতির বায়ুর প্রভাব বিদ্যমান থাকে। এর ফলে সেখানে প্রতিনিয়তই ঝড় বা স্টর্ম সংঘটিত হয়।
এবং প্রতি তিরিশ বছরে একটি মেগা স্টর্ম সংঘটিত হয়।

অন্যদিকে, শনিগ্রহের উত্তর মেরুতে একটি চমৎকার বিষয় দেখা যায়, এবং তা হচ্ছে সেখানে ষড়ভুজ আকৃতির জেট স্ট্রিম বিদ্যমান থাকে। অর্থাৎ এই জেট স্ট্রিমের শেপ সবসময় ষড়ভুজের মতো থাকে। এখন কেন জেট স্ট্রিমের ষড়ভুজের মতো আকৃতি ধারণ করে, তা এখনো অজানা।

এই ষড়ভুজের একদম কেন্দ্রে রয়েছে বিশাল ঘূর্ণিঝড়, এবং এই ঘূর্ণিঝড় সার্বক্ষণিক সক্রিয় থাকে। অন্যদিকে, দক্ষিণ মেরুতে ষড়ভুজ আকৃতির জেট স্ট্রিমের উপস্থিতি না থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ের উপস্থিতি ঠিকই রয়েছে।

ক্যাসিনি মিশন এর সমাপ্তি

১৯৯৭ সালে লঞ্চ করার পর ২০০৮ সালে ক্যাসিনি মিশন সম্পন্ন হবার কথা ছিল। কিন্তু ক্যাসিনির পাওয়ার সাপ্লাই যথেষ্ট থাকার কারণে, দুইবার এই মিশন এক্সটেন্ড করা হয়। এবং অবশেষে ২০১৭ সালে মিশনের সমাপ্তি আনা হয়।

এখন মিশনের সমাপ্তির ক্ষেত্রে সামনে আসে প্ল্যানেটারি প্রোটেকশন গাইডলাইন অনুযায়ী, ক্যাসিনিকে শনিগ্রহে পতিত করে ধ্বংস করা।

ক্যাসিনি তার মিশনের সম্পূর্ণ সময়টাতেই শনির বলয়ের বাইরে অবস্থান করেছিল। কিন্তু মিশনের শেষে এসে বিজ্ঞানীরা ক্যাসিনিকে শনিগ্রহ এবং এর বলয়ের ফাঁকা স্থান দিয়ে অতিক্রম করানোর চিন্তা করেন। এবং তারা এমনটা সফলভাবেই করতে সক্ষম হন।

যার ফলে প্রথমবারের মতো কোনো একটি স্পেসক্রাফট শনিগ্রহকে এতটা কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়। ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনিকে শনিগ্রহের আবহাওয়ায় প্রবেশ করানো হয়, এবং সেখানে ক্যাসিনির দীর্ঘ ২০ বছরের যাত্রার সমাপ্তি ঘটে।

ক্যাসিনি মিশনের পেছনে এমন অনেকেই ছিলেন, যারা তাদের সম্পূর্ণ কর্মজীবন এই মিশনের পেছনে ব্যয় করেছেন। তাদের কাছে ক্যাসিনিকে ধ্বংস করা মানে ছিল নিজের সন্তানকে বিসর্জন দেওয়ার সমতুল্য।

ক্যাসিনি তার মিশনের সময়কালে ৬৩৫ গিগাবাইট বৈজ্ঞানিক ডাটা পৃথিবীতে পাঠায়। শনিগ্রহের ছয়টি নতুন চাঁদ আবিষ্কার করে। মোট ৭৮৮ কোটি কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করে। গ্রহ-উপগ্রহ মিলিয়ে ১৬২টি ফ্লাইবাই সম্পন্ন করে।
শনিগ্রহকে মোট ২৯৪ বার অরবিট করে। এবং স্যাটার্নিয়ান সিস্টেমের ৪৫৩,০৪৮টি ছবি পৃথিবীতে পাঠায়।

বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণে পরিচালিত একটি সফল মিশন ছিল এই ক্যাসিনি-হুইগেনস মিশন, যা মানুষের অজানাকে জানার অদম্য ইচ্ছার প্রতিফলন।

ড্রাগনফ্লাই – শনিগ্রহ নিয়ে ভবিষ্যৎ মিশন

শনিগ্রহকে উদ্দেশ্য করে ভবিষ্যৎ মিশন হচ্ছে ড্রাগনফ্লাই, যা ২০২৮ সালে লঞ্চ করা হতে পারে। ড্রাগনফ্লাই মূলত একটি ড্রোন। এই ড্রোনকে টাইটানে নিয়ে যাওয়া হবে, যা টাইটানের অর্গানিক কেমিস্ট্রি নিয়ে কাজ করবে।
সেই সঙ্গে টাইটানের অতীত এবং বর্তমান সময়ে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণা করবে।

বর্তমানের আলোচিত বিষয় হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সংক্ষেপে এআই। এআই-এর পেছনে মূলত রয়েছে জটিল সব গাণিতিক বিষয়। বর্তমানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এআই মানুষের চেয়েও ভালো দক্ষতা দেখাচ্ছে। এই এআই কী এবং কিভাবে কাজ করে, তা বিস্তারিত জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন। ভিডিও ভালো লাগলে বিজ্ঞান পাইসি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকতে পারেন।

Tags: বিজ্ঞান শিক্ষামহাবিশ্ব
Previous Post

ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রশ্ন ও নির্দেশিকা পিডিএফ ডাউনলোড

Next Post

এসএসসি ২০২৬ সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও মানবন্টন – All Subject in PDF

এডিটরিয়াল আপডেট

এডিটরিয়াল আপডেট

Related Posts

মঙ্গল গ্রহ সমাচার Mars Human Mission Challenge and Mars Alien Controversy
সৌর জগত

মঙ্গল গ্রহ সমাচার Mars Human Mission Challenge and Mars Alien Controversy

by এডিটরিয়াল আপডেট
জানুয়ারি ৯, ২০২৫
মঙ্গল যাত্রা All missions on Mars
সৌর জগত

মঙ্গল যাত্রা All missions on Mars

by এডিটরিয়াল আপডেট
জানুয়ারি ৮, ২০২৫
সূর্যের আলো আপনার ভাবনার চেয়েও অনেক বেশি বৃদ্ধ Sunlight is much older than you think
সৌর জগত

সূর্যের আলো আপনার ভাবনার চেয়েও অনেক বেশি বৃদ্ধ Sunlight is much older than you think

by এডিটরিয়াল আপডেট
জানুয়ারি ৮, ২০২৫
পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র এবং অরোরা Earth’s magnetic field and Aurora
সৌর জগত

পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র এবং অরোরা Earth’s magnetic field and Aurora

by এডিটরিয়াল আপডেট
জানুয়ারি ৮, ২০২৫
জভিয়ান সিস্টেম Jovian system and JUNO, JUICE mission
সৌর জগত

জভিয়ান সিস্টেম – Jovian system and JUNO, JUICE mission

by এডিটরিয়াল আপডেট
জানুয়ারি ৮, ২০২৫
Next Post
SSC 2026 Short Syllabus, এসএসসি ২০২৬ সংক্ষিপ্ত সিলেবাস

এসএসসি ২০২৬ সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও মানবন্টন - All Subject in PDF

Comments ১

  1. Pingback: জভিয়ান সিস্টেম - Jovian system and JUNO, JUICE mission - নৈপুণ্য

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recommended

জভিয়ান সিস্টেম Jovian system and JUNO, JUICE mission

জভিয়ান সিস্টেম – Jovian system and JUNO, JUICE mission

জানুয়ারি ৮, ২০২৫
জেট ইঞ্জিন কি এবং কিভাবে কাজ করে Jet engine explained in Bangla

জেট ইঞ্জিন কি এবং কিভাবে কাজ করে Jet engine explained in Bangla

জানুয়ারি ১২, ২০২৫

Categories

  • ইলেকট্রিসিটি
  • এআই প্রযুক্তি
  • টিউটোরিয়াল
  • প্রযুক্তি টিপস্
  • প্রাকৃতি ও জীবন
  • ভ্রমণ গাইড
  • শিক্ষা সংবাদ
  • সাম্প্রতিক আপডেট
  • সৌর জগত
  • স্বাধীন বাংলা

Don't miss it

এআই যুগে টিকে থাকতে শিখতে হবে ৫ স্কিল – Learn 5 Essential Skills to Survive in the Age of AI
এআই প্রযুক্তি

এআই যুগে টিকে থাকতে শিখতে হবে ৫ স্কিল – Learn 5 Essential Skills to Survive in the Age of AI

এপ্রিল ১২, ২০২৫
ফ্রি এবং সেরা Ai Video Generator দিয়ে তৈরি করুন ছবি থেকে ভিডিও
এআই প্রযুক্তি

ফ্রি এবং সেরা Ai Video Generator দিয়ে তৈরি করুন ছবি থেকে ভিডিও

মার্চ ৮, ২০২৫
ESP32 Camera Module ব্যবহার করে মিনি ওয়াইফাই ক্যামেরা তৈরি করার সহজ পদ্ধতি
প্রযুক্তি টিপস্

ESP32 Camera Module ব্যবহার করে মিনি ওয়াইফাই ক্যামেরা তৈরি করার সহজ পদ্ধতি

মার্চ ৭, ২০২৫
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ এর আদ্যোপান্ত: ৪৫০০ টাকায় শুরু থেকে শেষ
ভ্রমণ গাইড

টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ এর আদ্যোপান্ত: ৪৫০০ টাকায় শুরু থেকে শেষ

মার্চ ৫, ২০২৫
নিকলী হাওর ভ্রমণ এক দিনেই: কম খরচের ট্যুর প্লান
ভ্রমণ গাইড

নিকলী হাওর ভ্রমণ এক দিনেই: কম খরচের ট্যুর প্লান

মার্চ ৪, ২০২৫
বাংলাদেশ ভ্রমণ: ১০টি চমৎকার পর্যটন স্থান
ভ্রমণ গাইড

বাংলাদেশ ভ্রমণ: ১০টি চমৎকার পর্যটন স্থান

মার্চ ৩, ২০২৫
নৈপুণ্য

Authentic and Real-time educational information provider platform for you

Learn more

Categories

  • ইলেকট্রিসিটি
  • এআই প্রযুক্তি
  • টিউটোরিয়াল
  • প্রযুক্তি টিপস্
  • প্রাকৃতি ও জীবন
  • ভ্রমণ গাইড
  • শিক্ষা সংবাদ
  • সাম্প্রতিক আপডেট
  • সৌর জগত
  • স্বাধীন বাংলা

Browse by Tag

AI AI Tools Bangladesh Travel ChatGPT DSHE Generative AI Half Yearly Routine NCTB New Carriculam SHED Travel অষ্টম শ্রেণি মূল্যায়ন টুলস ২০২৪ আজকের খবর আপডেট নিউজ এআই কারেন্সি রেট চ্যাটজিপিটি জনপ্রশাসন টাকার দাম ডিপসিক দৈনিক শিক্ষা নতুন কারিকুলাম মূল্যায়ন নবম শ্রেণি মূল্যায়ন টুলস ২০২৪ নিকলী হাওর ভ্রমণ নৈপুণ্য পিসি টিপস বাংলাদেশ বাংলাদেশ ভ্রমণ বাংলাদেশের ইতিহাস বিজ্ঞান শিক্ষা ভ্রমণ গাইড মহাবিশ্ব মুদ্রা বিনিময় হার শিক্ষা সংবাদ ষষ্ঠ শ্রেণি মূল্যায়ন টুলস ২০২৪ সংস্কার প্রতিবেদন সপ্তম শ্রেণি মূল্যায়ন টুলস ২০২৪ সিলেবাস

© 2025 Naipunno - Education and Technology Tips Hub by SoftDows.

No Result
View All Result
  • নৈপুণ্য অ্যাপ
  • লগইন
  • যোগাযোগ

© 2025 Naipunno - Education and Technology Tips Hub by SoftDows.