জভিয়ান সিস্টেম: আমাদের সৌরমণ্ডলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রভাবশালী বস্তু হচ্ছে জুপিটার। জুপিটার এতটাই বিশাল যে এর ভর আমাদের সৌরমণ্ডলের বাকি সবকটি গ্রহের মোট ভরের ২.৫ গুণ। এটি আমাদের সোলার সিস্টেমের সবচেয়ে বড় গ্রহ। এবং জুপিটারের চারপাশে ৮০ থেকে পঁচানব্বইটির মতো চাঁদ বা উপগ্রহ রয়েছে, যার ফলে জমিন সিস্টেমকে আলাদা করে দেখলে এটিকেই সৌরমণ্ডল ভাবার মতো ভুল হতে পারে।
জুপিটারের কোন সলিড সারফেস নেই এবং এর বায়ুমণ্ডলের সর্বক্ষণিক বিশাল বিশাল ঘূর্ণিঝড় বিদ্যমান থাকে। এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে গ্রেট রেড স্পট, যা একটি বিশাল ঘূর্ণিঝড় এবং এর সাইজ আমাদের পৃথিবীর চেয়েও বড়।
সৌন্দর্যের দিক থেকেও জুপিটার (জভিয়ান সিস্টেম) পিছিয়ে নেই। জুপিটারকে কাছ থেকে দেখলে মনে হবে, কোন এক শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবি। এর আগে আমরা জেনেছি শনি গ্রহ, বলয়, উপগ্রহ ও ক্যাসিনি হাইগেনস মিশন বিষয়ে। আগ্রহী থাকলে পড়ে নিন।
জভিয়ান সিস্টেম

এখন পর্যন্ত আটটি স্পেসক্রাফট জুপিটারের (জভিয়ান সিস্টেম) পাশ দিয়ে উড়ে যাবার সময় জুপিটারের প্রচুর ছবি পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। পরবর্তীতে অবশ্য শুধুমাত্র জুপিটারকে উদ্দেশ্য করে বেশ কিছু স্পেস মিশন পরিচালনা করা হয়েছে।
আজকের আলোচনায় আমরা জভিয়ান সিস্টেম বা জুপিটার এবং জুপিটারে পরিচালিত বিভিন্ন স্পেস মিশন সম্পর্কে বলা হবে।
জুপিটার আবিষ্কার (Jupiter discovery)
প্রাচীনকাল থেকেই জুপিটার (জভিয়ান সিস্টেম) মানুষের কাছে পরিচিত ছিলো, তবে তখন জুপিটাকে একটি স্টার বা তারা মনে করা হতো।

১৬১০ সালে গ্যালিলিও সর্বপ্রথম পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বুঝতে পারেন জুপিটার একটি গ্রহ এবং এর পাশে চারটি উপগ্রহ রয়েছে, যাদেরকে বর্তমানে গ্যালিলিয়ান মুন বলা হয়।
এদের নাম যথাক্রমে আইও, ইউরোপা, গ্যানিমেড এবং ক্যালিস্টো। গ্যালিলিও সময়ে জুপিটার যে একটি গ্রহ, এই তথ্যটি ছাড়া আর তেমন কিছুই মানুষের কাছে ছিল না। পরবর্তীতে, বাইনিয়ার, টেন, এলেভেন, বয়েজার, ওয়ান এসব মিশনগুলি মাধ্যমে জুপিটার সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়।
প্রথম জভিয়ান সিস্টেম মিশন-জুনো (First jupiter mission – JUNO)
তবে শুধুমাত্র জুপিটারকে জানার উদ্দেশ্যে লঞ্চ করা প্রথম স্পেস মিশন হচ্ছে নাসার জুনো, যার উদ্দেশ্য ছিল জুপিটারের একমুখী কর্ট ম্যাগনেটিক ফিল্ড, এই বিষয়গুলো স্টাডি করা। জুনো লঞ্চ করা হয় ২০১১ সালের আগস্টে।

জুনোর গতিপথ এমন ছিল যে ২০১১ সালে লঞ্চ করার পর ২০১৩ সালে এটি আবার পৃথিবীর কাছাকাছি আসে। তবে এই কাছাকাছি আসার উদ্দেশ্য ছিল পৃথিবীকে ব্যবহার করে গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে গতি বাড়িয়ে নেওয়া।
ফলে ২০১৩ সালে জুনো পৃথিবীর গ্র্যাভিটি ব্যবহার করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গতি, ঘণ্টায় ২০০,০০০ পঁইত্রিশ হাজার কিলোমিটার গতিতে জুপিটারের দিকে যাত্রা শুরু করে। এই যাত্রাপথে যোগাযোগের ইনস্ট্রুমেন্ট ছাড়া বাকি সকল ইনস্ট্রুমেন্ট শাটডাউন করে দেয়া হয়।
২০১১ সালে লঞ্চ করার ৫ বছর পর, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে জুনো জুপিটারে পৌঁছায়। এই ভিডিওটি হচ্ছে জুনো যখন জুপিটারের (জভিয়ান সিস্টেম) কাছাকাছি যাচ্ছিল তখনকার সময়ে। ভিডিওটিতে জুপিটার সহ এর গ্যালিলিয়ান মুনগুলো দেখা যাচ্ছে।
এই ভিডিওটি মূলত ৫ দিনে তোলা ছবির সমন্বয়ে তৈরি করা। জুনো জুপিটারে পৌঁছানোর পর ডি-অরবিট বার্নের মাধ্যমে গতি কমিয়ে একটি উপযুক্ত থাকার অরবিটে জুপিটারকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। তবে এই অরবিট এমন ছিল যে জুনো যেন জুপিটারের উচ্চ ম্যাগনেটিক ফিল্ডের প্রভাব থেকে সেফ ডিসটেন্সে থাকে। এই উপপিত্তাকার অরবিটের প্রদক্ষিণকালে জুনো জুপিটারে প্রচুর সায়েন্টিফিক ডেটা কালেক্ট করে, সেই সাথে ছবি তোলে।
জুপিটার এর বায়ুমন্ডল (Jupiter atmospheric)
জুপিটারের বায়ুমণ্ডল মূলত অ্যামোনিয়া, আইস, অ্যামোনিয়াম হাইড্রোসালফেট ক্রিস্টাল এবং আইস ওয়াটার মোলিকিউল দ্বারা তৈরি। বায়ুমণ্ডলের নিচে রয়েছে লিকুইড হাইড্রোজেন। আমাদের ক্ষেত্রে যেমন বায়ুমণ্ডলের পর সলিড সারফেস রয়েছে, কিন্তু জুপিটারে এমন সলিড সারফেস নেই, সেখানে রয়েছে লিকুইড হাইড্রোজেন।

পৃথিবীতে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় হাইড্রোজেন গ্যাস অবস্থায় থাকলেও, জুপিটারের এক্সট্রিম প্রেসারের কারণে সেখানে হাইড্রোজেন লিকুইড অবস্থায় থাকে। জুপিটারের (জভিয়ান সিস্টেম) বায়ুমণ্ডলের নিচে প্রেসারের পরিমাণ পৃথিবীর সমুদ্র পৃষ্ঠে যে প্রেসার থাকে তার প্রায় ৫০০,০০০ গুণ এবং এই কারণে হাইড্রোজেন লিকুইড অবস্থায় বিরাজ করে।
যত গভীরে যাবো, তত প্রেসার বাড়বে, ফলে সেখানে হাইড্রোজেন ম্যাটালের মতো আচরণ করবে, যার ফলে হাইড্রোজেনের ইলেকট্রন প্রায় মুক্তভাবে বিরাজ করে। এবং ইলেকট্রন মুক্তভাবে বিরাজ করতে পারার কারণে সেখানে ইলেকট্রিসিটি তৈরি হয়, এবং এই জন্যই জুপিটারের চারপাশে শক্তিশালী ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়।
তবে জুপিটারের কেন্দ্র বা কোর কেমন তা এখনো অস্পষ্ট। প্রথমে মনে করা হয়েছিল যে জুপিটারের কেন্দ্রে হয়তো পৃথিবীর সাইজের ভারী সলিড কোর রয়েছে, কিন্তু জুনো স্পেস ক্যাপসুল পাঠানো ডেটা সেটি সমর্থন করে না, ফলে জুপিটারের কোর আসলে কেমন তা এখনো অস্পষ্ট। পৃথিবীতে থাকা মেঘে যেমন বিদ্যুৎ চমকায়, তেমনি জুপিটারে থাকা বিশাল মেঘে প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ চমকায় বা বজ্রপাত সংঘটিত হয় এবং এদের উজ্জ্বলতা পৃথিবীর বজ্রপাতের তুলনায় অনেক বেশি।
অন্যদিকে, গ্রেট রেড স্পট এটি একটি অ্যান্টি সাইক্লোন, যা গ্রহের দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ঘোরে। জুনো স্পেসক্রাফট জুপিটারের স্ট্রাকচার, একমুখী ম্যাগনেটিক ফিল্ড এগুলোর সম্পর্কে অনেক অজানা বিষয় রিভিল করলেও, এখনো অনেক কিছু জানার বাকি।
জুনো লঞ্চ করার পর ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জুপিটাকে প্রদক্ষিণ করার কথা ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে এই মিশন ২০২৫ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এই সময়সীমা অতিক্রম হওয়ার পর প্ল্যান অনুযায়ী জুনোকে জুপিটারে পতিত করা হবে এবং এর মাধ্যমে জুনো মিশনে সমাপ্তি ঘটবে।
জুনো যে শুধুমাত্র জুপিটার (জভিয়ান সিস্টেম) সম্পর্কে আমাদের ধারণা সমৃদ্ধ করেছে, তা কিন্তু নয়; এটি জুপিটারের আইস মoonsগুলোর সম্পর্কেও অনেক ধারণা দিয়েছে। ধারণা করা হয়, ইউরোপা, গ্যানিমেড, ক্যালিস্টো, এইসব আইস মoonsের সলিড সারফেসের নিচে লিকুইড ওয়াটার রয়েছে। তবে এই ধারণা কতটা সঠিক তা যাচাই করার জন্য ২০২৩ সালে জুপিটারে নতুন আরেকটি স্পেস মিশন পরিচালনা করা হয়েছে, যার নাম জুস।
জমিয়ান সিস্টেমের প্রথম চারটি গ্রহ হচ্ছে আইও, ইউরোপা, গ্যানিমেড এবং ক্যালিস্টো। এই চারটি উপগ্রহের মধ্যে আইও, জুপিটারের সবচেয়ে কাছের উপগ্রহ। এটি খুবই অশান্ত, এতে রয়েছে বিশাল বিশাল আগ্নেয়গিরি, কারণ এটি জুপিটারের কাছে হবার ফলে জুপিটারের শক্তিশালী ম্যাগনেটিক ফিল্ডের প্রভাবে আইও অশান্ত।
জ্ঞানীমিড হচ্ছে সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ। তবে এই চারটি উপগ্রহের মধ্যে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির জুস মিশনের মূল টার্গেট হচ্ছে ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো, বিশেষ করে গ্যানিমিড। কারণ ধারণা করা হচ্ছে, এই তিনটি উপগ্রহ ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয়। অর্থাৎ, এদের বরফে ঢাকা পৃষ্ঠের নিচে তরল পানি থাকতে পারে।
২০২৩ সালের ১৪ই এপ্রিল লঞ্চ করা হয় জুপিটার আইস মুন এক্সপ্লোরেশন স্পেসক্রাফট, সংক্ষেপে জুস। জুসের গতিপথ বেশ জটিল। এই স্পেসক্রাফটটি মোট চারটি গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্ট ব্যবহার করবে। এর মধ্যে তিনবার পৃথিবী এবং একবার ভেনাসের গ্র্যাভিটি ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুনঃ সূর্যের আলো আপনার ভাবনার চেয়েও অনেক বেশি বৃদ্ধ
লঞ্চ করার পর ২০২৪ সালের আগস্টে পৃথিবী, ২০২৫ সালের আগস্টে ভেনাস, ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে পৃথিবী এবং সর্বশেষ ২০২৯ সালের জানুয়ারিতে আবার পৃথিবীর গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্ট ব্যবহার করে জুপিটারের দিকে যাত্রা শুরু করবে। ২০৩১ সালের জুলাইয়ে এটি জুপিটারে পৌঁছাবে। অর্থাৎ, জুস লঞ্চ করার প্রায় ৮ বছর পর জুপিটারে পৌঁছাবে।
জুসের ক্ষেত্রে এমন জটিল গতিপথের কারণ হচ্ছে, জুস তুলনামূলকভাবে ভারী। কারণ এতে অনেক ধরনের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রাংশ রয়েছে। এর ফলে গতি বাড়ানোর জন্য বেশি সংখ্যক গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্টের প্রয়োজন পড়েছে। প্রথমে ২০২২ সালের মে মাসে জুস লঞ্চ করার পরিকল্পনা ছিল।
সেক্ষেত্রে জুস ২০২৯ সালেই জুপিটারে পৌঁছে যেত। তবে কোভিডের কারণে লঞ্চের সময় ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে স্থানান্তর করা হয়, যার ফলে গতিপথেও পরিবর্তন আসে।
জুসকে সক্রিয় রাখতে প্রয়োজন ছিল বিশাল আয়তনের সৌর প্যানেল। কারণ, সূর্য থেকে যত দূরে যাওয়া হয়, ততই সৌরশক্তির পরিমাণ কমে। আপনি মঙ্গল যাত্রা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এটি পড়ুন।
সূর্য থেকে জুপিটারের যে দূরত্ব, সেই হিসেবে পৃথিবীতে যে পরিমাণ সৌরশক্তি আপতিত হয়, তার মাত্র ৩% জুপিটারে পৌঁছায়। ফলে দুর্বল সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বড় আকারের সৌর প্যানেল প্রয়োজন।
জুসের সৌর প্যানেল তুলনামূলকভাবে অনেক বড়। সেই সাথে জুস ভেনাসের পাশ দিয়ে যাবে, যেখানে তাপমাত্রা খুবই বেশি। আবার জভিয়ান সিস্টেম যে স্থানে রয়েছে, সেখানে তাপমাত্রা খুবই কম। ফলে জুসকে এমনভাবে তৈরি করতে হয়েছে, যেন এটি উচ্চ তাপমাত্রা এবং নিম্ন তাপমাত্রা—দুই ক্ষেত্রেই কার্যকর থাকে।
এই স্পেসক্রাফট তৈরিতে ১৮ দেশের বিজ্ঞানীদের ১১ বছরের প্রচেষ্টা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে, ২০৩১ সালে জোভিয়ান সিস্টেমে প্রবেশ করবে জুস।
পরবর্তীতে ইউরোপা, গ্যানিমিড, ক্যালিস্টোর চৌম্বকক্ষেত্র, বরফে ঢাকা পৃষ্ঠ এবং এই পৃষ্ঠের নিচে থাকা পানির বিষয়ে গবেষণা করবে। তবে গ্যানিমিডকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র এবং অরোরা নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। তাও পড়তে পারেন।
এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, কোনো একটি উপগ্রহের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার সময়, ওই উপগ্রহের পৃষ্ঠের নিচে পানি আছে কিনা, তা কীভাবে জানা যাবে?
আসলে, পৃষ্ঠের নিচে যদি লবণাক্ত পানি থাকে, তবে তা চৌম্বকক্ষেত্রে পরিবর্তন সৃষ্টি করে। কারণ লবণাক্ত পানি বিদ্যুৎ পরিবাহী হিসেবে কাজ করে, যা চৌম্বকক্ষেত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। জুস মূলত চৌম্বকক্ষেত্রের অসঙ্গতি বা পরিবর্তন পরিমাপ করার মাধ্যমে পানির অস্তিত্ব নির্ধারণ করবে।
জভিয়ান সিস্টেম এর দিকে পাঠানো জুস একমাত্র স্পেসক্রাফট, যা অন্য কোনো গ্রহের উপগ্রহে প্রদক্ষিণ করবে। এ ক্ষেত্রে জুস গ্যানিমিডের চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে এবং ২০৩৫ সালে মিশন শেষে গ্যানিমিডে পতিত হবে।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা দরকার। যেহেতু জুস গ্যানিমিডে পতিত হবে এবং গ্যানিমিডে পানি থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে, তাই পৃথিবীর কোনো ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস যাতে গ্যানিমিডে ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য জুসকে একদম আইসোলেটেড পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ, জুসকে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখা হয়েছে।
জভিয়ান সিস্টেম এ জুস মিশনের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। ২০২৪ সালে, নাসা ইউরোপাকে টার্গেট করে আরেকটি স্পেস মিশন পরিচালনা করতে যাচ্ছে, যার নাম ইউরোপা ক্লিপার মিশন। এই স্পেসক্রাফট ২০৩০ সালের এপ্রিলে জুপিটারে পৌঁছাবে। অর্থাৎ, জুস এবং ইউরোপা ক্লিপার—এই দুটি স্পেসক্রাফট প্রায় একই সময়ে জুপিটারে অবস্থান করবে।
তার মানে দাঁড়াচ্ছে, একই সময়ে দুটি স্পেসক্রাফট অন্য কোনো গ্রহের উপগ্রহে অবস্থান করবে, যা একটি চমৎকার সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করবে। এমনও হতে পারে, একটি স্পেসক্রাফট অন্য কোনো উপগ্রহে পতিত হওয়ার সময় কী প্রভাব তৈরি করে, তা সরাসরি দেখার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
মানুষের চিন্তা কতটা সুদূরপ্রসারী, একবার ভেবে দেখুন। এত দূরে থাকা জভিয়ান সিস্টেম-এ মানুষের তৈরি যন্ত্র বিচরণ করছে এবং এভাবেই প্রতিনিয়ত মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মানুষের তৈরি সবচেয়ে দূরে থাকা বস্তু হচ্ছে ভয়েজার-১, যা বর্তমানে সৌরজগতের বাইরে অবস্থান করছে এবং এক সময় এটি মানুষের আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে। ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২-তে অন্য কোনো সভ্যতার জন্য গোল্ডেন রেকর্ডের মাধ্যমে বার্তা দেওয়া রয়েছে।
ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২ কীভাবে এত দূরে যেতে পারল, এখনো কীভাবে এদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হয়, সেই সাথে গোল্ডেন রেকর্ড;