সূর্য প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১০ লক্ষ টন উচ্চগতির চার্জযুক্ত কণা, অর্থাৎ ইলেকট্রন এবং প্রোটন নির্গত করে যাচ্ছে।
যার প্রভাবে মঙ্গল গ্রহ আজকের শুষ্ক মরুভূমি। কিন্তু মঙ্গল গ্রহের তুলনায় সূর্যের কাছে অবস্থান করেও পৃথিবীতে চমৎকার বাসযোগ্য পরিবেশ বিরাজ করছে।
তার উপর আবার পৃথিবীতে সূর্য থেকে আসা চার্জযুক্ত কণার প্রভাবে দুই মেরুর আকাশে দৃষ্টিনন্দন নানা বর্ণের আলো দেখা যায়, যাকে বলে অরোরা।
এই অরোরা যে সব সময় শুধুমাত্র মেরু অঞ্চলেই দেখা যাবে, তা নয়। এমনও হতে পারে, ভবিষ্যতে হয়তো বাংলাদেশের আকাশেও অরোরা দেখা যেতে পারে।
এখন পৃথিবীর কোন স্থানে অরোরা দেখা যাচ্ছে, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পৃথিবীর আকাশে যতদিন অরোরা দেখা যাবে, ততদিনই পৃথিবী মানুষের বসবাসের উপযোগী থাকবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মঙ্গল গ্রহের তুলনায় পৃথিবী সূর্যের বেশি কাছে থাকার পরেও কেন পৃথিবী শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হলো না? এবং এর সাথে অরোরার কি সম্পর্ক?
আমরা প্রায়শই শুনে থাকি, পৃথিবী একটি বিশাল চুম্বক। এখন পৃথিবীর চুম্বকের এই আচরণ বিষয়টি বুঝতে পারলেই অরোরা সহ অন্যান্য প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া যাবে।
সাধারণ একটি চুম্বকের চারপাশে যদি লোহার চূর্ণ ছিটিয়ে দেওয়া হয়, তবে লোহার চূর্ণগুলো বিশেষভাবে সজ্জিত হয়।
এই সজ্জিত লোহার চূর্ণ বরাবর যদি রেখা কল্পনা করা হয়, তবে যে ক্ষেত্রটি পাওয়া যাবে তাকে বলা হয় চুম্বক ক্ষেত্র।
আমরা আরেকটি বিষয় জানি, বিদ্যুৎ এবং চুম্বক ভিন্ন কিছু নয়।
আপনি কোনো পরিবাহীতে যদি বিদ্যুৎ প্রবাহ দেন, তবে ওই পরিবাহক চুম্বকের মতো আচরণ করবে।
ফলে পরিবাহকের চারদিকে চুম্বক ক্ষেত্র তৈরি হবে।
এখন পৃথিবী কেন চুম্বকের মতো আচরণ করে এবং এর থেকে সৃষ্ট চুম্বক ক্ষেত্র কেমন তা বলা যাক।
পৃথিবীর একদম কেন্দ্রে রয়েছে সলিড আয়রন গোলক। এই সলিড আয়রন খুবই উত্তপ্ত, কিন্তু প্রচণ্ড চাপের কারণে সলিড অবস্থায় থাকে।
এই সলিড আয়রনের উপরে রয়েছে লিকুইড আয়রন।
এই লিকুইড আয়রনের নিচের অংশটি উপরের অংশের তুলনায় বেশি উত্তপ্ত। তাপমাত্রার এই পার্থক্যের কারণ হচ্ছে নিচের অংশ সলিড আয়রনের সংস্পর্শে আসে, যা খুবই উত্তপ্ত।
এই অধিক উত্তপ্ত সলিড আয়রনের প্রভাবে লিকুইড আয়রনের নিচের অংশটি বেশি উত্তপ্ত থাকে।
এখন লিকুইড আয়রনের তাপমাত্রার পার্থক্যের ফলে লিকুইড আয়রন পানি ফোটার মতোই গতিশীল থাকে।
অর্থাৎ নিচের অংশের বেশি উত্তপ্ত আয়রন ক্রমাগত উপরে ওঠে এবং উপরের অংশের আয়রন নিচে নামে।
এর ফলে লিকুইড আয়রনে এক ধরনের গতি তৈরি হয়।
পৃথিবী নিজ অক্ষে ঘুরছে। এই ঘূর্ণনের প্রভাবেও লিকুইড আয়রনে ভিন্ন এক ধরনের গতি তৈরি হয়।
এভাবে লিকুইড আয়রনে বিভিন্ন ধরনের গতির ফলে সেখানে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।
এই বিদ্যুৎ উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় ডায়নামো ইফেক্ট।
পৃথিবীর অভ্যন্তরে ডায়নামো ইফেক্টের প্রভাবে সৃষ্ট বিদ্যুতের কারণে পৃথিবী একটি চুম্বকের মতো আচরণ করে এবং এর ফলে পৃথিবীর চারদিকে অদৃশ্য চুম্বক ক্ষেত্র তৈরি হয়, যাকে বলা হয় ম্যাগনেটোস্ফিয়ার।
পৃথিবীর এই চুম্বক ক্ষেত্রই হচ্ছে অরোরার কারণ এবং এর সাথে মঙ্গল গ্রহের শুষ্কতারও সম্পর্ক রয়েছে।
প্রথমে চুম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে কেন অরোরা তৈরি হয় তা বলা যাক।
সূর্যের চুম্বক ক্ষেত্র বা ম্যাগনেটিক ফিল্ড সাধারণ চুম্বকের মতো সরল নয়, বরং এটি খুবই জটিল এবং শক্তিশালী।
সূর্যের কিছু কিছু স্থানে স্ট্রং ম্যাগনেটিক ফিল্ড সূর্য থেকে বাইরে বের হয়ে আসতে চায়।
সূর্যের কিছু কিছু স্থানে স্ট্রং ম্যাগনেটিক ফিল্ড সূর্য থেকে বাইরে বের হয়ে আসতে চায়, যার ফলে সূর্যের ডার্ক স্পট দেখা যায়।
ম্যাগনেটিক ফিল্ড অনেকটা রাবারের মতো। ফলে সূর্যের ম্যাগনেটিক ফিল্ড বেশি প্রসারিত হলে একসময় তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ম্যাগনেটিক ফিল্ড অংশে থাকে কয়েক বিলিয়ন টন অতি উত্তপ্ত প্লাজমা। এবং এই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া প্লাজমা একটি স্বতন্ত্র চুম্বকের মতো আচরণ করে।
সূর্যের এই ঘটনাকে বলা হয় সৌর ঝড়।
সূর্য থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর এই সৌর ঝড় পৃথিবীতে পৌঁছায়।
সৌর ঝড়ের প্লাজমা পৃথিবীতে পৌঁছানোর পর এর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের সাথে পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের ইন্টারঅ্যাকশন ঘটে।
ফলে কিছু চার্জযুক্ত কণা পৃথিবীর চুম্বকীয় মেরু বরাবর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে।
তবে ম্যাগনেটিক ফিল্ড রাবারের মতো প্রসারিত হতে পারে।
পরবর্তীতে সামনের দিকের ম্যাগনেটিক ফিল্ড প্রসারিত হয়ে পিছনের দিকে গিয়ে আবার মিলিত হয়। এর ফলেও কিছু কণা বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে।
উচ্চশক্তিসম্পন্ন এই চার্জযুক্ত কণা বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে বায়ুমণ্ডলে থাকা বিভিন্ন মৌলিক উপাদানের সাথে বিক্রিয়া করে।
ফলে ওই উপাদানগুলোর স্কোপে থাকা ইলেকট্রন শক্তি শোষণ করে উচ্চ শক্তি স্তরে চলে যায়, যা তাদেরকে অস্থিতিশীল করে তোলে।
এই অস্থিতিশীল অবস্থা থেকে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসার জন্য ইলেকট্রন শক্তি বিকিরণ করে নিম্ন শক্তি স্তরে ফিরে আসে এবং স্থিতিশীল হয়।
তবে এই শক্তি বিকিরণ হয় ফটনের আকারে। আমরা জানি, ফটন হচ্ছে আলো।
ফলে পৃথিবীর চুম্বক মেরুতে বিভিন্ন বর্ণের আলো দৃশ্যমান হয়।
চার্জযুক্ত কণা অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে সবুজ বর্ণের আলো বিকিরণ করে।
যদি এই বিক্রিয়া বেশি উচ্চতায় ঘটে, তবে লাল বর্ণের আলো দেখা যায়।
আবার চার্জযুক্ত কণা নাইট্রোজেনের সাথে বিক্রিয়া করলে নীল, বেগুনি এবং ম্যাজেন্টা রঙের আলো দেখা যায়।
সূর্য থেকে আসা চার্জযুক্ত কণার বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের সাথে ইন্টারঅ্যাকশনের ফলে অরোরা তৈরি হয়।
উত্তর মেরুতে সৃষ্ট অরোরাকে বলা হয় অরোরা বোরিয়ালিস এবং দক্ষিণ মেরুতে সৃষ্ট অরোরাকে বলা হয় অরোরা অস্ট্রেলিস।
এখন শুধুমাত্র সৌর ঝড়ের প্রভাবেই অরোরা তৈরি হয় তা নয়।
আমাদের সূর্য প্রতিনিয়ত প্রচুর পরিমাণে কণা নির্গত করে, যাকে বলা হয় সোলার উইন্ড।
এই সোলার উইন্ডের প্রভাবেও সার্বক্ষণিক অরোরা দেখা যায়।
তবে সৌর ঝড়ের ক্ষেত্রে যে অরোরা তৈরি হয়, তার তীব্রতা বেশি থাকে।
দিনের বেলায় অরোরা সাধারণত দেখা যায় না। তবে রাতের বেলায় স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অরোরা কি বাংলাদেশের আকাশেও দেখার সম্ভাবনা রয়েছে?
ভবিষ্যতে কোনো এক সময়ে হয়তো বাংলাদেশের আকাশেও অরোরা তৈরি হতে পারে।
এবং সেটি সম্ভব হবে পৃথিবীর ম্যাগনেটিক পোল বা চুম্বকীয় মেরুর অবস্থান পরিবর্তনের ফলে।
পৃথিবীর জিওগ্রাফিক পোল এবং ম্যাগনেটিক পোল দুটি কিন্তু ভিন্ন বিষয়।
পৃথিবীর যে অক্ষ বরাবর ঘুরে, তার একটি হচ্ছে জিওগ্রাফিক নর্থ পোল এবং অন্যটি হচ্ছে জিওগ্রাফিক সাউথ পোল।
অন্যদিকে পৃথিবীর চুম্বকত্বের কারণে যে দুটি মেরু তৈরি হয়, তাদের একটি হচ্ছে জিওম্যাগনেটিক নর্থ পোল এবং অন্যটি হচ্ছে জিওম্যাগনেটিক সাউথ পোল।
জিওগ্রাফিক পোল সব সময় স্থির থাকে, অর্থাৎ একই স্থানে থাকে।
অন্যদিকে ম্যাগনেটিক পোল স্থানান্তরিত হয় এবং তা সম্পূর্ণ স্থানান্তরিত হয়ে একদম বিপরীত হয়ে যেতে পারে।
অর্থাৎ বর্তমানে যেটি ম্যাগনেটিক নর্থ পোল, সেটি ভবিষ্যতে ম্যাগনেটিক সাউথ পোলও হয়ে যেতে পারে এবং এটি অস্বাভাবিক কিছুই নয়। এই ঘটনা ইতিমধ্যে পৃথিবীতে বহুবার ঘটেছে।
এখন পর্যন্ত প্রায় একশো তিরাশি বার এরকম ঘটনা ঘটেছে।
এবং এ বিষয়টি জানা যায় পৃথিবীর শিলার স্তরে থাকা চুম্বকীয় উপাদানের সন্নিবেশ থেকে।
এখন পৃথিবীর ম্যাগনেটিক পোল পরিবর্তিত হওয়ার সময় যদি কোনো একটি মেরু বাংলাদেশের বরাবর আসে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের আকাশেও অরোরা দেখা যাবে।
পৃথিবী ছাড়াও সৌরমণ্ডলে আরও বেশ কিছু গ্রহ রয়েছে যেগুলোতে অরোরা দেখা যায়, যেমন বৃহস্পতি এবং শনি গ্রহ। তবে আমাদের কাছের গ্রহ, অর্থাৎ মঙ্গল গ্রহে অরোরা তৈরি হয় না।
যাই হোক, এখন বলা যাক মঙ্গল গ্রহ কেন শুষ্ক মরুভূমি।
মঙ্গল গ্রহের কেন্দ্রে তরল লোহা (লিকুইড আয়রন) নেই, যার ফলে মঙ্গল গ্রহে পৃথিবীর মতো চুম্বক ক্ষেত্র (ম্যাগনেটিক ফিল্ড) নেই।
এখন ম্যাগনেটিক ফিল্ড না থাকার ফলে সূর্য থেকে আসা প্রাণঘাতী চার্জযুক্ত কণাগুলো মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডলে সরাসরি আঘাত করে।
এজন্যই মঙ্গল গ্রহ বর্তমানে শুষ্ক মরুভূমি।
মঙ্গল গ্রহের বর্তমান অবস্থা থেকে ধারণা করা যায় যে মঙ্গল গ্রহের কেন্দ্রে কোনো এক সময় তরল লোহা ছিল।
যার ফলে মঙ্গল গ্রহে ম্যাগনেটিক ফিল্ডও ছিল এবং সেই সময় মঙ্গল গ্রহে পানির চক্র (ওয়াটার সাইকেল) চলমান থাকার মতো পরিবেশ ছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে মঙ্গল গ্রহের কেন্দ্র ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার ফলে ম্যাগনেটিক ফিল্ড ভেঙে যায়।
ফলে মঙ্গলের পানি উবে গিয়ে বর্তমানে শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।
মঙ্গল গ্রহে ম্যাগনেটিক ফিল্ড না থাকার কারণে সেখানে অরোরা সৃষ্টি হতেও দেখা যায় না।
তাহলে এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, পৃথিবীর মেরুতে দেখা অরোরা আমাদেরকে এটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে যে পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র প্রতিনিয়ত আমাদের মারাত্মক ক্ষতিকর কসমিক রেডিয়েশন থেকে সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।
এখন আপনার মনে একটি প্রশ্ন আসতে পারে, পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্রের বাইরে যাওয়া কি বিপদজনক?
পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্রের বাইরে যাওয়া অবশ্যই বিপদজনক। পৃথিবীর চারশো কিলোমিটার উপরে থাকা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস) পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্রের ভেতরে অবস্থান করে।
কিন্তু তারপরেও আইএসএস-এ অবস্থান করা নভোচারীরা মাঝে মাঝে চোখ বন্ধ করলে আলোর ঝলকানি দেখতে পান।
এমনটা হয় মূলত সূর্যে যখন সৌর ঝড় ঘটে, তখন কিছু পরিমাণ চার্জযুক্ত কণা পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।
এই চার্জযুক্ত কণা নভোচারীদের চোখে থাকা তরলের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করে এবং এর ফলে তারা চোখ বন্ধ করলে আলোর ঝলকানি দেখতে পান।
তবে এখানে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
আইএসএস পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্রের ভেতরে অবস্থান করে, ফলে খুব অল্প পরিমাণ চার্জযুক্ত কণাই এই চুম্বক ক্ষেত্র ভেদ করে ভেতরে আসতে পারে।
তবে আপনি যদি আইএসএস এবং ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে তুলনা করেন, সেক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠ বেশি নিরাপদ।
কারণ ভূপৃষ্ঠের উপরে রয়েছে বায়ুমণ্ডল এবং এই বায়ুমণ্ডল প্রচুর পরিমাণ রেডিয়েশন আটকে দিতে সক্ষম।
যার ফলে ভূপৃষ্ঠে অবস্থান করা সবচেয়ে নিরাপদ।
পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র থাকার পরেও সৌরঝড়ের সময় আমাদের যোগাযোগ প্রযুক্তি, অর্থাৎ স্যাটেলাইটের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী গত দুইশো বছরে পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র প্রায় ৯% দুর্বল হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, চুম্বক ক্ষেত্র কি ক্রমাগত দুর্বল হতেই থাকবে, নাকি জিওম্যাগনেটিক পোলের পরিবর্তন (অর্থাৎ উত্তর মেরু দক্ষিণে এবং দক্ষিণ মেরু উত্তরে স্থানান্তরিত হতে পারে) ঘটবে?
এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন।
অতীত রেকর্ড অনুযায়ী গড়ে প্রতি পাঁচ লাখ বছরে পৃথিবীর চুম্বক পোল রিভার্স হয়।
সর্বশেষ এই রিভার্স ঘটেছে প্রায় সাত লাখ পঁচাত্তর হাজার বছর আগে।
যদিও চুম্বক পোলের রিভার্স হবার ব্যাপারটি সম্পূর্ণই অনির্দেশ্য।
এখন পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র দুর্বল হবার পেছনে যদি চুম্বক পোল রিভার্স হওয়ার পূর্ব লক্ষণ হয়ে থাকে, তবে তা স্বাভাবিক।
কিন্তু এর বাইরে যদি সত্যিকার অর্থেই পৃথিবীর চুম্বক ক্ষেত্র দুর্বল হতে থাকে, তবে তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শুভকর হবে না।
যতদিন পৃথিবীতে চুম্বক ক্ষেত্র থাকবে, ততদিন পৃথিবীর চুম্বকীয় মেরুতে অরোরা দেখা যাবে।
যা আপনি স্পেস থেকেও দেখতে পারবেন, আবার ভূপৃষ্ঠ থেকেও দেখতে পারবেন।
সুতরাং অরোরা হচ্ছে পৃথিবীর মুকুট।
এটি আমাদের প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেয়, পৃথিবীর অদৃশ্য চুম্বক ক্ষেত্র কিভাবে আমাদের সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।
স্পেসে থাকা নভোচারীদের পৃথিবীতে ফিরে আসা সাধারণ প্লেনের মতো নয়।
তারা বলতে গেলে অগ্নিপিণ্ডের ভেতরে বসে পৃথিবীতে ফিরে আসেন।
নভোচারীদের স্পেস থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসার বিষয়টি বিস্তারিত জানতে, এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।
ভিডিও ভালো লাগলে বিজ্ঞানপিয়াসী পরিবারে যুক্ত হয়ে সাথে থাকতে পারেন।