হার্প কী? What Is HAARP and Behind story of HAARP conspiracy theory: বিশ্বজুড়ে অনেক সাইন্স প্রজেক্ট বিভিন্নভাবে বিতর্কিত হয়েছে। তেমনই একটি বিতর্কিত সাইন্স প্রজেক্ট হলো হার্প। বর্তমানে কোনো বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলেই তা হারপের মাধ্যমে ঘটানো হয়েছে, এমন কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
অনেকেই মনে করেন, হারপের মাধ্যমে আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটানো সম্ভব। এমনকি অনেকে এটাও মনে করেন, হারপের মাধ্যমে মানুষের ব্রেইনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
হার্প কী?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই হার্প আসলে কী? কেনই বা হার্প নিয়ে এত বিতর্ক? আজকের ভিডিওতে হারপ সম্পর্কে বলা হবে। আমি জুম্মান আছি আপনাদের সাথে। আপনারা দেখছেন বিজ্ঞান পাইছি।

উনিশশো সাতাশি সালে আমেরিকান প্লাজমা সায়েন্টিস্ট ডক্টর বার্নাট ইসলোন ইউএস প্যাটেন্ট অফিসে একটি প্যাটেন্ট জমা দেন, যার শিরোনাম ছিল “মেথড অ্যান্ড অ্যাপারেটাস ফর অলটারিং এ রিজিয়ন ইন দ্য আর্থস অ্যাটমোস্ফিয়ার, আইওনোস্ফিয়ার অ্যান্ড ম্যাগনেটোস্ফিয়ার।”
এখানে তিনি দাবি করেন, পৃথিবী থেকে অ্যান্টেনার মাধ্যমে হাই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ওয়েভ পৃথিবীর আইওনোস্ফিয়ারে নিক্ষেপ করে সেখানে থাকা নিউট্রাল পার্টিকেলকে উত্যক্ত করে চার্জ পার্টিকেলের ঘনত্ব বাড়ানো সম্ভব। সেই সাথে আইওনোস্ফিয়ারে অতিরিক্ত প্লাজমা লেয়ারও তৈরি করা যাবে এবং এই বিষয়গুলোকে পৃথিবীতে থাকা যন্ত্রপাতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
আপনি চাইলেই এই প্যাটেন্টটি নিজেই পড়ে দেখতে পারেন। ডেসক্রিপশনে একটি লিংক দেয়া থাকবে। ওই লিংকে গিয়ে প্যাটেন্ট নাম্বার লিখবেন। নাম্বার হচ্ছে ৪৬৮৬৬০৫। এই নাম্বারটি লিখে সার্চ করলেই নিচের দিকে একটি পিডিএফ ফাইল পেয়ে যাবেন। যাই হোক, পরবর্তীতে ইসলোন তার প্যাটেন্ট আরও অনেক কিছু করতে পারবে বলে দাবি করেন।
যেমন, আইওনোস্ফিয়ারের মধ্যে অনিয়মিত পরিবর্তনের মাধ্যমে স্যাটেলাইট এবং স্পেস কমিউনিকেশন সিস্টেমকে প্রভাবিত করা যাবে। অর্থাৎ রেডিও ওয়েভ কমিউনিকেশনকে ডাউন করা যাবে।
এটা কিভাবে হতে পারে, সেটা বোঝার জন্য একটু পেছনে যেতে হবে। ইউএস এবং সোভিয়েত উনিশশো পঞ্চাশ থেকে উনিশশো ষাট সালের মধ্যে পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারে অনেক পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
যার ফলে ম্যাগনেটোস্ফিয়ারে প্রচুর পরিমাণে চার্জ পার্টিকেল তৈরি হয়, যা পৃথিবীর ম্যাগনেটিক লাইন বরাবর উচ্চগতিতে দুলতে থাকে। অর্থাৎ উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু এবং দক্ষিণ মেরু থেকে উত্তর মেরুতে যেতে থাকে।
যার ফলে প্রচুর রেডিওনইস তৈরি হয়, যা রাডার সিস্টেমকে ওই সময়ের জন্য ডাউন করে দেয়। ইসলোন দাবি করেন, তার প্যাটেন্টের মাধ্যমে কোনো প্রকার পারমাণবিক বিস্ফোরণ ছাড়াই এই একই ইফেক্ট তৈরি করা সম্ভব, যা রেডিও কমিউনিকেশনকে প্রভাবিত করবে।
এছাড়া, তিনি এটাও দাবি করেন, তার প্যাটেন্টের মাধ্যমে স্থানীয় আবহাওয়া মডিফাই করা যাবে। তার প্যাটেন্টের একটি নির্দিষ্ট অংশকে প্রতিফলকের মতো তৈরি করা যাবে, যার মাধ্যমে ELF বা Extremely Low Frequency রেডিও ওয়েভকে প্রতিফলিত করে ভূপৃষ্ঠের এক কিলোমিটারের চেয়েও কম উচ্চতার মধ্যে পাঠানো যাবে, যা লুকায়িত বস্তুকে খুঁজে বের করতে পারবে।
Extremely Low Frequency বা ELF ওয়েভের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় রয়েছে। মানুষের ব্রেইন তিন থেকে বারো হার্টজ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে, যা ELF এর কাছাকাছি। ফলে ইসলোন এটাও দাবি করেন যে, তার প্যাটেন্টের মাধ্যমে শত্রুপক্ষের ব্রেইন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
তাছাড়া, এর মাধ্যমে ওজোন স্তরের ক্ষতি পূরণ করা যাবে। ক্ষতিকর গ্যাস যেমন কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইডকে ভেঙে ফেলা যাবে।
ইসলোনের এতসব এক্সট্রিম ক্লেইমের ফলে পরবর্তীতে এই প্যাটেন্ট সম্পর্কে আরও স্টাডি করা হয়। এবং স্টাডির মাধ্যমে দেখা যায়, ইসলোন যে সকল ইফেক্ট তৈরি করতে পারবে বলে দাবি করেছেন, তা আদৌ সম্ভব কিনা। সম্ভব হলে সেটা কত শতাংশ কার্যকর হবে।
তা যাচাই করার জন্যই যে সেটার দরকার, তার আকার ছিল বিশাল। এইক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে একশো গিগাওয়াট বা ১০০,০০০ মেগাওয়াট পাওয়ার।
যেখানে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ২৫,৭০০ মেগাওয়াট। এই পাওয়ার ছাড়াও প্রয়োজন হবে ৫ মিলিয়ন বা ৫০,০০,০০০ অ্যান্টেনা। জাস্ট স্থাপন করার জন্য প্রয়োজন পড়বে ৫১ কিলোমিটার বা ৫১ কিলোমিটার জায়গা।
অর্থাৎ ২,৬০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের জায়গা। যেখানে ঢাকা এবং নরসিংদী জেলার মোট আয়তন ২,৬১৩ বর্গকিলোমিটার। অর্থাৎ ঢাকা এবং নরসিংদী জেলার সমপরিমাণ স্থান জুড়ে অ্যান্টেনা বসাতে হবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, ইসলোনের দাবিকৃত ইফেক্ট জাস্ট যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর পরিধি কতটা বিশাল।
যাইহোক, পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে হার্প প্রজেক্ট তৈরি করা হয়। এটি তৈরি করার পর ইসলোন দাবি করেন, হার্প তার প্যাটেন্ট ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
পরবর্তীতে নিক ব্যাকেজ দাবি করেন, হারপের মাধ্যমে গোপনে আবহাওয়া কন্ট্রোল করা সম্ভব। এরপর থেকেই হার্প নিয়ে কন্সপিরেসি থিওরি জন্ম হতে থাকে এবং সময়ের সাথে সাথে তা ব্যাপকতা লাভ করে।
হার্প সম্পর্কে (What is HAARP and how it works)
যাই হোক, এখন হার্প সম্পর্কে বলা যাক। হারপ সায়েন্স প্রজেক্টের ফুল মিনিং হচ্ছে “হাই ফ্রিকোয়েন্সি অ্যাকটিভ অরোরাল রিসার্চ প্রোগ্রাম।” নাম থেকে বুঝতে পেরেছেন, এটি হাই ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ে কাজ করে। হারপ বুঝতে হলে প্রথমে আপনাকে আইওনোস্ফিয়ার সম্পর্কে বুঝতে হবে।
আইওনোস্ফিয়ার হচ্ছে বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে উপরের স্তর। ফলে এই স্তরের বাতাসের ঘনত্ব সবচেয়ে কম। আইওনোস্ফিয়ার যেহেতু বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে উপরের স্তর, এটি সরাসরি সূর্যের উচ্চ তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে আসে।
সূর্যের উচ্চ তেজস্ক্রিয় রশ্মি আইওনোস্ফিয়ারে থাকা বাতাসের পরমাণু থেকে ইলেকট্রনকে আলাদা করে দেয়। ফলে সেখানে পজিটিভ এবং নেগেটিভ চার্জ তৈরি হয়।
অর্থাৎ আইওন তৈরি হয়। এবং এই জন্যই এই স্তরকে বলা হয় আইওনোস্ফিয়ার। আইওনোস্ফিয়ারে থাকা পরমাণুর ইলেকট্রন আলাদা হবার ফলে ওই স্থান থেকে বিভিন্ন বর্ণের আলো নির্গত হয়, যাকে আমরা বলি “অরোরা।”
মেরু অঞ্চলে অরোরা সার্বক্ষণিক দেখা যায়। তবে মেরু অঞ্চল ছাড়াও অন্য অঞ্চলে অন্ধকার রাতে শক্তিশালী ডিভাইসের মাধ্যমে হালকা আলোগুলো দেখা যায়।
আইওনোস্ফিয়ারের শুরু ভূপৃষ্ঠের ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার উপরে এবং এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে কিছু ক্ষেত্রে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার উপরে পর্যন্ত বিস্তৃত। যাই হোক, সূর্যের রেডিয়েশনের ফলে আইওনোস্ফিয়ারে যে প্রভাব তৈরি হয়, সেই একই প্রভাব পৃথিবী থেকে রেডিও ওয়েভ নির্গত করে তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে হারপ।
হারপের উদ্দেশ্য হচ্ছে আইওনোস্ফিয়ার সম্পর্কে স্টাডি করা। আবহাওয়ার সাথে আইওনোস্ফিয়ারের একটি সম্পর্ক তা জানা। সেই সাথে আইওনোস্ফিয়ার রেডিও ওয়েভ কমিউনিকেশনকে কিভাবে প্রভাবিত করে, তা জানা। রেডিও ওয়েভ কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে আইওনোস্ফিয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুনঃ বন্যা কেন হয় এবং কোন বন্যা সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর All kinds of Flood
আইওনোস্ফিয়ার রেডিও ওয়েভের জন্য এক ধরনের ভার্চুয়াল মিররের মতো কাজ করে। রেডিও ওয়েভ আইওনোস্ফিয়ারের নির্দিষ্ট স্তর থেকে প্রতিফলিত হতে পারে। যার ফলে স্যাটেলাইট ছাড়াই হাজার কিলোমিটার দূরের স্থানে রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায়।
যে কোনো সিগন্যাল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠানোর জন্য ট্রান্সমিটার এবং রিসিভারকে পরস্পরের সরল রেখায় থাকতে হয়। কিন্তু পৃথিবী গোলাকার হওয়ার ফলে যত উঁচু টাওয়ারই তৈরি করা হোক না কেন, অপর টাওয়ার একসময় সরল রেখা থেকে দূরে সরে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে আইওনোস্ফিয়ার রেডিও ওয়েভের জন্য টাওয়ারের মতো কাজ করে। হার্প আইওনোস্ফিয়ারে হাই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ওয়েভ প্রেরণ করে এবং এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করে।
রেডিও ওয়েভ পাঠানোর জন্য ১৮০টি অ্যান্টেনা ব্যবহার করা হয়। অ্যান্টেনাগুলো সর্বোচ্চ তিরিশ ডিগ্রি পর্যন্ত মুভ করতে পারে। ২ থেকে ১০ মেগাহার্জের হাইফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ওয়েভ আইওনোস্ফিয়ারের একটি ছোট অংশে নিক্ষেপ করা হয়। ওই ওয়েভ আইওনোস্ফিয়ারের নিউট্রাল আইটেমকে উত্তেজিত করে, অনেকটা লেন্সের মাধ্যমে কাগজে আগুন ধরানোর মতো।
লেন্সের ক্ষেত্রে লেন্সে আপতিত আলোর শক্তি একটি বিন্দুতে পজিবিত হয়। এতে একই পরিমাণ শক্তি বড় আয়তনের তুলনায় ছোট আয়তনে আসার ফলে বেশি ইফেক্ট তৈরি করে।
হারপ এভাবে কাজ না করলেও অনেকটাই কাছাকাছি। হার্প আইওনোস্ফিয়ারের প্রায় ৬০ থেকে ১০০ বর্গকিলোমিটার স্থান জুড়ে এই প্রভাব তৈরি করতে পারে, যা নির্ভর করে রেডিও ওয়েভের ফ্রিকোয়েন্সির উপর।
হারপ পৃথিবী থেকে ৩.৬ মেগাওয়াট পাওয়ার নিঃসরণ করে। যা বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার, স্ট্রাটোস্ফিয়ার এবং মেসোস্ফিয়ারে শোষিত হয়ে মাত্র ৩৬ মাইক্রোওয়াট পাওয়ার আইওনোস্ফিয়ারকে উত্তপ্ত করে। যেখানে ওই একই স্থানে সূর্য থেকে ১৩৬৭ ওয়াট পাওয়ার আপতিত হয়, যা হারপের প্রেরিত শক্তির তুলনায় ৩৭,০০০ গুণ বেশি।
আরেকটি বিষয়, হারপ কিন্তু শুধুমাত্র তার স্থাপনার সরাসরি উপরের অংশে কাজ করতে পারে। সেই সাথে হারপের ব্যবহার করা হয় রেডিও ওয়েভ, যা লাইট স্পেকট্রামের সবচেয়ে কম শক্তি সম্পন্ন ওয়েভ। হার্প যখন সক্রিয় করা হয়, তখন কয়েক হাজার কিলোমিটার দূর থেকেও সেই রেডিও সিগনালের সাউন্ড শোনা যায়।
সুতরাং হারপ নিয়ে যেসব অতিরঞ্জিত কথা ভেসে বেড়াচ্ছে, সেগুলো আসলে বাস্তবসম্মত নয়। হার্প কাজ করে আইওনোস্ফিয়ার নিয়ে, যেখানে ঝড়, বৃষ্টি, হ্যারিকেনের বিষয়গুলো সংঘটিত হয় নিচের স্তরে। হারপ যদি সত্যিই আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারত, তবে আমেরিকাতে কখনোই কোনো প্রকার জলবায়ু সংক্রান্ত দুর্যোগ ঘটত না।
তাছাড়া, যার প্যাটেন্টের ফলে আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি সামনে এসেছে, সেই বিজ্ঞানী নিজেই বলেছিলেন, স্থানীয় আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। অর্থাৎ যেখানে টাওয়ার বসানো হবে, শুধুমাত্র সেই স্থানের আশেপাশের আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
অবশ্য আবহাওয়াকে টুকটাক নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে হারপের দরকার নেই। বিভিন্ন দেশ এখন কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি তৈরি করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হার্প কি কৃত্রিমভাবে ভূমিকম্প তৈরি করতে পারে? উত্তর হচ্ছে না। কারণ ভূমিকম্প খুবই বিশাল ব্যাপার। ভূমিকম্পের সময় হিরোশিমায় ফেলা বোমার চেয়েও কয়েক হাজার গুণ বেশি শক্তি নির্গত হয়।
এত বিপুল শক্তি রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে তৈরি করা অসম্ভব। আপনি নিজেই চিন্তা করুন, আমেরিকা যদি সত্যিই কৃত্রিমভাবে ভূমিকম্প তৈরি করার ক্ষমতা রাখত, তবে পৃথিবীর সকল দেশ আমেরিকার আনুগত্য স্বীকার করত। রাশিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়ার মতো দেশ আমেরিকার সামনে মাথা নত করে রাখত, যা বাস্তবে দেখা যায় না।
হার্প যে একমাত্র আইওনোস্ফিয়ার রিলেটেড প্রজেক্ট, তা কিন্তু নয়। এই একই ধরনের প্রজেক্ট রাশিয়া এবং নরওয়েতেও রয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে হারপ সবচেয়ে শক্তিশালী। এটি তার অ্যান্টেনার সরাসরি উপরের আকাশে দুর্বল এফেক্ট তৈরি করতে পারে।
হারপ নিয়ে তৈরি হওয়া বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য দ্রুত বিস্তার লাভ করার অন্যতম কারণ হচ্ছে গোপনীয়তা। সেইসাথে প্রজেক্টের সাথে ইউএস আর্মি এবং নেভির সম্পৃক্ততা। তবে ২০১৫ সালে হারপের সকল ফ্যাসিলিটি ইউনিভার্সিটি অফ আলাস্কা ফেয়ারব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
যে কোনো ষড়যন্ত্রমূলক থিওরি তৈরি হয় মূলত অবিশ্বাস থেকে। মানুষ মানুষকে বিশ্বাস করে না, জনগণ সরকারকে বিশ্বাস করে না, এক দেশ অন্য দেশকে বিশ্বাস করে না। এবং এই অবিশ্বাস থেকেই মূলত ষড়যন্ত্রমূলক থিওরির জন্ম হয়।
আবার অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে অবিশ্বাসের বিপরীত, অর্থাৎ বিশ্বাস থেকেও ষড়যন্ত্রমূলক থিওরি দ্রুত বিস্তার লাভ করে। কেউ একজন একটি কন্সপিরেসি থিওরি নিয়ে আসলে, অন্যজন তা যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিশ্বাস করে এবং সেটাকে আবার একটু অতিরঞ্জিতভাবে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
আসলে মানুষের মনস্তত্ত্ব বড়ই অদ্ভুত। মানুষ এখন পর্যন্ত পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার গভীরে যেতে পেরেছে, যা পৃথিবীর ব্যাসার্ধের তুলনায় অতি নগণ্য। তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষ পৃথিবীর কেন্দ্র সম্পর্কে কিভাবে জানলো? আর আমরা যদি বাংলাদেশ থেকে গর্ত করতে থাকি, তাহলে কি সত্যিই আমেরিকায় পৌঁছে যাব?
এই সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন। ভিডিও ভালো লাগলে বিজ্ঞান পাইসি পরিবারে যুক্ত হয়ে সাথে থাকতে পারেন।
Comments ৪