কোয়ান্টাম এন্টেঙ্গেলমেন্ট: উনিশশো ২৭ সালের অক্টোবর, পৃথিবীর মেধাবী কিছু মানুষ বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে সলভে কনফারেন্সে সমবেদনা পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণার আচরণ সম্পর্কে সদ্য প্রতিষ্ঠিত থিওরি, অর্থাৎ কোয়ারেন্টাইন মেকানিকস সম্পর্কে আলোচনার জন্য উপস্থিত হন। কারণ কোয়ার্টার মেকানিকস সাব অ্যাটমিক পার্টিকেলের আচরণ সম্পর্কে এমন কিছু বিষয় প্রস্তাব করছিল যা সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে যেকোনো মানুষের কাছে অসম্ভব এবং অযোগ্যিক মনে হবে।
যেমন কনটাম মেকানিকস অনুযায়ী, আপনি একটি কঠিন বস্তুকে জুম করতে করতে যদি সাব অ্যাডমিক্সে চলে যান, অর্থাৎ ইলেকট্রন, প্রোটন কিংবা নিউট্রন স্কেলে যান, তবে সেখানে কঠিন কিছুই খুঁজে পাবেন না। এই সকল সাব অ্যাডমিক পার্টিকেলের সলিড বা কঠিন কোন কাঠামো নেই, এরা শুধু ১ ধরনের ত্রিমাত্রিক ওয়েভ। সেই সাথে, আমরা পরমাণুর চারপাশে ইলেকট্রনিক যে কক্ষপথ বিবেচনা করে থাকি, সেটাও নাকি সঠিক নয়।
ওয়ানটাম মেকানিকস অনুযায়ী, পরমাণুর চারপাশে ইলেকট্রনিক কোন স্পেসিফিক স্থানে অবস্থান করবে না, বরং এটি একই সময়েই সকল স্থানে অবস্থান করবে। এবং যখনই আমরা ইলেকট্রন কিংবা অন্য কোন সাব অ্যাটমিক পার্টিকেলকে দেখার চেষ্টা করব, তখনই তাদের ওয়েভফাংশন ভেঙে গিয়ে পার্টিকেল বা সলিড অবস্থায় একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে দেখা যাবে।
আলবার্ট ইনস্টাইন এ সকল ধারণার সাথে খুবই অস্বস্তিকর ছিলেন, ফলে তিনি বলেছিলেন, “আমি ভাবতে চাই, চাঁদকে না দেখলেও চাঁদ তার অবস্থানেই থাকবে।” সাব অ্যাটমিক পার্টিকেলের আরেকটি উইয়ার্ড বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কন্টাম ইন্টেনগেলমেন্ট। এই কন্টাম ইন্টারনেটের সত্যতা পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করার জন্যই তিনজনকে ২০০০ ২২ সালের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আজকের ভিডিও এই কন্টাম ইন্টারনেট নিয়ে সাজানো হয়েছে।
আমি জুম্মান আছি, আপনাদের সাথে, আপনারা দেখছেন বিজ্ঞান পাইসি। মনে করুন আপনাকে বলা হল, নরসিংদীতে অবস্থান করে কক্সবাজারে থাকা একটি বস্তুকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এখন, কক্সবাজারে থাকা বস্তুটি যদি ইলেকট্রনিক্সের কোন ডিভাইস হয়, তবে খুব সহজে আপনি সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে অতি সামান্য হলেও সময়ের প্রয়োজন হবে, কারণ নরসিংদী থেকে যে সিগন্যাল পাঠাবেন, সেটা কক্সবাজার যেতে কিছুটা সময় অবশ্যই লাগবে। অর্থাৎ, আপনি সিগন্যাল পাঠানোর কিছুটা সময় পর কক্সবাজারের বস্তুটি সেই অনুযায়ী কাজ করবে।
কিন্তু আপনাকে যদি বলা হয়, সিগন্যাল যেতে যে সময় লাগছে, সেই সময় আপনাকে দেওয়া হবে না, অর্থাৎ আপনি সিগন্যাল দেওয়ার সাথে সাথে কক্সবাজারের বস্তুটি সিগন্যাল অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। এমন শর্তের ক্ষেত্রে সাধারণ চিন্তা থেকে বলা যায়, এটা সম্ভব নয়, কিন্তু কন্টাম ইন্টারনেট অনুযায়ী, এটা সম্ভব।
মনে করি, এটি হচ্ছে একটি কন্টাম সিস্টেম, যার স্পিন হচ্ছে শূন্য। এখন, মনে করি এই কন্টাম সিস্টেম থেকে দুটি ফোটন তৈরি হয়েছে। তাহলে একটি ফোটনের স্পিন হবে আপ, অর্থাৎ প্লাস ওয়ান, এবং অপর ফোটনের স্পিন হবে মাইনাস ওয়ান। শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি অনুযায়ী, মোট শক্তি সংগ্রহকৃত থাকবে, অর্থাৎ যেখান থেকে ফোটন দুটি তৈরি হয়েছে, সেটার স্পিন এবং ফোটন দুটি মোট স্পিন সমান হতে হবে।
এজন্যই একটি স্পিন হবে প্লাস ওয়ান এবং অপরটির হবে মাইনাস ওয়ান। ওয়ানটাম মেকানিকস অনুযায়ী, দুটি ইন্টারনেট ফোটন সুপারপোজিশন অবস্থায় থাকবে, অর্থাৎ ফোটনের স্পিন মেজার করার আগে ফোটনে একই সাথে আপ এবং ডাউন স্পিন বিদ্যমান থাকবে। এবং যখনই দেখার চেষ্টা করব, কেবল তখনই একটি স্পেসিফিক স্পিন দেখা যাবে।
অর্থাৎ, প্রথম ফোটনে আপস্পিন পাওয়ার সম্ভাবনা হচ্ছে ৫০ শতাংশ, এবং ডাউনস্পিন পাওয়ার সম্ভাবনা হচ্ছে ৫০ শতাংশ। একইভাবে, দ্বিতীয় ফোটনেও আপস্পিন পাওয়ার সম্ভাবনা হচ্ছে ৫০ শতাংশ, এবং ডাউনস্পিন পাওয়ার সম্ভাবনা হচ্ছে ৫০ শতাংশ। এখন, আপনি যদি প্রথম ফোটন দেখার পর আপস্পিন দেখতে পান, তবে দ্বিতীয় ফোটনের ক্ষেত্রে আর সম্ভাবনার বিষয়টি থাকে না, তখন আপনি ১০০ শতাংশ শিওর হয়ে বলে দিতে পারবেন, দ্বিতীয় ফোটনের স্পিন হবে ডাউন।
অর্থাৎ, প্রথম ফোটনে আপস্পিন দেখার সাথে সাথেই দ্বিতীয় ফোটনের ডাউনস্পিন দেখা যাবে। এখন, আপনি যদি দুটি ইন্টারনেট ফোটনকে ১০০০ লাইটইয়ার দূরেও স্থাপন করেন, তাহলে প্রথম ফোটনে যে স্পিন আসবে, সাথে সাথে দ্বিতীয় ফোটনে তার বিপরীত স্পিন আসবে। অর্থাৎ, এই ঘটনাটি ইনস্ট্যান্টলি ঘটবে।
ওয়ানটাম মেকানিকস অনুযায়ী, এই দুটি ইন্টারেঞ্জেল ফোটনকে একটি সিঙ্গেল ওয়েভফাংশন সংক্রান্ত করতে হবে, এবং যখনই একটি ফোটনকে দেখা হবে, তখন এর ওয়েভফাংশন ভেঙে যাবে, ফলে সাথে সাথেই দ্বিতীয় ফোটনের ওয়েভফাংশনও ভেঙে যাবে, এবং এর মাধ্যমে দ্বিতীয় ফোটনে একটি স্পেসিফিক স্পিন দেখা যাবে।
কিন্তু এমনটা আলবার্ট ইনস্টাইন কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। তিনি এই বিষয়টিকে বলেন, “স্পুকি অ্যাকশন অ্যাট আ ডিস্ট্যান্স।” কারণ রিলেটিভিটি অনুযায়ী, আলোর চেয়ে বেশি দ্রুত সম্ভব নয়, তাহলে কিভাবে প্রথম ফোটনে কী স্পিন আসলো তা দ্বিতীয় ফোটন ইনস্ট্যান্টলি জানতে পারবে? এক্ষেত্রে তো অবশ্যই সময় লাগার কথা।
এই প্রশ্ন নিয়েই আলবার্ট আইনস্টাইন দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েন। আলবার্ট আইনস্টাইন মনে করতেন, কন্টাম মেকানিকস ভুল নয়, তবে অসম্পূর্ণ। তিনি কন্টাম ইন্টারনেটমেন্টের বিষয়টি বর্ণনা করতে, উনিশশো ৩৫ সালে আরো দুইজনকে সাথে নিয়ে একটি পেপার প্রকাশ করেন, যা EPR প্যারাডক্স নামে পরিচিত।
এখানে তিনি বলেন, দুটি ইন্টারেঞ্জেল পার্টিকেলের ক্ষেত্রে, কোনটি আপস্পিন দেখাবে এবং কোনটি ডাউনস্পিন দেখাবে, তা ইন্টারেঞ্জেল পার্টিকেল তৈরি হওয়ার সময়ই নির্ধারিত হয়ে যায়, অর্থাৎ ইন্টারেঞ্জেল পার্টিকেলের মধ্যে হিডেন ভ্যারিয়েবল থাকে। বিষয়টিকে বোঝানোর জন্য আলবার্ট আইনস্টাইন একটি উপমা সামনে নিয়ে আসেন।
মনে করুন, আপনি দুটি বক্সের একটিতে বাম হাতের গ্লাস, এবং অন্যটিতে ডান হাতের গ্লাস রেখেছেন। এখন, এই দুটি বক্সকে আপনি যতদূরেই ছাপন করেন না কেন…
প্রথম বক্সে যদি আপনি বাম হাতের গ্লাস লিখতে পান, তবে আপনি হান্ড্রেড পার্সেন্ট নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন অপর বক্সে ডান হাতের গ্লাস রয়েছে। তারমানে বক্স দুটি আলাদা করার সময়ই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল কোনটিতে বাম হাতের গ্লাস রয়েছে এবং কোনটিতে ডান হাতের গ্লাস রয়েছে। কিন্তু কনট্রাম মেকানিকস অনুযায়ী হিডেন ভ্যারিয়েবল বলতে কিছু থাকবে না, অর্থাৎ ইন্টারএঙ্গেলড পার্টিকেলের ক্ষেত্রে পূর্ব নির্ধারিত কোন বিষয় নেই। ফলে মহাবিশ্বের মৌলিক ভিত্তি, অর্থাৎ সাব অ্যাডমিক পার্টিকাল আসলে কিভাবে কাজ করে, অর্থাৎ এদের মধ্যে হিডেন ভ্যারিয়েবল থাকে নাকি থাকে না, তা নিয়ে মতপার্থক্য তৈরি হয়। কিন্তু এই মতপার্থক্য সমাধান করার জন্য পরবর্তীতে কেউ সিরিয়াসলি ভাবেননি, কারণ পরবর্তী সময়ে কনট্রাম মেকানিকসের ম্যাথমেটিক্যাল ইকুয়েশনগুলো ব্যবহার করে মানুষ বিভিন্ন কিছু ইনভেন্ড করতে শুরু করে, যেমন নিউক্লিয়ার বোম, ট্রানজিস্টর, যার ফলে কেউ আর কনট্রামেন্টাল পর্যায়ে কনট্রাম মেকানিকস কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে খুব একটা ভাবতে যাননি।
ওয়ান্টাম মেকানিকসকে অনেকটা বর্তমান সময়ের মোবাইল ফোনের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। আমরা সবাই এটা জানি যে মোবাইল ফোন দিয়ে কি কি করা যায়, তবে এসব কাজ করতে গিয়ে মোবাইলের ভেতরে কি কি ঘটে তা আমরা সাধারণ মানুষ জানি না, এমনকি জানার চেষ্টাও করি না। কনট্রাম মেকানিকস ঠিক একই রকম, এটি মাধ্যমে কি কি হয়ে থাকে সেটা আমরা ভালই জানি, কিন্তু এই বিষয়গুলো কিভাবে কাজ করে, সেই সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট কোন ধারণা নেই। যার ফলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কনট্রাম মেকানিকসের হিডেন ভ্যারিয়েবলের বিষয়টি চাপা পড়ে থাকে।
উনিশশো ৬৪ সালে জনবেল একটি পদ্ধতি প্রস্তাব করেন, যার মাধ্যমে হিডেন ভ্যারিয়েবলের বিষয়টি পরীক্ষা করার সুযোগ তৈরি হয়, যাকে বলা হয় বেলস থিওরি বা বেলস ইনইকুয়ালিটি থিওরি। সূত্রটি ছিল খুবই সিম্পল, তবে এটি ব্যাখ্যা করতে গেলে কিছুটা জটিল মনে হতে পারে, তারপরেও এই সূত্রটি আসলে কি বলতে চাচ্ছে তা বলা যাক, এবং এরপর খুবই সিম্পল একটি উদাহরণ নিয়ে আসব, যার মাধ্যমে খুবই সহজে বুঝতে পারবেন।
মনে করুন তিনজন মানুষ, এ, বি, সি, এরা একই সাথে তিনটি কয়েন টস করবে। হেডকে ওয়ান এবং টেলকে জিরো বিবেচনা করি। এখন তিনজন মানুষ একই সাথে টস করলে, সবার ক্ষেত্রে তেল আসতে পারে, আবার প্রথম দুইজনের তেল এবং তৃতীয়জনের হেড আসতে পারে, এমনভাবে মোট আর ধরনের কম্বিনেশন সম্ভব। এখন দেখা যাক এর ক্ষেত্রে হেড এবং টেল কতবার আসতে পারে, এক্ষেত্রে দুইবার এমন হতে পারে। এবার, বি’র ক্ষেত্রে হেড এবং সি’র ক্ষেত্রে টেল, এরকম কম্বিনেশনে আসবে দুবার। আবার এর ক্ষেত্রে হেড এবং সি’র ক্ষেত্রে টেল, এই বিষয়টিও দুইবার দেখা যাবে।
তাহলে এখানে আমরা বলতে পারি, এনওফ এবার বি প্লাস এনওফ বি’র সি গেটার দেন ওর ইকুয়াল এনওফ এ’র সি। কারণ, এবার বি’র মান হচ্ছে টু, বি’এ’র সি’র মান হচ্ছে টু এবং এবার সি’র মান হচ্ছে টু। তাহলে টু প্লাস টু গেটার দেন অরিকোল টু বা ফোর গেটার দেন অরিকোল টু। আমরা কমন সেন্স থেকে বলতে পারি এটি সকল ক্ষেত্রে সত্য। এটি ক্লাসিক্যাল ফিজিক্স কিংবা রিলেটিভিটি বেটি সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সূত্রটিকে প্রভাবিলিটির মাধ্যমে উপস্থাপন করলে আমরা এমন দেখতে পাব, এটাই হচ্ছে বেলস ইউনিক্যালিটি।
এখন কনট্রাম মেকানিকসের ক্ষেত্রে যদি হিডেন ভ্যারিয়েবল বল বিষয়টি থেকে থাকে, তবে তা এই ইউনিক কোয়ালিটি মেনে চলবে, আর যদি হিডেন ভ্যারিয়েবল না থাকে, তবে এই ইউনিক কোয়ালিটি বায়োলেট করবে, অর্থাৎ লঙ্ঘন করবে। কিন্তু জনবেল তারই থিওরি পাবলিস্ট করার পর এটাকে ১ প্রকার অগ্রাহ্য করা হয়, অর্থাৎ কেউ তেমন একটা গুরুত্ব দেয়নি, ফলে বেলের থিওরি জাস্ট একটা পেপার হিসেবেই পড়ে থাকে। তবে ৮ বছর পর, অর্থাৎ উনিশশো ৭২ সালে জনক ক্লজার সর্বপ্রথম পোলার আইস ফিল্টারের মাধ্যমে বেলস থিওরি এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে টেস্ট করার চেষ্টা করেন।
এক্ষেত্রে তিনি লেজারের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম অ্যাটমকে হিট করেন, ফলে তা থেকে ইন্টারএঙ্গেলড ফোটন পেয়ার তৈরি হয়, এবং এই ইন্টারএঙ্গেলড ফোটন পেয়ারের মাধ্যমে তিনি বেলের থ্রিডটেস্ট করেন, এবং তিনি দেখতে পান ইন্টারএঙ্গেলড পার্টিকেলের ক্ষেত্রে হিডেন ভ্যারিয়েবল নেই, অর্থাৎ আলবাটা ইনস্টাইন ভুল ছিলেন। ইন্টারএঙ্গেলড পার্টিকেল প্রতিক্ষেত্রে বেলের ইনইকুয়ালিটি বায়োলড করছিল।
পরবর্তীতে উনিশশো ৮২ সালে এলএমএসপেক্ট একই এক্সপেরিমেন্ট আরো সূক্ষ্মভাবে করেন, এবং তিনিও একই ফলাফল দেখতে পান। কিন্তু তখনও কিছু মানুষ হিডেন ভ্যারিয়েবল না থাকার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি, তাদের ধারণা ছিল কোন প্রকার প্রভাবকের কারণে বেলসের ইনইকুয়ালিটি বায়োলেশন করছে। পরবর্তীতে, উনিশশো ৯০ সালে অ্যান্ড্রন জেলিংগার অনেক দূরের কোয়েজার থেকে আসা আলোর মাধ্যমে একই এক্সপেরিমেন্ট করেন, যেন পৃথিবীতে থাকা কোন প্রভাবকের মাধ্যমে এক্সপেরিমেন্ট প্রভাবিত না হয়, এবং তিনিও একই রেজাল্ট পান।
অর্থাৎ কনট্রাম ইন্টারএঙ্গেলমেন্ট ইজ রিয়েল। কনট্রাম পার্টিকেলের ক্ষেত্রে পূর্ব নির্ধারিত বলতে কিছু নেই, যখনই আপনি দেখবেন, তখনই কেবল একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকবে, এছাড়া এদের মধ্যে সম্ভবত সবকিছুই উপস্থিত থাকবে। এমন বিষয় মেনে নেয়া খুবই কঠিন, কারণ আমাদের চারপাশে আমরা যা দেখি, সবই হচ্ছে ডিটারমিনিস্টিক। অর্থাৎ সকল কিছুকেই আমরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে দেখি। যেমন একটি টেনিস বলকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে আমরা দেখতে পাই, কখনোই একটি টেনিস বলকে একই সময়ে একাধিক স্থানে আমরা দেখতে পাই না। কিন্তু কনট্রাম মেকানিকস অনুযায়ী সাব অ্যাডমিক পার্টিকালগুলো একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করতে পারে।
কনট্রাম মেকানিকস অনুযায়ী কনট্রাম পার্টিকালের মধ্যে ডিটারমিনিস্টিক বলতে কিছু নাই, সবকিছু হচ্ছে প্রভাবলিস্টিক। অর্থাৎ সম্ভাবনাময়, আপনি শুধুমাত্র সম্ভাবনা বলতে পারবেন, কখনোই নির্দিষ্ট করে কোন কিছুই বলতে পারবেন না। এই মহাবিশ্বের মূল ভিত্তি, অর্থাৎ কনট্রাম স্কিলের ১ গভীর সত্যকে প্রমাণ করার জন্য জনক্লাউজার, এলএমএসপেক্ট এবং অ্যান্ড্রোনজেলিংগারকে ২০০০ ২২ সালের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন তৈরি হতে পারে, বেলসের ইনইকুয়ালিটি বায়োলেশন মানে হচ্ছে, “ফোর গেটাস দেন ওর ইকুয়েল টুকে ভুল বলা,” কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব? ওয়ান্টাম মেকানিকস কিভাবে বেল ইনইকুয়ালিটিকে লঙ্ঘন করে, তা বোঝার জন্য খুবই সিম্পল একটি উদাহরণই যথেষ্ট। আমরা অনেকেই পোলারাইজ সানগ্লাসের কথা শুনেছি।
পোলারাইস সানগ্লাস হচ্ছে একটি বিশেষ ধরনের সানগ্লাস, এটাকে আপনি ১ ধরনের ওয়ানটা মেশিনও বলতে পারেন। আপনি যদি দুটি পোলারাইস গ্লাসকে নাইন্টি ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে বসান, তবে দেখবেন হান্ড্রেড পার্সেন্ট আলো ব্লক হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ দ্বিতীয় গ্লাসকে ফোটোন ভেদ করতে পারার সম্ভাবনা জিরো পারসেন্ট। এখান থেকেই কন্ট্রাম ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে যে কোনো হিডেন বেড়িয়াবল নেই, তা বোঝা যায়।
আপনি যখন দুটি পোলারাইস গ্লাসকে পরস্পরের সাপেক্ষে জিরো ডিগ্রীতে রাখছেন, তখন হান্ড্রেড পার্সেন্ট আলো পাস করছে। কিন্তু যখন ফোর্টি ফাইভ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে রাখছেন, তখন ফিফটি পার্সেন্ট আলো ব্লক হয়ে যাচ্ছে। এখন এই অ্যাঙ্গেল কে পরিবর্তন করে, যখন আপনি নাইন্টি ডিগ্রী অ্যাঙ্গেল করছেন, তখন হান্ড্রেড পার্সেন্ট আলো ব্লক হয়ে যাচ্ছে।
এখন এই হিসাব থেকে আমরা বলতে পারি, গ্লাস কে যদি ২২.৫ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে রাখা হয়, তাহলে সেভেনটি ফাইভ পার্সেন্ট আলো পাস হতে পারবে। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা যায়, এটি ফাইভ পার্সেন্ট আলো পাস হতে পারে, অর্থাৎ মাত্র ফিফটিন পার্সেন্ট ব্লক হয়ে যায়, যা ১ প্রকার অসঙ্গতি।
কিন্তু এর চেয়েও আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে, যখন আপনি তৃতীয় কোন গ্লাস এখানে ইগ্নোর করেন। মনে করুন, তিনটি গ্লাস, এ, বি এবং সি, এরা যথাক্রমে জিরো ডিগ্রী, টুয়েন্টি ফাইভ পয়েন্ট ফাইভ ডিগ্রী এবং ফোর্টি ফাইভ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে বসানো হয়েছে। তবে হিসেবে অনুযায়ী, বি গ্লাসে ফিফটিন পার্সেন্ট আলো ব্লক হবে, কারণ প্রথম গ্লাসের সাথে দ্বিতীয় গ্লাস ২২.৫ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে বসানো আছে। একইভাবে, তৃতীয় গ্লাসে আরো ফিফটিন পার্সেন্ট ব্লক হয়ে যাবে, কারণ দ্বিতীয় গ্লাসের সাথে তৃতীয় গ্লাস ২২.৫ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে বসানো আছে।
অর্থাৎ টোটাল থার্টি পার্সেন্ট ব্লক হবে। কিন্তু মাঝখানের দ্বিতীয় গ্লাসটিকে সরিয়ে ফেললে ফিফটি পার্সেন্ট আলো ব্লক হয়ে যায়, যদিও প্রথম এবং তৃতীয় গ্লাসের মধ্যবর্তী অ্যাঙ্গেল পরিবর্তন করা হয়নি। এখানেই প্রশ্ন, কিভাবে নির্ধারিত হয় কোন ফোটনটি ব্লক হবে এবং কোন ফোটনটি পাস হবে?
যদি প্রথমে এটা নির্ধারিত থাকতো, যে কোন ফোটনটি ব্লক হবে এবং কোনটি পাস হতে পারবে, তবে কখনোই মাঝখানে গ্লাস অ্যাড করার ফলে এমন আচরণ দেখা যেত না। কোন ফোটন ব্লক হবে এবং কোন ফোটন পাস হবে, যদি এটা প্রথম থেকেই নির্ধারিত থাকত, তবে এই উভয় ক্ষেত্রেই ফিফটি পার্সেন্ট আলো ব্লক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বাস্তবতা গড়ছে না।
সুতরাং, কন্ট্রাম পার্টিকেলের ক্ষেত্রে হিডেন বেরিয়ে বলতে কিছু নেই। কন্ট্রাম ইন্টারনেটের এই বিশেষ বিষয়টি সামনে আসার পর বিজ্ঞানীরা এটিকে টেলিক কমিউনিকেশন ক্ষেত্রে ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন, কারণ কন্ট্রাম গ্যালমেন্ট হতে পারে পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এইক্ষেত্রে চীন অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে, তারাই প্রথম কন্ট্রাম কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট লঞ্চ করেছে। এর মাধ্যমে কন্ট্রাম ইন্টারনেটের মাধ্যমে কমিউনিকেশন কতটা সহজ বা কঠিন হবে, তা বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওয়ানটাম ইন্টারনেটকে সবচেয়ে সেফ এবং সুরক্ষিত বলার কারণ হচ্ছে, এই ক্ষেত্রে ইনফরমেশন হ্যাক করা সহজ হবে না, কারণ মনে করুন, আপনি দুটি ইন্টারনেট পার্টিকেলের মাধ্যমে দুটি স্থানে ইনফরমেশন পাঠিয়েছেন।
এখন মাঝখানে কেউ যদি ইন্টারঙ্গেল পার্টিকেলকে প্রভাবিত করে, তবে সেটা সহজেই নজরে চলে আসবে, কারণ ইন্টেঙ্গেল পার্টিকেলের একটিকে প্রভাবিত করার মানে হচ্ছে, সাথে সাথে দ্বিতীয়টি প্রভাবিত হবে, যার ফলে মাঝখানে ইনফরমেশন হ্যাক করার চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
এবং এই জন্য কন্ট্রাম কমিউনিকেশনকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত টেলিকাম ইনফরমেশন সিস্টেম। আসলে কন্ট্রাম ম্যাকানিকস হচ্ছে জাদুর মতো। আমরা জাদু দেখে বুঝতে পারি, এখানে কোন একটি কারসাজি রয়েছে, কিন্তু সেই কারসাজি, যা কি তা বুঝতে পারি না।
ঠিক তেমনি, কন্ট্রাম ম্যাকানিক্সের উইয়ার্ড আচরণ দেখেও আমরা বুঝতে পারি, এখানে অবশ্যই কোন একটি বিষয় রয়েছে, কিন্তু সেটা কি তা এখনো আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। বর্তমানে বড় পরিসরের বিষয়গুলোকে জেনারেল রিলেটিভিটি এবং ছোট পরিসরের বিষয়গুলোকে কন্ট্রোল ম্যাকানিকসের মাধ্যমে খুবই নিখুঁতভাবে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে। তবে এটাও সত্য, যে মহাবিশ্বের সবকিছুই পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
সুতরাং, জেনারেল রিলেটিভিটি এবং ওয়ানটাম মেকানিকসও পরস্পরের সাথে কোন না কোনভাবে সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু এরা কিভাবে সম্পর্কযুক্ত, সেই রহস্য এখনও আমরা বের করতে পারিনি। কোন ১ সময় যদি আমরা এই রহস্য ভেদ করতে পারি, অর্থাৎ জেনারেল রিলেটিভিটি এবং কন্ট্রাম ম্যাগনেসকে একটি থিওরির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে পারি, তবে সেই থিওরিটি হবে থিওরি অফ এভরিথিং।
গত পর্বের উত্তর হচ্ছে বড় ছেলে পাবে ৯ টাকা এবং ছোট ছেলে পাবে ৭ টাকা। আজকের প্রশ্ন হচ্ছে, এই চিত্রটি ভালো করে দেখুন। এখানে দুটি রেখা ভূমির সাথে লম্বাভাবে অবস্থান করছে। একটি রেখার দূরত্ব হচ্ছে ৫ একক এবং অন্যটির হচ্ছে ৩ একক। এখন আপনাকে বলতে হবে, এই চিত্রতে থাকা এইচ এর মান কত?
উত্তর আগামী পর্বে পেয়ে যাবেন, আর যদি এখনই উত্তর জানতে চান, তবে বিজ্ঞান পাইসি ফেসবুক গ্রুপে চলে যান, লিংক ডিসক্রিপশন বক্সে দেওয়া থাকবে।
একটি বিশাল আকারের অ্যাস্ট্রয়েড যদি পৃথিবীর দিকে আসতে থাকে, তবে আপাতত আমাদের করার কিছুই থাকবে না। কিন্তু এমন ক্ষেত্রে মানুষের কি কি করার থাকতে পারে, তা স্টাডি করার জন্য নাসা সম্পত্তি পরীক্ষামূলক টার্ট মিশন সফলভাবে সম্পূর্ণ করেছে। ডার্ক মিশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।
ভিডিও ভালো লাগলে, বিজ্ঞান পাইসি পরিবারে যুক্ত হয়ে সাথে থাকতে পারেন।
Comments ১