বর্তমান সময়ে এআই কতটা সহজলভ্য আর কার্যকর হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ছোট বড় সবাই মোটামুটি AI Tools ব্যবহার করায় অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই এআই যুগে টিকে থাকতে শিখতে হবে ৫ স্কিল যা আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়েতো রাখবেই আর্থিকভাবেও লাভবান করবে। প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন ২০৩০ সালের মধ্যে এআই অটোমেশন প্রায় আটশো মিলিয়ন জব রিপ্লেস করে দিতে পারে।
কিন্তু আমরা বাঙ্গালীরা শুধু ওরা কোন জিনিস আবিষ্কার করে, আর আমরা এদিকে মুখস্ত করি, কে আবিষ্কার করলো, কত সালে আবিষ্কার করলো! সময় এসেছে, একটু আশপাশটা ভালো করে দেখার। আমরা যেই ফোনটা ইউজ করতেছি, যে ল্যাপটপটা ইউজ করতেছি, এটা কি ২ বছর আগেও সেম ছিল? আপডেট হয়েছে তাই না?
কিন্তু যে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, সেই শিক্ষাকারী গোলাম কেন বছরের পর বছর ধরে একই রকম আছে? কেন শিক্ষা কারিকুলামে কোন নতুনত্ব নাই, কোন আপডেট নাই? আসলে এই দেশে কেউই আমাদের ভালো চায় না, না গভর্মেন্ট, না তোমার টিচার্জ, না কোন অনলাইন ভাই। সবাই আমাদের থেকে পয়সা মারার ধান্দায় আছে। তাই নিজের ভালো নিজেকেই বুঝতে হবে।
এআই এর বর্তমান চিত্র
এই সময়ে এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Artificial Intelligence এমনি দুনিয়া কাপাইতেছে, সেই দিকে আমাদের কোনো মনযোগ নেই। মুহুর্তের মধ্যে কমান্ড দিয়ে সব কিছু করে নেওয়া যাচ্ছে। আর বসে থাকার সুযোগ ও সময় কোনোটিই নেই। এইসব প্রযুক্তি যেমন অনেক জব রিপ্লেস করে নিবে, তার থেকে কিন্তু অনেক নতুন জব অপচয়ীটিও ক্রিয়েট হবে।
আজকে আমি এমন পাঁচটা স্কিল বলব, যেগুলা এই এআইএর যুগেও আগামী ১০ বছর পর্যন্ত রেলেভেন্ট থাকবে ইনশাল্লাহ। এইসব স্কিলস্ আপনাকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে টিকে থাকার উপযোগী করে তুলবে। কারও মুখাপেক্ষি হতে হবে না।
এই সময়ে এসে পড়াশোনো না করেও বা অল্প পড়াশোনা করেও শুধুমাত্র টেকনিক্যাল স্কিলস্ ডেভেলাপ করে ভালো পরিমাণ ইনকাম করা যায়। এখন পড়াশোনা বলতে আমি কোন পড়াশোনা বুঝাচ্ছি, এইটা যদি কমন সেন্স থাকে, তাইলে কিন্তু বুঝে যাবা। আমি যেই স্কিলগুলার কথা বলব, সেগুলো আমি নিজেও শিখার ট্রাই করতেছি।
ফ্রি রিসোর্সেজ ইউজ করে কিভাবে প্রত্যেকটা স্কিল আয়ত্বে আনা যায় সেটিও জানাবো, ইনশাল্লাহ। তার পাশাপাশি যাদের ল্যাপটপ বা কম্পিউটার নাই, তাদের জন্যও তিনটা স্কিল বলবো। তবে, অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে দ্যায়ার ইজ নো শর্টকাট টু সাকসেস। এই যে ১ মাসে লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা, এই টাইপের ধারণা থেকে সবসময় দূরে থাকবেন।
অনলাইন থেকে আয় সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা
অনেকের ধারণা অনলাইন থেকে কাজ করার সাথে সাথেই আয় করা সম্ভব। এমন অনেক ভিডিও বা কনটেন্ট ভাইরাল হয়ে আছে। যারা ১ মাসে কোটি টাকা কামায়, তাদের কিন্তু এত তেল নাই যে ইউটিউবে এসে তোমাকে শিখাবে, ওরা যেটা করছে, এটা কেমনে করসে। সো, প্রথমে তোমার এই মাইন্ডসেটটা বিল্ড আপ করতে হবে, টাকা এত সহজে আসবে না।
তোমাকে আর্টিকেলের উপর ফোকাস করতে হবেনা, ফোকাস অন লার্নিং, দেন আর্নিং। দেখো বস, তুমি যেই স্কিল দিয়ে শুরু করো না কেন, তুমি একজন বিগিনার। ওই সেম স্কুলের টপ প্লেয়াররা অলরেডি মার্কেট কাপাইতেছে। তোমাকে তাদের সাথে কম্পিট করতে হবে।
সো, হঠাৎ করে একটা স্কিল শিখেই ১ মাসে একদম আসমান থেকে ডলার পড়বে না। আছে কিছু স্কিল, যেগুলা শিখে তুমি খুব ফাস্ট আর্নিং শুরু করতে পারবে। সেগুলা নিয়ে আজকে আলাপ করব না। আজকে আমি এমন স্কিলগুলা নিয়ে কথা বলব, যেগুলাতে তুমি তোমার ফুল ক্যারিয়ার দাঁড় করাইতে পারবে।
আরেকটা কথা, কোন ভুমচুম করছেন, পাল্লায় পড়বে না। এই যে যারা মাসে কোটি কোটি টাকা কামায়, তারা কোর্স বেঁচতে আইছে কেন? এতই যখন টাকা, দেখো বস, কোর্স বেচা খারাপ কিছু না। আমি যেইটা জানি, আমি টাকার বিনিময়ে সেটা অন্য কাউকে শেয়ার করতেই পারি। কিন্তু প্রবলেম হচ্ছে, তাদের মেসেজটা ভুল।
তারা এমন ভাবে জিনিসগুলো রিপ্রেজেন্ট করে যে, তুমি আজকে তাদের পোস্টটা দেখলে, কালকেই তোমার একটা মার্সিডিজ চলে আসবে। এইসব কোর্স আমিও অনেক কিনছি ভাই। এই কোর্সগুলাতে যে জিনিসগুলো শিখায়, একদমই বেশি। এর থেকে অনেক ভালো জিনিস, অনেক বেটার কনটেন্ট তুমি ইউটিউবে ফ্রি পাবে।
প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং (Prompt Engineering)

ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রায় সব সেক্টরেই এআই রেভুলেশন চলছে। ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, গ্রাফিক ডিজাইন, প্রত্যেকটা সেক্টরে এআই ইউজ করে কয়েক ঘন্টার কাজ কয়েক মিনিটে করে ফেলতে পারা যায়। যেই কাজ করতে ১০-১২ জনের একটা টিম লাগতো, সেই কাজ এখন একাই করে ফেলা পসিবল। কিন্তু এইজন্য প্রপার নলেজ লাগবে যে, কিভাবে এই এআইগুলা ইউজ করে একটা বেস্ট আউটপুট বের করে আনতে হয়।
এআই-কে কমান্ড দিয়ে আউটপুট বের করে আনাকে Prompt বলে। আর সঠিকভাবে প্রম্পট লিখে বেটার রেজাল্ট বের করে আনার জন্য যেসব কাজ করা হয় সেগুলো প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং (Prompt Engineering) বলা হয়।
চ্যাট জিপিটি, ডিপসিক অথাবা জিমিনি-কে নিজের পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট বানিয়ে ফেলতে হবে। যেকোন প্রবলেম সমাধান করতে এআই ইউজ করা শিখে নিন। চ্যাট জিপিটি, ডিপিসিক বা জেমিনি আসার পর থেকে স্কুল-কলেজের টিচাররা এটাকে এমনভাবে রিপ্রেজেন্ট করছে যেন এটা দিয়ে শুধু আকাম করা যায়! এটা খুব খারাপ একটা জিনিস। কিন্তু সেটা মোটেও নয়। ডিপসিক বনাম চ্যাটজিপিটি বিতর্কের অবসান হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখন নিজের প্রয়োজনে উপযুক্ত টুলস্ ব্যবহার শেখাই আসল বিষয়।
প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং (Prompt Engineering) কি?
বর্তমানে প্রায় সবাই আমরা চ্যাটজিপিটি ইউজ করি। কিন্তু চ্যাটজিপিটি প্রপারলি কিভাবে ইউজ করব, চ্যাটজিপিটি থেকে কিভাবে আমি বেস্ট আউটপুটটা নেব—এইটা কিন্তু আমরা খুব কম মানুষই জানি। আর এখন তো কেবল এই এআই রেভল্যুশন শুরু হচ্ছে, সামনে না জানি আরও কত কিছু দেখতে হবে।
সুতরাং, এইরকম একটা সময়ে কিভাবে এআই কে কন্ট্রোল করতে হবে, সেটা জানা কিন্তু খুবই জরুরি। আপনি চ্যাটজিপিটিকে যে ইনস্ট্রাকশনটা দিয়ে থাকেন, সেটাকেই প্রম্পট বলে। আর প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং এ আপনি শিখবেন, কিভাবে একটা বেস্ট ফর্মে লিখতে পারবেন যেন চ্যাটজিপিটি একটা বেস্ট আউটপুট দিতে পারে।
প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং শেখার নিয়ম
এখন চাইলে কিন্তু ১০-১২ জনের কাজ একাই করে ফেলা পসিবল। চ্যাটজিপিটি ইউজ করে একটা বিজনেস দাঁড় করায় ফেলা যায়। বিজনেসের আইডিয়া জেনারেশন থেকে শুরু করে মার্কেট রিসার্চ, মার্কেটিং এর জন্য কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ওয়েবসাইট বানানো—সবকিছু এআই এর হেল্প নিয়ে খুব ইজিলি করা যাচ্ছে।
মূল কথা হলো, আগে এআইয়ের বেসিক বুঝতে হবে, যে কেমনে কাজ করতেছে জিনিসগুলা। তারপর বিভিন্ন এআই টুলস নিয়ে নিজে এক্সপেরিমেন্ট করা শুরু করে দিন। কোন প্রম্পট দিলে কিরকম আউটপুট পাচ্ছো সেটা দেখুন। যে প্রম্পটগুলো আপনার কাছে বেস্ট মনে হচ্ছে, সেটা আলাদাভাবে সেভ করে রাখুন।
Prompt Engineering-এ ক্যারিয়ার
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলো তো একটু খুঁজলেই দেখা যাবে। এই প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য মানুষ ১০ ডলার থেকে শুরু করে ৫০ ডলার বা তারও বেশি চার্জ করতেছে। ২০২৫-এ যদি একটা মাত্র স্কিল শিখেন, তাহলে সেটা প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং হওয়া উচিত আমার মনে হয়। এই বিষয়গুলা যদি আপনার কাছে ফ্যাসিনেটিং লাগে, তাহলে তুমি মেশিন লার্নিং বা ডিপ লার্নিং এর দিকে যাইতে পারেন।
কনটেন্ট ক্রিয়েশন এবং ভিডিও এডিটিং
যদি আপনাকে প্রশ্ন করি, বর্তমান সময়ে গোটা ওয়ার্ল্ডের সবথেকে ইম্পরট্যান্ট কারেন্সি কী? নিশ্চয়ই আপনি বলবেন মানুষের অ্যাটেনশন। বড় বড় টেক কোম্পানি, ই-কমার্স সবাই ট্রাই করছে কিভাবে মানুষের অ্যাটেনশন গ্র্যাব করা যায়।
আর এই অ্যাটেনশন গ্র্যাব করার সবথেকে বড় মিডিয়াম হইলো ভিডিও কনটেন্ট। প্রায় ৮৫ পার্সেন্ট মানুষ টেক্সট পড়ার থেকে ভিডিও দেখা বেশি প্রেফার করে। ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম—এই প্ল্যাটফর্মগুলো মাধ্যমেই ভিডিও কনটেন্ট এত বেশি পপুলারিটি পাইছে।
আর এই ২০২৫ সালে এসে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং সব থেকে ইম্পরট্যান্ট একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়াইছে। যত বেশি মানুষ আপনাকে জানবে, আপনি তত ফাস্ট তোমার বিজনেস গ্রো করতে পারবেন। তাই ফোনটা হাতে নিন আর আজকেই শুরু করে দিন ভিডিও ক্রিয়েশন।
এমন কিছু ক্রিয়েট করুন যেটা মানুষের লাইফে ইমপ্যাক্ট রাখতে পারে। অযথাই ভাইরাল হওয়ার জন্য রাস্তাঘাটে নাচানাচি করে সস্তা বিক্রি করে কোনো লাভ নেই। আর যদি নিজে ক্যামেরার সামনে আসতে না চাও, তাও চলবে।
ভিডিও কনটেন্ট তৈরির এআই টুলস্
পুরো ভিডিও ক্রিয়েশন সিস্টেমটাই আপনি এআই দিয়ে করে ফেলতে পারবেন। এআই দিয়ে কার্টুন ভিডিও তৈরি ও ইনকাম করছে অনেকে। এখন চাইলেই ফ্রি এবং সেরা Ai Video Generator দিয়ে তৈরি করুন ছবি থেকে ভিডিও আপলোড করেও আয় করা যায়।
ভিডিওর আইডিয়া ক্রিয়েশন থেকে শুরু করে স্ক্রিপ্টিং, সবকিছু চ্যাটজিপিটি দিয়ে ইজিলি করে ফেলতে পারবেন। চাইলে নিজেই ভয়েস দিতে পারেন অথবা ইলেভেন ল্যাবস এর মতো এআইগুলা ইউজ করে ভয়েস জেনারেট করে ফেলতে পারেন। তারপর ভিডিওতে এআই জেনারেটেড ছবি ইউজ করার জন্য সবথেকে বেস্ট হলো লিওনেল এআই। আমি নিজেও এটা ইউজ করি।
তারপরে একটা ভিডিওকে সবথেকে বেশি এঙ্গেজিং বানানোর জন্য দরকার হলো ভিডিও এডিটিং। দিয়ে শুরু করো এডিটিং এর ফান্ডামেন্টালগুলো। তুমি ক্যাপকাটে খুব সহজে শিখতে পারবে। আর যাদের একটু হাইফাই পিসি আছে, তারা প্রিমিয়ার প্রো দিয়ে শুরু করতে পারো।
কিন্তু ক্যাপকাটের সবথেকে বড় অ্যাডভান্টেজ হইলো, এটাই স্মার্টফোনে ইউজ করা যায়। ভিডিও কনটেন্টের চাহিদা কিন্তু দিন দিন ডেঞ্জারাস লেভেলে বাড়তেছে। আর এইসব ভিডিওতে আরো এঙ্গেজিং বানানোর জন্য দরকার বেশি বেশি ভিডিও এডিটার্স।
ভিডিও কনটেন্ট এর মার্কেট
তো যারা লংটার্মে কোন স্কিল নিয়ে কাজ করতে চাও, তাদের জন্য ভিডিও এডিটিং বেস্ট হবে। আইপিলিক্স ধরো, তুমি ইউটিউবে ভিডিও বানানো শুরু করলে প্রথম প্রথম কিন্তু তোমার ভিডিও এডিটিং তোমার নিজেকেই করতে হবে। এর পাশাপাশি সময় পাইলে তুমি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলাতে নিজের সার্ভিস সেল করার ট্রাই করো।
আরেকটা জিনিস দেখবা, ইউটিউব এখন নতুন চ্যানেলগুলাকে খুব বেশি প্রমোট করতেছে। সো, তোমার কনটেন্ট যদি কোয়ালিটিফুল হয়, তাহলে রেজাল্ট খুব শিগগির আসবে ইনশাল্লাহ। আর এই কনটেন্ট ক্রিয়েশনে পথপ্রদর্শক হিসেবে তুমি ফলো করতে পারো ভিডআইকিউ, থিঙ্ক মিডিয়া, টিউব সেন্স, ডিকটিং ওয়াইটি—এই চ্যানেলগুলো।
ডিজিটাল মার্কেটিং
প্রতিটা ব্র্যান্ড, বিজনেস, ই-কমার্স, অ্যাপ-কমার্স সবাই চায় তাদের টার্গেট কাস্টমারদের কাছে পৌঁছাইতে। মার্কেটিং হইলো এমন একটা স্কিল, যেটাতে খুব কম সময়ে তুমি প্রো হয়ে যাইতে পারবে। তোমাকে জাস্ট একটু ভালোভাবে দেখতে হবে যে আশেপাশে আসলে হচ্ছেটা কি।
আগে মানুষ বিলবোর্ডে অ্যাড দিত, টিভিতে অ্যাড দিত। কিন্তু ধরো তুমি একটা পাঞ্জাবি সেল করবা, তুমি এটার অ্যাড দিছো টিভিতে। সো, ওইখানে কিন্তু জিনিসটা সবাই দেখতেছে। কিন্তু তোমার টার্গেট কাস্টমার হচ্ছে পোলা মানুষ, যাদের বয়স ধরো ১৫ থেকে ২৫ এর মধ্যে। এইজন্য ডিজিটাল মার্কেটিং বেস্ট।
মার্কেটিং নলেজ থাকলে, তুমি তোমার প্রোডাক্টের অ্যাড তাকেই দেখাবা যার ওই প্রোডাক্ট কিনার চান্স সব থেকে বেশি। এই ডিজিটাল মার্কেটিং কিন্তু অনেক বড় একটা সেক্টর। এর মধ্যে অনেকগুলো সাব-সেক্টর আছে। কিন্তু তোমার উচিত হবে প্রথমে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কনসেপ্টটা বুঝা।
জিনিসগুলা কিভাবে কাজ করতেছে, প্রত্যেকটা জিনিস নিয়ে স্টাডি করা। তারপরে তোমার যেটা ভালো লাগে, যেইটাতে ইন্টারেস্ট পাও সেরকম একটা সাবজেক্ট পিক করো। আর ওইটাতে এক্সপার্ট হওয়ার ট্রাই করো। কারণ ওই যে বললাম, এখন কম্পিটিশন অনেক বেশি। সবগুলাতে এভারেজ হয়ে কোনো লাভ নাই।
তোমাকে যে কোনো একটা বিষয়ে এক্সপার্ট হইতে হবে। তুমি এসইও এক্সপার্ট হইতে পারো, ফেসবুক অ্যাড এক্সপার্ট হইতে পারো, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারো, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং করতে পারো। এরকম আরো অনেক সেক্টর আছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর আন্ডারে।
খুঁজো দেখো কোনটা তোমাকে ভালো লাগতেছে, কোনটাতে তুমি ইন্টারেস্ট পাচ্ছো, সেটাতে সময় দাও। কথা হচ্ছে, অনেক বিষয়েই তোমাকে নলেজ রাখতে হবে। কিন্তু তুমি এক্সপার্ট হবে যেকোনো একটা বিষয়ে। আর এই মার্কেটিং শেখার আরেকটা বেস্ট উপায় হচ্ছে অবজারভেশন।
চারপাশে কি হচ্ছে একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করো। কোন একটা সুপার শপে গেলে খোঁজার ট্রাই করো তারা কি কি টেকনিক ইউজ করতেছে কাস্টমারদের হুক করার জন্য। বড় বড় ক্লোদিং ব্র্যান্ডগুলোর ওয়েবসাইটে যাও, দেখো কেন তারা অন্যদের থেকে ডিফারেন্ট।
একটা রেস্টুরেন্টে অনেক ভিড় কিন্তু পাশের রেস্টুরেন্টে তেমন লোকজন নাই। আসল ডিফারেন্সটা কোথায়, খোঁজার ট্রাই করো। হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করো, কিভাবে মানুষকে হুক করা যায় বিষয়গুলো দেখো। এই ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে তোমার বেশিদিন লাগবে না। ডিপসিক এআই ডাউনলোড ও ব্যবহারের নিয়ম শিখে কাজে নেমে পড়ো।
দেন, তুমি একটা ফেসবুক পেজ খুলে নিজের সার্ভিস সেল করার ট্রাই করো। অথবা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ শুরু করতে পারো। আর মোটামুটি একটা এক্সপেরিয়েন্স গেইন হলে, হাতে কিছু টাকা পয়সা আসলে, দেন তুমি তোমার একটা মার্কেটিং এজেন্সি শুরু করে দিতে পারো।
আমিও ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতেছি। বিলিভ মি, ইটস ফান। আর যাদের ল্যাপটপ নাই, তারাও কিন্তু খুব ইজিলি মার্কেটিং শিখে ফেলতে পারবে। তোমার হয়তো একটু প্র্যাকটিস করতে প্রবলেম হবে, কিন্তু নলেজ গেইন করতে তো কোন প্যারা নেই।
ইউটিউব, গুগলে যে ফ্রি রিসোর্সগুলো আছে, সেগুলো থেকে তুমি নিজের নলেজ ডেভেলপ করার ট্রাই করো। গ্যালাক্সি, নীল পাতেল, গ্যারি ভি—এদের ভিডিও দেখো ইউটিউবে। দেখবা যে এই মার্কেটিং মারাত্মক লাগতেছে।
অটোমেশন এন্ড এআই এজেন্ট
চিন্তা করো তো, যেই কাজগুলা বারবার করতে হচ্ছে, সেই কাজগুলা তুমি এআই দিয়ে অটোমেটিক করে দিলে। সো টাইম মত কাজও হচ্ছে। আর এইদিকে তোমাকে কোন প্যারাও নিতে হচ্ছে না। একচুয়ালি অটোমেশন মানে হচ্ছে তুমি এমন একটা সিস্টেম ক্রিয়েট করবে যেখানে এআই তোমার রিপিটেডি কাজগুলা করে ফেলবে। মেইন এর রিপ্লাই দেয়া থেকে শুরু করে ইন্টারভিউড বিজনেস অপারেশন্স এআই দিয়ে অটোমেট করা পসিবল।
সবথেকে বড় কথা হইলো মানুষ কাজ করতে করতে টায়ার্ড হয়ে যায়। মানুষ ভুল করে কিন্তু এআই কখনো টায়ার্ড হবে না। তোমাকে জাস্ট ওয়ার্ক ফ্লোটা ক্রিয়েট করে দিতে হবে, দেন বাকি গাছ এরাই নিজে নিজেই করবে। একটু চিন্তা করো তো, প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ নতুন বিজনেস শুরু হচ্ছে। অনেকেই ভাবছে DeepSeek Ai কারনে ChatGPT এর দিন শেষ! কিন্তু এগুলো প্রত্যেকে দিনে দিনে আরও উন্নত হচ্ছে।
লক্ষ লক্ষ বিজনেসের মিলিয়নস অপারেশনস আছে, যেগুলার অটোমেশনের দরকার আছে। এখন তুমি যদি এই এআই অটোমেশন এক্সপার্ট হও, তাহলে বুঝতেছো তোমার ডিমান্ড কি লেভেলে বাড়বে। মানুষের জন্য তো করবেই, নিজেও একা একাই একটা বিজনেস তার করে ফেলতে পারবে।
এই অটোমেশন নিয়ে কাজ করতে গেলে তোমার মেশিন লার্নিং এর বেসিক লাগবে। যেটা তুমি ফ্রি কোর্ট ক্যাম্প, ডাবলু এস কিউটি টেক চ্যানেলগুলা থেকে সহজে শিখে ফেলতে পারবে। এইবার আসো এআই এজেন্ট নিয়ে একটু কথা বলি। এআই এজেন্ট জিনিসটা আসলে কি? জিনিসটা হইল তোমার পার্সোনাল একটা সিস্টেম যাকে তুমি যেকোনো কাজের জন্য প্রোগ্রাম করতে পারো। ওই কাজে সে তোমাকে হেল্প করবে। ওই যে বললাম অটোমেশন, এই এআই এজেন্টগুলা ইউজ করি।
কিন্তু তুমি একটা সিস্টেম অটোমেট করবে। দেখো বস, একটা বিজনেস প্রপারলি রান করতে বিভিন্ন সেক্টরে অনেক মানুষজনের দরকার হয়। কিন্তু তুমি যদি বিজনেসে এই অটোমেশন ঠিকভাবে এপ্লাই করতে পারো, তাহলে সেই এক্সট্রা লোকগুলার কিন্তু দরকার তোমার হবে না।
অনলাইন বিজনেস এন্ড ই-কমার্স
এই বিজনেস ওয়ার্ডটা শুনলেই আমাদের মনে হয় যে না জানি কত টাকা লাগবে এটা করতে। কিন্তু কথা হচ্ছে, বিজনেস করতে আসলে টাকা না, একটা মারাত্মক আইডিয়া লাগে। তোমার জাস্ট একটা রিয়েল লাইফ প্রবলেম সলভ করার মাইন্ডসেট লাগবে।
রেডগিয়ারের নাম তো তোমরা অনেকেই শুনছো। করোনার সময় তারা মাত্র ১২০০০ টাকা দিয়ে শুরু করে, আজকে তাদের ইয়ারলি রিভিউ প্রায় ৫০০০০০০০ টাকা। তারা নোটিশ করলো যে বাংলাদেশী কেপের মার্কেটে একটা গ্যাপ আছে। ভালো কোন ব্রান্ড আসলে কেপ নিয়ে কাজ করতেছে না।
সো, এই জায়গাটাতেই তারা খেলা দেখায় দিলো। এখন প্রায় সবাই অনলাইনে শপিং করে, তার মানে কাস্টমারের কোনো অভাব নাই। তোমাকে জাস্ট রাইট প্রোডাক্টটা রাইট পার্সনের কাছে পৌঁছায় দিতে হবে। এখন তুমি কি নিয়ে বিজনেস করবে, অর্থাৎ তোমার বিজনেসের আইডিয়া জেনারেশন থেকে শুরু করে বিজনেস প্ল্যান এক্সিকিউশন পর্যন্ত প্রত্যেকটা স্টেপে তুমি চ্যাট জিপিটির হেল্প নিতে পারো।
ঠিকভাবে চ্যাট জিপিটিকে ইনস্ট্রাকশন দাও, দেখবে চ্যাট জিপিটি তোমাকে এমন কিছু আইডিয়া জেনারেট করে দিচ্ছে যেগুলো তোমার মাথায় জীবনেও আসতো না। কোন আইডিয়া যদি ভালো লাগে, তাহলে সেটা কেমনে এক্সিকিউট করবে সেই জিনিসটাও তুমি চ্যাট জিপিটির কাছ থেকে নিয়ে নাও।
কথা হচ্ছে, এই চ্যাট জিপিটিকে তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড বানাও। মানুষ তো স্বার্থপর, কেউ কারো ভালো চায় না। তাই চুপচাপ কাজ করো, আর কোন প্রবলেম হলে চ্যাট জিপিটির থেকে হেল্প নাও।
আরও পড়ুনঃ আয় বাড়াতে যে শিখতে হবে – 1 Skill for Increase Earning in 2025
একটা বিজনেস স্টার্ট করতে জাস্ট একটা আইডিয়া আর একটা ওয়েবসাইট লাগে। বাকি জিনিস বাদে তোমার আসতে দিলে ম্যানেজ হয়ে যাবে। তোমাকে যে শুধু ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট সেল করতে হবে, ব্যাপারটা কিন্তু এরকম না। অনেকে ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করে লাখ লাখ টাকা আয়োজন করতেছে।
ডিজিটাল প্রোডাক্ট সেল করা এখন সবথেকে প্রফিটেবল। একটা বিজনেস ঐযে, আবার চ্যাট জিপিটির কাছে যাও। চ্যাট জিপিটি তোমাকে একশোটা আইডিয়া বের করে দিবে যে কোন কোন ডিজিটাল প্রোডাক্টগুলা নিয়ে তুমি কাজ করতে পারো।
এখন কথা হচ্ছে, আজাইরা হুটহাট করে একটা বিজনেস শুরু করে দিলেই তো হবে না। তোমাকে জিনিসটা প্রপারলি জানতে হবে, বুঝতে হবে। অন্তঃপ্রণাশিপের উপর বেস্ট একটা কোর্স হোয়াইটন ভিনেটো চ্যানেলে আপলোড দেয়া আছে। যাদের বিজনেসে ইন্টারেস্ট আছে, সবাই মাস্ট এই কোর্সটা কমপ্লিট করবে।
বিলিয়নিয়াররাও আসে সেখানে ক্লাস নিসে। দেন আমার ফেভারিট বিজনেস চ্যানেল থিংক স্কুল ফলো করতে পারো। তার সাথে বস রিতে সাগর ওয়ালের কন্টেন্টও জোস। এদেরকে ফলো করো।
রাকিব হোসেনের মতো টোকাই ইউটিউবারের সাবস্ক্রাইবার টুয়েন্টি মিলিয়ন হয়ে যাইতেছে। এটিকে তোমরাই সাবস্ক্রাইব করছো। ও, ওর বউ বোনের চেহারা বেচে ভিউ কামায়, আর তোমরা এই তামাশা দেখে ওর পকেট ভর্তিছো।
এটিরি আন সাবস্ক্রাইব করে। যেই মানুষগুলো একচুয়ালি তোমার লাইফে ইনফেক্ট রাখতে পারে, তাদেরকে ফলো করো। সিম্পল একটা আইডিয়া গোটা ওয়ার্ল্ড চেঞ্জ করে দিতে পারে। সো, তোমার মাথায় কোন আইডিয়া আসলে সেটা কখনো ইগনোর করবে না। শুরু করো, ওয়ান উইকের প্ল্যান বানাও, এরপরে কি করবে সেটা ওয়ান উইক পরে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে।
স্কিল ডেভেলাপমেন্ট-এ ফোকাস
এখন যাদের কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ নাই, তাদের জন্য জিনিসটা একটু প্যারা হয়ে যায়। যদি পসিবল হয়, একটা ল্যাপটপ নিয়ে নাও। এগুলা মোবাইল দিয়ে এসব কাজে স্মুথলি হবে না। দরকার হলে, সেকেন্ড হ্যান্ড একটা ল্যাপটপ নিয়ে কাজ শুরু করে দাও। তার আগে তোমরা যেটা করতে পারো সেটা হইলো কম্প্লিটলি লার্নিং এর উপর ফোকাস করো, সেলফ হেয়ার বই পড়ো। এটা সবথেকে বেস্ট স্কিল এর উপর আসলে কিছুই নাই।
যত বই পড়বে, তোমার বিলিভ সিস্টেম আরোই স্ট্রং হবে। তত নতুন আইডিয়া তোমার মাথায় আসবে, সেলফমেট। বিলিওনিয়ার্সদের আক্স করা হইলো যে বস, আপনাদের তো কিছুই ছিল না, কেমনে কি করলেন? সবার একই উত্তর, যে আমরা রেগুলার বই পড়তাম। আর তুমিও একটা টার্গেট সেট করে বই পড়া শুরু করে দাও যে এতদিনের মধ্যে আমি এই বইটা শেষ করব।
বই পড়া শুরু করতে চাও, দুনিয়ার বেস্ট বইটা দিয়ে শুরু করো। আল কুরআন দিয়ে শুরু করো, ইনশাআল্লাহ। আমি বলতেছি বাংলা মিনিং বুঝে পড়ার কথা। আর কি কি বই পড়বে, তার একটা লিস্ট টেলিগ্রাম চ্যানেলে দিয়ে দিব, ইনশাআল্লাহ। এরপরে আরেকটা বেস্ট স্কিল হইল ফিজিক্যাল ফিডনেস। দেখো বস, তুমি যত যাই হয়ে যাও না কেন, তোমার শরীর যদি ঠিক না থাকে তাহলে কিন্তু কোন লাভ নাই। তাই সময় থাকতে টেক কেয়ার, ও ভিউয়ারস এস ম্যান।
জিমে যাও, কারণ তুমি যাই করো না কেন, তোমার যদি কনফিডেন্স না থাকে, তাইলে কিন্তু তুমি বেশি দূর চাইতে পারবে না। আর জিম তোমার কনফিডেন্স বুস্ট করবে, তোমার বিলিভ সিস্টেমকে আরো বেশি স্ট্রং করবে। দেন, পাবলিক স্পিকিং এন্ড নেটওয়ার্কিংয়ে প্রকাশ কর। এরাই সবকিছু রিপ্লেস করে দিলেও একটা জিনিস, সবসময় মানুষ লাগবেই, মোটিভেট পিপল।
মানুষকে মোটিভেট করতে, ইনস্পায়ার করতে সবসময় মানুষই লাগবে। মেশিন দিয়েই কাজ হবে না, তাই পাবলিক স্পিকিং শিখো। আশেপাশের মানুষগুলোকে ইন্সপায়ার করো, ভালো কিছু করতে। তুমি কাউকে উপরে উঠতে হেল্প করলে, তার সাথে তুমিও উপরে উঠবে। আর কাউকে যদি কানের নিচে নিচে নামাও, তাহলে ওই মানুষটার সাথে তুমিও নিচে নামবে।
ডিপ্রেসড লাইফপ্রেস ফ্রেন্ডসদের সাথে না ঘুরে, গুড পিপলদের সাথে কানেকশন বিল্ড করো। নেটওয়ার্ক কিংবা একটা মারাত্মক স্কিন, ইওর নেটওয়ার্ক ইজ ইয়োর নেটওয়ার্ক। শেষ কথা হইল, মেক ইওর প্রেজেন্ট দা বেস্ট। কাল থেকে ভালো হয়ে যাব, কাল থেকে নামাজ শুরু করব। এইসব আলাপ বাদ দাও, যা করবে আজকের। চিন্তা করো তো, যে কেউ চিন্তা করল, কাল থেকে সব আকাম বাদ দিয়ে ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু সেই লোকটা আজকের রাতেই মারা গেল, তার কিন্তু আর কখনো ভালো হওয়া হইলো না।