মহিলা মা-বোনেরা, শবে মেরাজ নামাজ ১২ রাকাত নফল নামাজ কীভাবে নিয়ত করে পড়বেন এবং কোন সূরা দিয়ে পড়বেন, কত রাকাত পরপর মুনাজাত করবেন, এখনো পর্যন্ত আপনি জানেন না। জানতে হবে। আমি সবচেয়ে সহজ নিয়মে মহিলা মা-বোনদেরকে আজকে শিখিয়ে দেবো, ইনশাআল্লাহ।
শবে বরাত রাত্রিতে কিভাবে আপনি ১২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন এবং এই সবে মেয়ারাজ রাত্রিতে আপনি ছয়টি জিকির, ছয়টি দোয়া যদি আপনি পাঠ করতে পারেন, আল্লাহ খুশি হয়ে যাবেন। ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা আল্লাহ আপনাকে দিয়েই থাকবেন। আপনি ধনী হয়ে যাবেন। আপনার পরিবার-সংসার থেকে আল্লাহ অভাব-অনটন দূর করে দেবেন। বালা-মুসিবত, বিপদ-আপদ দূর করে দেবেন।
শবে মেরাজ
একটি বছর পরে শবে মেয়ারাজের রাত এসেছে। তাই অবশ্যই আপনি নিয়ম-কানুন জেনে যদি ইবাদত করতে পারেন, কপাল খুলে যাবে। ভাগ্য পরিবর্তন হবে। জীবনের গুনাহ মাফ হবে।
এবং সবে মেয়ারাজের একটি রোজা আপনি রাখবেন। ৫ বছরের রোজা রাখার সওয়াব হবে। ২০০ বছরের গুনাহ মাফ হবে। কোন দিন রোজাটা রাখবেন, সেটাও আমি আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো এবং বুঝিয়ে দেবো, ইনশাআল্লাহ।
তাহলে গুরুত্বপূর্ণ এই ভিডিওটা মহিলা মা-বোনদেরকে আমি অনুরোধ করে বলবো, জীবনে অনেক সময় নষ্ট করেছেন। আর সময় নষ্ট না করে যেহেতু সবে মেয়ারাজ চলে এসেছে, সবে মেয়ারাজ রাত্রিতে আপনি এভাবে ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়ুন। আর ছয়টি দোয়া, জিকির, আমল করুন। তারপরে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। ইনশাআল্লাহ, একটি বছর সুখে-শান্তিতে থাকতে পারবেন।
আপনাদের পরিবার-সংসার থেকে আল্লাহ অভাব-অনটনকে দূর করে দেবেন। ধন-সম্পদ চালু করে দেবেন। এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে। আল্লাহ খুশি হয়ে যাবেন। আপনার ভাগ্যটাও পরিবর্তন হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় দ্বীনি মহিলা মা ও বোনেরা, শবে মেয়ারাজ রাত্রিতে আপনারা শবে মেরাজ নামাজ ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। এ নিয়মে আমি বলে দিচ্ছি।
শবে মেরাজ রোজা
সর্বপ্রথম আমি বলে দিচ্ছি রোজার কথাটা। হ্যাঁ, এই যে শবে বরাত রাত্রিতে আপনারা ইবাদত করবেন। শবে বরাত রাত্রিতে ইবাদত করে ভোররাত্রে সেহরি খেয়ে পরের দিন একটি রোজা রাখবেন।
সবে মেয়ারাজ রাত্রিতে ইবাদত করে ভোররাত্রে সেহরি খেয়ে পরের দিন একটি রোজা রাখবেন। এটাই হচ্ছে সবে মেয়ারাজের একটি রোজা। নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, রজব মাসের ২৭ তারিখের এই একটি রোজা রাখতে পারলে ৫ বছরের রোজা রাখার সওয়াব পাবেন এবং ২০০ বছরের গুনাহ মাফ হবে।
রজব মাসের ২৭ তারিখ যে রোজাটা, এটাই সবে মেয়ারাজের রোজা। মানে সবে মেয়ারাজের রাত্রে ইবাদত করে আপনি পরের দিন এ রোজাটা রাখবেন, ইনশাআল্লাহ।

এ রোজার নিয়ত কিভাবে করবেন, সেটা বলে দিচ্ছি। তারপরে শবে মেরাজ নামাজ এর নিয়ম-কানুনটা বলে দেই। আপনি এ রোজার জন্য সেহরি খাবেন। ভোররাত্রে সেহরির সময় নিয়ত করবেন যে, আমি আগামীকাল সবে মেয়ারাজের নফল রোজা রাখব। আমি আবারও বলছি, নিয়ত করবেন: “আমি আগামীকাল সবে মেয়ারাজের নফল রোজা রাখব।” এভাবে আপনি নিয়ত করলেই হয়ে যাবে।
এখন আমি আপনাদেরকে বলে দেবো, সবে মেয়ারাজ রাত্রিতে মহিলা মা-বোনেরা কিভাবে ১২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন।
আরও পড়ুনঃ ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৪ (সংশোধিত): ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি রুটিন
মহিলা মা-বোনেরা, সবে মেয়ারাজ রাত্রিতে আপনি এশার নামাজটা আদায় করবেন। এশার নামাজটা আদায় করার পর আপনি সুন্নত পড়বেন। ৩ রাকাত বিতিরের নামাজ পড়বেন না। এই ৩ রাকাত বিতিরের নামাজ সবার শেষে আপনি শবে মেরাজ নামাজ পড়বেন। এটাই উত্তম, এটাই ভালো।
আবারও বলছি, সবে মেয়ারাজ রাত্রিতে আপনি এশার নামাজটা পড়বেন। পড়ার পর সুন্নত পড়বেন। কিন্তু শুধুমাত্র ৩ রাকাত বিতিরের নামাজ পড়বেন না। বিতিরের নামাজটা কখন পড়বেন? শবে মেরাজ নামাজ পড়ার পরে।
আপনি সর্বশেষ ৩ রাকাত বিতিরের নামাজ পড়ে এরপর দোয়া করে ঘুমিয়ে যাবেন। সবার শেষে বিতিরের নামাজটা পড়বেন।
তাহলে, আপনি এশার নামাজ পড়লেন, সুন্নত পড়লেন। তারপর শবে মেরাজ নামাজ জন্য আপনি দাঁড়িয়ে গেলেন। দাঁড়িয়ে গিয়ে সর্বপ্রথম আপনাকে জানতে হবে যে, শবে বরাত নামাজ কত রাকাত।
শবে মেরাজ নামাজ আপনি ১২ রাকাত পড়লেও হবে, ১০ রাকাত পড়লেও হবে, ৮ রাকাত পড়লেও হবে। তারপর ৬ রাকাত, ৪ রাকাত। কমপক্ষে ২ রাকাত। যত রাকাত পড়তে পারেন, ততই আপনার জন্য কল্যাণকর হবে।
আলহামদুলিল্লাহ, আপনি ১২ রাকাতের চেয়ে বেশি পড়তে পারেন। তাহলে ১২ রাকাত পড়লে আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভালো। মহিলা মা-বোনরা ১২ রাকাত শবে মেয়ারাজের নফল নামাজ পড়বেন, ইনশাআল্লাহ।
মহিলা মা-বোনদেরকে আমি বলে দেবো, ১২ রাকাত তো সবে মেয়ারাজের নফল নামাজ পড়বেন। আচ্ছা, কত রাকাত করে করে পড়বেন?
মহিলা মা-বোনরা ২ রাকাত করে করে আপনি সবে শবে মেরাজ নামাজ পড়বেন। ২ রাকাত পড়ে আপনি সালাম ফিরাবেন। তারপর আবার ২ রাকাত পড়ে সালাম ফিরাবেন। এভাবে ২ রাকাত, ২ রাকাত, ২ রাকাত করে শবে বরাতের নফল নামাজটা আপনি পড়বেন, ইনশাআল্লাহ।
শবে মেয়ারাজের নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয় এবং কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়, সেটা বলে দিচ্ছি। আপনি শবে মেয়ারাজের নামাজের নিয়ত যদি আরবিতে পারেন, আরবিতে করবেন। আরবিতে না পারলে বাংলায় করবেন। অতি সহজে তাহলেও হবে।
আরবিতে যদি করতে চান, সবে মেয়ারাজের নামাজের নিয়তটা এভাবে করবেন: “উসাল্লি ফিল্লাতি রাক’আতাইন নাফলান লিল্লাহি তা’আলা।” যদি আপনি আরবিতে নিয়তটা করতে না পারেন, বাংলায় অতি সহজে এভাবে করবেন: “আমি কেবলামুখী হয়ে ২ রাকাত সবে মেয়ারাজের নফল নামাজ আদায় করছি, আল্লাহু আকবার।”
আমি আবারও বলছি, যদি আপনি আরবিতে নিয়তটা না পারেন, বাংলায় অতি সহজে এভাবে নিয়ত করবেন: “আমি কেবলামুখী হয়ে ২ রাকাত সবে মেয়ারাজের নফল নামাজ আদায় করছি, আল্লাহু আকবার।”
আচ্ছা, শবে মেরাজ নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয়? মহিলা মা-বোনেরা, আপনারা যে কোনো সূরা দিয়ে এই নামাজ পড়তে পারবেন। কোনো সমস্যা নেই। যদি বড় সূরা মুখস্থ থাকে, বড় সূরা দিয়েও পড়তে পারেন। ছোট মুখস্থ থাকলে ছোট দিয়েই পড়তে পারেন। কোনো সমস্যা নেই, ইনশাআল্লাহ।
আচ্ছা, কত রাকাত পরপর মোনাজাত করতে হয়, সেটা আপনাদেরকে এখন জানিয়ে দিচ্ছি। এটা আপনার ইচ্ছা। আপনি শবে মেরাজ নামাজ ২ রাকাত পড়েও মোনাজাত করতে পারেন, ৪ রাকাত পড়েও মোনাজাত করতে পারেন, ৬ রাকাত পড়েও মোনাজাত করতে পারেন। তবে আমার যেটা ভালো লাগে বা আমরা যেভাবে পড়ি, তা হলো ৪ রাকাত পরপর মোনাজাত করা। কারণ, শবে মেরাজ রাত্রিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাত্রি আমাদের কাছে।
নবীজি এই রাত্রিতে আল্লাহর কাছে গিয়েছেন। আমরা এই রাত্রিতে ইবাদত করলে আল্লাহ আমাদের মাহরুম করবেন না। যদিও শবে বরাতের নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত নেই, তবুও আমরা করি নবীজিকে খুশি করার জন্য। নবীজির জন্য করি এবং এই রাত্রিটা আমাদের কাছে মূল্যবান। পৃথিবীর মধ্যে এমন কোনো নবী এবং রাসূল নেই, যাকে আল্লাহ তাআলা ডেকে নিয়ে মেরাজ করিয়েছেন।
আল্লাহ নবীজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, কথা বলেছেন এবং জান্নাত-জাহান্নাম দেখিয়েছেন। অন্য কোনো নবীকে দেখাননি। আমার নবী, আপনার নবী, বিশ্বনবী, আখেরি নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। নবীজিকে আল্লাহ তাআলা জান্নাত-জাহান্নাম দেখিয়েছেন। আল্লাহর সঙ্গে বসিয়ে আল্লাহ তাআলা কথা বলেছেন। বন্ধু বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছেন।
আরও পড়ুনঃ মিটার নির্ণয় ইতিহাস Meter History and Meter Definition
আমাদের জন্য ৫ ওয়াক্ত নামাজকে আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন। আল্লাহু আকবার। এই শবে মেরাজ নামাজ রাত্রিটা আমরা ইবাদত করি। যতটুকু পারেন, ততটুকু ইবাদত করবেন। সারারাত জেগে ইবাদত করতে হবে—এটা কোনো কথা নয়। আপনি একটু পরপর মোনাজাত করবেন। মনে করেন, ৪ রাকাত পড়ে মোনাজাত করবেন।
যখনই মোনাজাত করবেন, মোনাজাতের পূর্বে আপনি ছয়টি জিকির করবেন। ছয়টি জিকির বা দোয়া পড়ে এরপর মোনাজাত করবেন, ইনশাআল্লাহ। যেই দোয়া করবেন, সেই দোয়া কবুল হবে। নবীজি ওয়াদা করে বলেছেন, আপনার ভাগ্য পরিবর্তন হবে যদি আপনি এই নিয়মে দোয়াগুলো পড়তে পারেন। আমি আপনাদেরকে সুন্দরভাবে দোয়াগুলো শিখিয়ে দেবো, ইনশাআল্লাহ।
ছোট ছোট ছয়টি দোয়া আপনি পড়বেন। প্রিয় দ্বীনি মহিলা মা ও বোনেরা, আপনার যত রাকাত মন চায়, তত রাকাত পরপর মোনাজাত করতে পারেন। তবে ৪ রাকাত পরপর পড়লে ভালো। মোনাজাতের পূর্বে ওই ছয়টি দোয়া বা জিকির করে আপনি মোনাজাত করবেন।
শবে মেরাজ নামাজ রাত্রিতে শুধুমাত্র নামাজ পড়বেন—এটা কোনো কথা নয়। আপনি নামাজ পড়বেন, জিকির করবেন, দোয়া পড়বেন, দরুদ পড়বেন এবং কোরআন শরীফও পড়বেন। এভাবে আপনি ইবাদত করে কাটাবেন। যতক্ষণ ইবাদত করবেন, ততক্ষণই সওয়াব পাবেন।
১ ঘণ্টা, ২ ঘণ্টা বা ৩ ঘণ্টা—যতক্ষণ ইবাদত করেন, আপনি এভাবে কিছুক্ষণ নামাজ, কিছুক্ষণ জিকির, কিছুক্ষণ মোনাজাত এবং কিছুক্ষণ কোরআন তেলাওয়াত করে কাটাবেন, ইনশাআল্লাহ।
প্রিয় দ্বীনি মহিলা মা ও বোনেরা, আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করবো। জীবনে অনেক সময় নষ্ট করেছেন। আমি এখন আপনাদেরকে ২ রাকাত সবে মেরাজের নফল নামাজ মহিলা মা-বোনেরা বাসায় কীভাবে পড়বেন, তা দেখাচ্ছি। ২ রাকাত নামাজ পড়ে প্র্যাকটিক্যালভাবে যদি দেখেন, তাহলে প্রত্যেকটি অক্ষরে সওয়াব পাবেন।
শুনে এবং দেখে যে তেলাওয়াত করবেন ও নামাজ শিখবেন, তা শবে বরাত রাত্রিতে সুন্দরভাবে আদায় করতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর কাছে চাইতে পারবেন। জীবনের গুনাহ মাফ হবে। আল্লাহর রহমত আপনার ওপর বর্ষিত হবে, ইনশাআল্লাহ।
এখন দেখুন, কিভাবে আমি নামাজটা পড়ি। এভাবে নামাজটা পড়বেন। ২ রাকাত পড়িয়ে দেখাচ্ছি। তারপর ওই ছয়টি দোয়া বা জিকিরের কথা বলে দেবো। আপনি কোন ছয়টি জিকির বা দোয়া পাঠ করবেন, শবে মেরাজের রাত্রিতে মোনাজাত করার পূর্বে।
চলুন, আমি আপনাদেরকে এখনই দেখিয়ে দিচ্ছি। শবে মেরাজ রাত্রিতে আপনি এশার নামাজটা পড়বেন সুন্নতসহ। সবকিছু পড়বেন, তবে ৩ রাকাত বিতির পড়বেন না। আচ্ছা, ঠিক আছে, ৩ রাকাত বিতির পড়লাম না।
এখন ৩ রাকাত বিতির না পড়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। আমি দেখাচ্ছি। পড়ে আপনারা দেখুন। শুধু দাঁড়িয়ে গিয়ে সবে মেরাজ নামাজের নিয়ত করে নামাজটা পড়ে দেখাচ্ছি।
এভাবে নিয়ত বাঁধার পর ছানা পাঠ করবেন। এরপর আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহসহ সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন। তারপর বিসমিল্লাহ পড়ে আপনি যে কোনো একটি সূরা পড়তে পারেন। আমরা তাবাত ইয়াদা পড়বো। এরপর রুকুতে যাবেন। রুকুতে তিনবার সুবহানাল্লাহ পড়বেন।
রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলবেন, “সামি’আল্লাহু লিমান হামিদাহ।” তারপর সেজদায় যাবেন। সেজদায় তিনবার সুবহানাল্লাহ পড়বেন।
আবার দুই সিজদার মাঝখানে বসে একটু দেরি করবেন। যদি কোনো দোয়া জানেন, তবে দোয়া পড়বেন। না পারলে কোনো সমস্যা নেই। দোয়া না জানলেও একটু দেরি করে আবার সেজদায় চলে যাবেন, আল্লাহু আকবার। সেজদায় আবারও তিনবার সুবহানাল্লাহ পড়বেন।
দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন। দাঁড়িয়ে এখন বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে: বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। এরপর বিসমিল্লাহ পড়ে আপনি সূরা ইখলাস (কুলহু আল্লাহু) পড়বেন। তবে সূরা ফালাকও পড়তে পারেন বা অন্য কোনো ছোট সূরা।
এখন বিসমিল্লাহ পড়ে আমরা কুলহু আল্লাহ পড়বো: বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। কুল হু আল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস সামাদ, লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ, ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
এরপর রুকুতে চলে যাবেন, আল্লাহু আকবার। রুকুতে তিনবার সুবহানাল্লাহ।
রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবেন। তারপর সেজদায় চলে যাবেন, আল্লাহু আকবার। সেজদায় গিয়ে তিনবার সুবহানাল্লাহ। দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসে একটু দেরি করবেন। তারপর আবার সেজদায় চলে যাবেন, আল্লাহু আকবার। সেজদায় গিয়ে তিনবার সুবহানাল্লাহ।
এখন দুই রাকাত নামাজ শেষ করে বৈঠকের মধ্যে বসেছেন। এখন তাশাহুদ, দরুদ ও অন্যান্য দোয়া পড়বেন। প্রিয় দ্বীনি মহিলা মা ও বোনেরা, আলহামদুলিল্লাহ, আমরা দুই রাকাত শবে মেরাজের নামাজ পড়ে দেখিয়েছি।
মহিলা মা বোনেরা, ঠিক এভাবেই শবে মেরাজের দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। এরপর আবার দাঁড়িয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়বেন। এভাবে যত রাকাত মন চায়, তত রাকাত পড়তে পারবেন।
চার রাকাত নামাজ পড়ার পর বসে ছয়টি দোয়া ও জিকির করে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করবেন। নবীজি বলেছেন, এই দোয়া ও জিকির আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এতে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, মনের প্রশান্তি আসবে, আর গুনাহ মাফ হবে।
ছয়টি জিকির:
১. সুবহানাল্লাহ – একশো বার পড়বেন।
২. আলহামদুলিল্লাহ – একশো বার পড়বেন।
৩. আল্লাহু আকবার – একশো বার পড়বেন।
৪. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ – একশো বার পড়বেন।
৫. আস্তাগফিরুল্লাহ – একশো বার পড়বেন।
৬. নবীজির ওপর দরুদ শরিফ – একশো বার পড়বেন।
এই ছয়টি জিকির পড়ার পর একটি বিশেষ আল্লাহর নাম একশো বার পড়বেন। তারপর আল্লাহর কাছে মোনাজাত করবেন। মোনাজাতে ধন-সম্পদ, রিজিক ও গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহর কাছে কাঁদতে কাঁদতে দোয়া করবেন।
প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা, এভাবেই শবে মেরাজের রাতে নামাজ, জিকির, দোয়া ও মোনাজাত করবেন। ইনশাআল্লাহ, আল্লাহর রহমত বর্ষিত হবে।
আশা করি আমার মহিলা মা বোনদেরকে, বিশেষ করে, বুঝতে পেরেছেন এবং শিখতে পেরেছেন, মহিলা মা বোনেরা কিভাবে বাসা-বাড়িতে শবে মেহরাজের নফল নামাজ আদায় করবেন। ঠিক এভাবে আদায় করবেন, আর রোজা রাখলে, শবে মেরাজ রাত্রিতে এবাদত করে ভোররাত্রে সেহরি খেয়ে পরের দিন এ রোজাটা রাখবেন।
তাহলে আপনার শবে মেহরাজের নফল রোজা একটা হয়ে গেল। আপনি সবসময় এভাবেই রাখবেন শবে বরাত রাত্রে। এবাদত করে ভোররাত্রে সেহরি খেয়ে পরের দিন যেমন আজকে শবে বরাতের রাত্রি ২০০০ ২৫ সালের, কিন্তু আজকে সোমবার রাত্রিতে এবাদত করে আপনি ভোররাত্রে সেহরি খাবেন, খেয়ে মঙ্গলবার একটা রোজা রাখবেন। তাহলে শবে মেহরাজের একটি রোজা হয়ে যাবে।
রব্বুল আলামিন আমার প্রত্যেকটা মহিলা মা বোনদেরকে ৫ ওয়াক্ত নামাজিওয়ালা বানিয়ে দেই। ও মহিলা মা বোনেরা, গুনাহের দিকে আর যাইয়েন না। গুনাহের দিকে অশান্তি আর নামাজ ছাড়েন না। আল্লাহর পথে চলে আসুন, আল্লাহর দিকে আসুন, ইনশাআল্লাহ।
মনের মধ্যে প্রশান্তি পাবেন, আল্লাহর রহমত দিবে, বরকত দিবে, জীবনকে সুন্দর করে দিবে। তাই গুনাহের কাজ ছাড়ে দিয়ে শবে বরাত রাত্রিতে আল্লাহর কাছে মোনাজাতের মধ্যে কান্না করে করে বলবেন, “আল্লাহ, জীবনের সমস্ত গুনাহ গুলো করেছি, ভুল করেছি। আল্লাহ, সব গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দাও। আর কখনো পাপের দিকে, গুনাহের দিকে আর কখনো যাব না। তুমি আমাকে নিষ্পাপ ভেবে নাও, মাশরুম বানিয়ে দাও।” এভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন।