এল নিনো, লা নিনার প্রভাব El nino, La Nina and Heat Wave: জলবায়ু সম্পৃক্ত বিভিন্ন দুর্যোগ যেমন বন্যা, খরা, অতিবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তবে ইদানিং এই সকল দুর্যোগ গুলো যেন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। যেমন, বৃষ্টির সময় এতটাই অতি বৃষ্টি হচ্ছে যে তা আকস্মিক বন্যায় রূপ নিচ্ছে। আবার গরমের সময় এতটাই গরম থাকছে, যা অতীতের যেকোনো সময়ের রেকর্ডকে ভেঙে ফেলছে, যাকে আমরা বলি হিট ওয়েভ বা হিট ডোম।
এছাড়াও ঘনঘন দাবানল, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে পৃথিবী, যা খাদ্য উৎপাদন, সুপেয় পানির সরবরাহ, গণস্বাস্থ্যসহ বৈশ্বিক অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো কেন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে? কেন একই স্থানে কখনো অতি বৃষ্টি, আবার কখনো খরা দেখা দিচ্ছে? কেন হিট ওয়েভ বা কোল্ড ওয়েভের মতো ঘটনা ঘটছে?
এই সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে আপনাকে এলনীনো এবং লানীনা বুঝতে হবে। সেইসাথে জেট স্ট্রিমও বুঝতে হবে। আজকের আলোচনায় এলনীনো, লানীনা এবং জেট স্ট্রিম এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বলা হবে। আমি জুম্মান, আছি আপনাদের সাথে। আপনারা দেখছেন বিজ্ঞান পাইসি।
এল নিনো ও লা নিনা ইতিহাস (History of el nino and la nina)
১৭ শতকে পেরুর উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা লক্ষ্য করেন, পর্যায়ক্রমিকভাবে কয়েক বছর পর পর ক্রিসমাসের সময়টাতে প্রশান্ত মহাসাগরের পানি তুলনামূলক কিছুটা গরম বা উষ্ণ থাকে। তারা এই বিষয়টির নাম দেন এলনীনো, যা একটি স্প্যানিশ শব্দ। এর অর্থ ‘বালক’। এর মাধ্যমে তারা মূলত যীশুর ছেলে এই বিষয়টি নির্দেশ করতেন, যেহেতু উষ্ণ পানির বিষয়টি ক্রিসমাসের সময়টায় আসতো।
উষ্ণ পানির পরে তারা আবার তুলনামূলক বেশি শীতল পানির উপস্থিতিও লক্ষ্য করেন। প্রশান্ত মহাসাগরে পানির তাপমাত্রার এমন পার্থক্যের কারণ তখনকার মানুষের জানা ছিল না। এমনকি পরবর্তী দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পানির তাপমাত্রা পার্থক্যের কারণ অজানা ছিল।
অবশেষে ১৯৬০ সালের দিকে মানুষ বুঝতে পারে, প্রশান্ত মহাসাগরে পানির তাপমাত্রার পার্থক্য কেন ঘটে। সেইসাথে এটাও বুঝতে পারে, প্রশান্ত মহাসাগরের পানির তাপমাত্রার ওঠানামার বিষয়টি সম্পূর্ণ পৃথিবীর আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে। যাকে বর্তমানে বলা হয় এলনীনো সাউথার্ন অসিলেশন, সংক্ষেপে এনসো। এ বিষয়টি যেহেতু পর্যায়ক্রমিকভাবে ঘটে, সেহেতু এতে মূলত তিনটি ফেস বা দশা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নদী বিজ্ঞান River science, Erosion and Deposition
বায়ুমণ্ডলীয় হাই প্রেসার এবং লো প্রেসার (Atmospheric high and low pressure)
প্রথমত লানীনা ফেস, দ্বিতীয়ত নিউট্রাল ফেস এবং তৃতীয়ত এলনীনো ফেস। তবে এই বিষয়গুলো বুঝতে হলে আপনাকে খুবই বেসিক একটি বিষয় বুঝতে হবে এবং তা হচ্ছে হাই প্রেসার এবং লো প্রেসার।
শুধুমাত্র এই দুইটি বিষয় বুঝতে পারলে আপনি এলনীনো, লানীনা সহ আবহাওয়া সম্পৃক্ত বিভিন্ন বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা পেয়ে যাবেন। মনে করুন, দুইটি পানিপূর্ণ পাত্র মোটামুটি দূরত্বে রয়েছে। এখন এদের মধ্যে একটিকে যদি ক্রমাগত গরম করা হয় এবং অন্যটিকে যদি ক্রমাগত ঠান্ডা করা হয়, তবে কি ঘটবে?

যেই পাত্রকে গরম করা হবে, সেই পাত্রের পানি বাষ্প হয়ে উপরে উঠতে থাকবে। অর্থাৎ সেখানকার বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে যাবে। এখন এই যে বাতাস উপরে উঠে যাচ্ছে, এর ফলে এই স্থানের প্রেসার কমে যাবে। তার মানে এখানে লো প্রেসার অঞ্চল তৈরি হবে।
অন্যদিকে, যে পাত্রের পানি ঠান্ডা করা হচ্ছিল, সেখানে যেহেতু কোনো বাষ্প তৈরি হবে না, বরং সেখানকার বাতাস ঠান্ডা হয়ে ঘন হয়ে যাবে। ফলে এখানে প্রেসার বাড়তে থাকবে। অর্থাৎ এই অংশে হাই প্রেসার অঞ্চল তৈরি হবে।
এখন আমরা জানি যে কোনো বস্তুই সবসময় হাই প্রেসার অঞ্চল থেকে লো প্রেসারে চলে যেতে চায়। তার মানে, এখানে এই হাই প্রেসার অংশ থেকে লো প্রেসার অংশের দিকে বায়ুর প্রবাহ দেখা যাবে। এখন আপনি ভাবতে পারেন, এটা তো খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তবে এই বিষয়টি কিন্তু এখানেই শেষ হবে না।
এইযে লো প্রেসার জোন থেকে জলীয়বাষ্প উপরে উঠে যাচ্ছে, তা উপরে গিয়ে কিন্তু ঠান্ডা হবে। যার ফলে প্রেসার বাড়তে থাকবে। অর্থাৎ, নিচে লো প্রেসার হলেও উপরে গিয়ে হাই প্রেসার তৈরি হবে। কিন্তু এই হাই প্রেসারের বাতাস এই বড় বড় লো প্রেসার অঞ্চলে নামতে পারবে না, কারণ এখান থেকে ইতিমধ্যেই বাতাস উপরে উঠছে। ফলে উপরে তৈরি হওয়া হাই প্রেসারের বাতাস সাইড বরাবর সরে গিয়ে নিচে নেমে আসবে।
এখন সাইড বরাবর সরে যাবার ক্ষেত্রে, আমরা যদি এই দিকে সরে যাবে তা বিবেচনা করি, তবে খেয়াল করুন এখানে একটি বায়ু প্রবাহের চক্র তৈরি হচ্ছে। এবং এই চক্রই হচ্ছে পৃথিবীর বায়ু প্রবাহ, বৃষ্টিপাতসহ সর্বোপরি আবহাওয়ার বৈচিত্র্যের চালিকা শক্তি। আমরা পৃথিবীর সারফেস থেকে মূলত এই নিচের অংশের বায়ু প্রভাব অনুভব করি।
এখানে এই অংশ থেকে যেহেতু জলীয়বাষ্প উপরে উঠে, ফলে এই অংশে মেঘ তৈরি হবে। যার ফলে গরম পাত্রের আশেপাশে বৃষ্টিপাত হবে। অন্যদিকে ঠান্ডা পানির অংশে কোনো বৃষ্টিপাত হবে না। ফলে সেখানে খরা কিংবা মরুভূমির মতো বিষয় দেখা যাবে।
এখন কথা হচ্ছে, হাই প্রেসার এবং লো প্রেসারের ফলে বৃষ্টিপাতসহ বায়ুর প্রবাহের বৈচিত্র দেখা যায়, তা বুঝতে পারলাম। কিন্তু প্রাথমিকভাবে হাই প্রেসার এবং লো প্রেসার তৈরি হবার জন্য গরম এবং ঠান্ডা পানির প্রয়োজন, কিংবা গরম এবং ঠান্ডা পরিবেশের প্রয়োজন। তো পৃথিবীতে কিভাবে গরম এবং ঠান্ডার বৈচিত্র তৈরি হয়? তখন সামনে আসবে সূর্য।
সূর্যের আলো পৃথিবীর সকল স্থানে সমানভাবে আপতিত হয় না। বিষুবীয় অঞ্চল এবং এর আশপাশের অঞ্চলে সূর্যের আলো সরাসরি আপতিত হয়। অন্যদিকে মেরু অঞ্চলে তির্যকভাবে আপতিত হয়। এখন সূর্যের আলো সমান তীব্রতায় পৃথিবীর সকল স্থানে আপতিত না হবার ফলে পৃথিবীর মধ্যভাগ বেশি উত্তপ্ত থাকে এবং মেরু অঞ্চল কম উত্তপ্ত থাকে।
এখন তাপমাত্রার এমন পার্থক্যের ফলে পৃথিবীর মধ্যভাগে লো প্রেসার এবং মেরু অঞ্চলে হাই প্রেসার তৈরি হয়। এর ফলাফল হিসেবে মেরু অঞ্চল থেকে বাতাস বিষুবীয় অঞ্চলে প্রবাহিত হয়। অবশ্য সরাসরি মেরু থেকে বাতাস বিষুবীয় অঞ্চলে আসে না। বরং এমন কিছু সেল তৈরি হয় এবং সেল বরাবর আপনি যে বায়ুর প্রভাব দেখছেন, এগুলোই হচ্ছে মোটাদাগে পৃথিবীর বায়ু প্রবাহের গতিপথ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এর ফলে কি এলনীনো এবং লানীনার বিষয়টি তৈরি হয়? উত্তর হচ্ছে না। পৃথিবীর মেরু থেকে বিষুবীয় অঞ্চলে বায়ু প্রবাহের সাথে সাথে কিন্তু অন্য আরেক ধরনের বায়ু প্রভাব রয়েছে। এবং তা হচ্ছে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে কিংবা পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে বায়ু প্রবাহ, যা তৈরি হয় পৃথিবীর নিজ অক্ষে ঘূর্ণনের ফলে।
পৃথিবী নিজে ঘূর্ণনের ফলে মেরু থেকে বিষুবীয় অঞ্চলে আসা বাতাস করিওলিস ফোর্সের প্রভাবে পশ্চিম দিকে বেঁকে যায়। যার ফলে বিষুবীয় অঞ্চল এবং এর আশপাশের অঞ্চলে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিক বরাবর বায়ু প্রভাব বিদ্যমান থাকে। এবং এই বায়ু প্রবাহের ফলেই মূলত এলনীনো এবং লা নীনা সংগঠিত হয়।
আরও পড়ুনঃ মাটির নিচে পানি বা ভূগর্ভস্থ পানি রহস্য – Groundwater and Aquifer
এল নীনো এবং লা নীনা কি? (What is el nino and la nina?)
এলনীনো এবং লা নীনার সূচনা হয় প্রশান্ত মহাসাগর থেকে। বিষুবীয় অঞ্চলে প্রশান্ত মহাসাগরের উপরিস্তরের পানি সূর্যের আলোর ফলে উত্তপ্ত হয়। কিন্তু পৃথিবীর ঘূর্ণনের ফলে বিষুবীয় অঞ্চলের পূর্ব থেকে পশ্চিমমুখী বাতাস সাগরের উপরিস্তরের পানিকে পশ্চিম দিকে নিয়ে যায়। যার ফলে অস্ট্রেলিয়া এবং এর উপরের অংশের সাগরের পানি পেরু এবং চিলির অংশের পানির তুলনায় তুলনামূলক বেশি উষ্ণ থাকে।

ফলাফল, অস্ট্রেলিয়া অংশের বাতাস হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়। অর্থাৎ, লো প্রেসার তৈরি হয়। অন্যদিকে, এই অংশে হাই প্রেসার বিরাজ করে। যার ফলে প্রথমে উল্লেখ করা গরম এবং ঠান্ডা পানির মতো, এখানে বায়ু প্রবাহের একটি চক্র তৈরি হয়, যাকে বলা হয় ওয়াকার সেল।
এখন স্বাভাবিক অবস্থায়, এই অংশের আকাশে বেশি জলীয়বাষ্প থাকায় মেঘ তৈরি হয় এবং এর ফলে বৃষ্টিপাত হয়। অন্যদিকে, এই অংশে হাই প্রেসার থাকায় এখানে আকাশে জলীয়বাষ্প থাকে না। ফলে পেরু এবং চিলির উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয় না। ফলাফল হিসেবে, চিলির এই অংশে মরুভূমির অস্তিত্ব দেখা যায়।
এখন, প্রশান্ত মহাসাগরের এই স্বাভাবিক অবস্থায় যখন ব্যতিক্রম ঘটে, তখনই সামনে আসে এলনীনো এবং লানীনা। প্রথমে লানীনা বিষয়টি বলা যাক। কোনো কারণে, যদি প্রশান্ত মহাসাগরে পূর্ব থেকে পশ্চিমে বায়ুর প্রবাহ বেড়ে যায়, অর্থাৎ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম পানি পূর্ব থেকে পশ্চিমে যায়, তখন সেটাকে বলে লানীনা।
অর্থাৎ, স্বাভাবিক অবস্থায় যা ঘটে, তা যদি মাত্রায় বেশি সংঘটিত হয়, তবে সেটাকে বলা হবে লানীনা ইভেন্ট। এমন ক্ষেত্রে, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম পানি অস্ট্রেলিয়া অংশে জমা হবার ফলে বেশি পরিমাণে জলীয়বাষ্প তৈরি হয়, যা এই অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রচুর বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায়। যার ফলে আকস্মিক বন্যাও দেখা যায় এবং সেই সাথে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়।
অন্যদিকে, পেরু এবং চিলির উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্রের তলোদেশের ঠান্ডা পানি উপরে চলে আসে। অর্থাৎ, সেখানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হাই প্রেসার তৈরি হয়। যার ফলে সেই স্থানটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। ফলাফল হিসেবে খরা বা মরুভূমির মতো বিষয় সামনে আসে। তবে এই ইভেন্টের ক্ষেত্রে পেরুর উপকূলীয় অঞ্চলে একটি বিশেষ সুবিধা দেখা যায়।
এবং তা হচ্ছে, সমুদ্রের ঠান্ডা পানি উপরে আসার ফলে মাছের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপরে চলে আসে। ফলাফল, জেলেরা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাছ শিকার করতে পারেন।
লানীনার উল্টো ঘটনাকে বলে এলনীনো। অর্থাৎ, পূর্ব থেকে পশ্চিমে বায়ুর প্রবাহ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে তাকে বলা হবে এলনীনো। এমন ক্ষেত্রে, পশ্চিম দিকে বায়ুর প্রবাহ কম থাকার ফলে সমুদ্রের উপরিভাগের গরম পানি পশ্চিমে যাবার বিপরীতে উল্টো পূর্বদিকে আসতে থাকে। অর্থাৎ, পেরু এবং চিলির দিকে আসতে থাকে।
ফলে মোটামুটি প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝামাঝি অংশে প্রচুর জলীয়বাষ্প তৈরি হয়। যার ফলে তখন পেরু, চিলি এবং প্রশান্ত মহাসাগরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এতে পেরু কিংবা চিলিতে আকস্মিক ভয়াবহ বন্যা দেখা যায়। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া কিংবা তার আশপাশের অঞ্চলে অনাবৃষ্টি দেখা যায়। ফলাফল, খরা কিংবা দাবানল।
এখন এলনীনো কিংবা লানীনার ফলে যে শুধুমাত্র এই দুই অঞ্চলের আবহাওয়াতে পরিবর্তন আসে, তা নয়। বরং শক্তিশালী এলনীনো এবং লানীনার ফলে সম্পূর্ণ পৃথিবীর আবহাওয়াতে পরিবর্তন দেখা যায়। এবং সেটা কিভাবে, তা বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার বিষয়টি উল্লেখ করলেই বুঝতে পারবেন।
ওয়াকার সেলের অনুযায়ী, ইন্ডিয়ান ওশনে হাই প্রেসার বিরাজ করবে। ফলে ইন্ডিয়ান ওশন থেকে বাতাস এশিয়ার দিকে ছুটে যাবে। অর্থাৎ, তখন ইন্ডিয়ান ওশনে হাই প্রেসার এবং এশিয়া বা ভূমিতে লো প্রেসার বিরাজ করবে।
বিশেষ নিবন্ধ: বৃষ্টি সমাচার – Rainfall, Hailstorm, Lightning and Artificial rain
Heat wave and Cold wave
তার উপর, জেট স্ট্রিম থেকে আসা বাতাসের ফলে এখানে বাতাস সংকোচিত হচ্ছে। এবং এই সংকোচনের ফলে তাপমাত্রা আরো বেড়ে যাচ্ছে। এখন এই দুইটি বিষয় একসাথে হয়ে একটি হাই প্রেসার জোন তৈরি করে, যেখানে গরম বাতাস আটকে থাকে। একেই বলা হয় হিট ওয়েভ কিংবা হিট ডোম।
এই হিট ডোমের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি বেড়ে যায় এবং অসহনীয় গরমের পরিবেশ তৈরি করে। হিট ওয়েভের বিপরীত ঘটনা যেখানে ঘটে, সেখানে দেখা যায় কোল্ড ওয়েভ বা শৈত্য প্রবাহ।

ভিডিওর এই পর্যায়ে এসে, আপনারা হয়তো একটি বিষয় খেয়াল করেছেন। বায়ুর প্রবাহ কিংবা আবহাওয়া সম্পৃক্ত সকল ক্ষেত্রেই প্রেসার ডিফারেন্স হচ্ছে মূল বিষয়। এই প্রেসার ডিফারেন্সের ফলে কেমন প্রভাব তৈরি হয়, তা ভালোভাবে বুঝতে পারা মানেই আবহাওয়া সম্পৃক্ত অনেক বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হওয়া।
পৃথিবীতে বহুমুখী গতি বিদ্যমান রয়েছে। যেমন, পৃথিবীর নিজ অক্ষে ঘূর্ণনের গতি, সূর্যের চারপাশে আবর্তনের গতি, পৃথিবীসহ সম্পূর্ণ সৌরমণ্ডলের মিল্কিওয়ের চারপাশে আবর্তনের গতি। তার উপর, মিল্কিওয়ের নিজের গতি।
এই সবগুলো গতি একসাথে করলে দেখা যায়, পৃথিবীর গতি প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৮৫০ কিলোমিটার। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন আমরা পৃথিবীর এই উচ্চ গতি অনুভব করি না? তা জানতে, আপনি এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।